চেন্নাই, 17 নভেম্বর : বদলিতে যাওয়ার আগে বিস্ফোরক মাদ্রাজ হাইকোর্টের (Madras High Court) বিদায়ী প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Chief Justice Sanjib Banerjee) ৷ ইতিমধ্যেই মেঘালয় হাইকোর্টে (High Court of Meghalaya) বদলি করা হয়েছে তাঁকে ৷ সেখানে যাওয়ার আগে একটি চিঠি লিখেছেন বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ তাতে আদালত এবং তাঁর আবাসনের কর্মীদের উদ্দেশ্যে বেশ কিছু কথা লিখেছেন তিনি ৷ যা প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে আলোচনা ৷ বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্য়ায় লিখেছেন, এখানকার (মাদ্রাজ) হাইকোর্টের কর্মীরা সামন্ততন্ত্রের মধ্যে থেকেই পরিষেবা দেন ৷ গত 4 জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এত দিনেও সামন্ততন্ত্রকে সমূলে উৎখাত করতে পারেননি, তার জন্য অনুতাপ প্রকাশ করেছেন তিনি ৷
বুধবার সকালে চেন্নাই থেকে মেঘালয় রওনা দেন বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ তার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে কোনও বিদায় সংবর্ধনাও দেওয়া হয়নি ৷ তবে যাওয়ার আগেই নিজের স্বাক্ষর-সহ দু’পৃষ্ঠার একটি চিঠি রেখে যান বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ ‘‘মাদ্রাজ হাইকোর্টের আমার প্রিয় পরিবার’’ ৷ চিঠির শুরুতে সদ্য প্রাক্তন সহকর্মীদের এভাবেই সম্বোধন করেছেন তিনি ৷ এই চিঠিতেই আদালতের অন্যান্য় বিচারপতি, বারের সদস্য, আদালতের কর্মী এবং রাজ্যের অন্য সকলের উদ্দেশ্য নির্দিষ্ট বার্তা দিয়ে গিয়েছেন বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷
বেঞ্চের অন্য বিচারপতিদের উদ্দেশ্যে তিনি লেখেন, ‘‘আমি প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি ৷ কারণ, দূরত্ব বজায় রাখতে পারিনি ৷ দ্বিতীয়ত, আপনাদের সরাসরি বিদায় জানাতে পারলাম না ৷ এবং সবশেষে বলতে হয়, আপনাদের মধ্যে কেউ কেই হয়তো আমার আচরণে ক্ষুব্ধও হয়েছেন ৷ দয়া করে মনে রাখবেন, এগুলির সঙ্গে ব্যক্তিগত কোনও বিষয় জড়িত নয় ৷ প্রতিষ্ঠানের জন্য যা প্রয়োজনীয় ছিল, আমি সেটাই করেছি ৷’’
আরও পড়ুন : Delhi-NCR air pollution : বাড়ি থেকে কাজ করানোর পক্ষে মত নেই, সুপ্রিম কোর্টকে জানাল কেন্দ্র
চিঠিতে মাদ্রাজ বারের প্রশংসাও করেছেন বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘আপনারা দেশের মধ্যে অন্যতম সেরা ৷ এবং আপনাদের একজন বাচাল এবং কিছুটা বদমেজাজি বিচারপতিকে সহ্য করতে হয়েছে ৷ আপনারা অনেক বেশি ধৈর্য্য, সম্মান ও বোঝাপড়ার সঙ্গে এটা করেছেন ৷ যা আমার প্রাপ্যের থেকে অনেক বেশি ছিল ৷ আপনাদের সকলকে আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি ৷’’
এর পাশাপাশি, হাইকোর্ট রেজিস্ট্রিকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্য়ায় লিখেছেন, কর্মদক্ষতা প্রশাসনকে সহজ করে ৷ একইসঙ্গে, আদালতের কর্মীদের কাজের প্রতি একাগ্রতাকেও কুর্নিশ জানিয়েছেন তিনি ৷ সবশেষে বিচারপতি সামন্ততন্ত্রকে শেষ না করতে পারার জন্য অনুতাপ প্রকাশ করেছেন ৷