ফরিদাবাদ, 18 ডিসেম্বর: সোশাল মিডিয়ায় মেয়ে পরিচয় দিয়ে যুবককে প্রতারণা ৷ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে সাইবার ক্রাইম টিম । অভিযুক্তের নাম দিলশাদ হোসেন ওরফে দিলু । অভিযুক্ত বিহারের গোপালগঞ্জ জেলার কাপুরচিক গ্রামের বাসিন্দা । উত্তরপ্রদেশ থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে ফরিদাবাদ ক্রাইম ব্রাঞ্চের দল । পুলিশের মুখপাত্র সুবে সিং বলেন, "অভিযুক্ত দিলশাদ হুসেন ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুকের মতো সোশাল মিডিয়ায় একটি মেয়ের আইডি তৈরি করে লোকেদের ফাঁদে ফেলত এবং তারপরে তাদের সঙ্গে সাইবার জালিয়াতি করত ।"
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত নিজেকে একজন পুলিশ অফিসার, কাস্টম অফিসার এবং তদন্তকারী সংস্থার অফিসার হিসাবে পরিচয় দিয়ে জালিয়াতি করত । ফরিদাবাদ থানায় এই নিয়ে অভিযোগ করেন কামাল নামে এক যুবক । কামাল পুলিশের কাছে তার অভিযোগে জানিয়েছেন, 22 সেপ্টেম্বর তিনি ইনস্টাগ্রামে অঞ্জলি নামে এক মেয়ের কাছ থেকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পান । সেটি কামাল অ্যাক্সেপ্ট করেন । এরপর মেয়েটির সঙ্গে চ্যাট শুরু হয় তাঁর । প্রায় পাঁচ থেকে সাতদিন কথা বলার পর মেয়েটি কামালের সঙ্গে দেখা করার কথা বলে এবং সে হোস্টেলে থাকে বলে জানায় ।
অভিযুক্তরা কামালের ফোন নম্বর চায় মেয়েটি ৷ 21 সেপ্টেম্বর কামালকে বদরপুর সীমান্তে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য ডাকে অভিযুক্ত । কামাল সেখানে পৌঁছেও যান ৷ কিন্তু কোনও মেয়েকে দেখতে পান না । কামাল অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর অভিযুক্ত মেয়েটিকে ফোন করেন । এতে মেয়েটি বলে সে বাড়ি ফিরে গিয়েছে । এরপর কামালও নিজের বাড়িতে ফিরে যান । ওই দিন সন্ধ্যায় কামাল অভিযুক্তের কাছ থেকে আবার ফোন পান ৷ তাতে বলা হয়, "আমি অঞ্জলির হোস্টেলের ইনচার্জ বলছি । অঞ্জলি হোস্টেল থেকে পালিয়ে তোমার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল । তাকে খুন করা হয়েছে । তুমি খুন করেছ ।" হত্যার কথা কাউকে না বলার জন্য 20 হাজার টাকা চাওয়া হয় বলে অভিযোগ ।
কামাল জানান, তিনি এ কথা শুনে ভয় পেয়ে অভিযুক্তের কাছে অনলাইন অ্যাপের মাধ্যমে 15 হাজার টাকা ট্রান্সফার করেন । তারপর 22 সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত ডিএসপি রাহুল বলে কথা বলে কামালের সঙ্গে ৷ সে বলে, আপনি অঞ্জলিকে খুন করেছেন । আপনাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ফাঁসি দেওয়া হবে । আপনি যদি নিজেকে বাঁচাতে চান তাহলে এক লক্ষ টাকা দিন । তাহলে আমরা আপনার কিছু হতে দেব না । এরপর কামাল ভয় পেয়ে ইনস্টাগ্রাম আইডি পরিবর্তন করেন । তারপরও একের পর এক ফোন থেকে হুমকি আসতে থাকে তাঁর কাছে ৷ এমনকী প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ । কামালের কাছে বেসরকারি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর পাঠিয়ে টাকা চায় অভিযুক্ত ।
ভয়ে কামাল বিভিন্ন অনলাইন লেনদেনের মাধ্যমে টাকা পাঠান । এরপরও অভিযুক্তের কাছ থেকে হুমকিমূলক ফোন আসতে থাকে । তারপর সাইবার ক্রাইম ফরিদাবাদ থানায় অভিযোগ করেন কামাল । অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ । এরপর উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে। তাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তিনদিনের পুলিশ হেফাজত দিয়েছেন । অভিযুক্তের কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন, তিনটি সিম কার্ড, ডেবিট কার্ড, নগদ এক লক্ষ 5 হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে । তার সঙ্গে এ কাজে আরও কতজন জড়িত, তা জানার চেষ্টা চলছে ।
আরও পড়ুন: