চামোলি, 18 জানুয়ারি: জোশীমঠের (Joshimath Sinking) ভূমিধসের জন্য বারবার নিশানা করা হচ্ছে এনটিপিসি-র প্রকল্পকে ৷ তবে যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করে দিলেন এনটিপিসির তপোবনের চিফ জিএম আরপি আহিরওয়ার ৷ এনটিপিসি ছাড়াও জিএম জিওলজি ভুবনেশ কুমারও তাঁর ইনস্টিটিউটের পক্ষ সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন । এনটিপিসির উভয় কর্মকর্তাই বলেছেন যে, টানেল এবং জোশীমঠ ভূমিধসের মধ্যে কোনও সংযোগ নেই (NTPC officials denied allegations of landslide in Joshimath)।
এনটিপিসির চিফ জিএম যা বললেন: উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠে (Joshimath Updates) এনটিপিসির টানেল এবং ভূমি ধসের মধ্যে কোনও সংযোগ নেই ৷ এনটিপিসি তপোবনের চিফ জিএম আরপি আহিরওয়ার এমনই দাবি করেছেন ৷ আহিরওয়ার আরও বলেন, 12 কিলোমিটার টানেলে 8 কিলোমিটার ড্রিল বোরিং এবং বাকিটা বিস্ফোরণের মাধ্যমে করা হবে ।
জোশীমঠের ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্তরা তাঁদের বাড়িতে ফাটলের জন্য এনটিপিসির সুড়ঙ্গকে দায়ী করার পর এ ভাবেই আত্মপক্ষ সমর্থন করে যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন এনটিপিসি তপোবনের প্রধান জেনারেল ম্যানেজার ৷ তাঁর যুক্তি, যে যে এলাকায় টানেলে ব্লাস্টিং করা হবে সেগুলি জোশীমঠ থেকে 11 কিলোমিটার দূরে । টানেলটিও জোশীমঠের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে না । তাই এই টানেল নির্মাণের ফলে ভূমিতে ধস নামার কোনও সম্ভাবনা নেই ।
এনটিপিসির অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজারের যুক্তি: এনটিপিসির অতিরিক্ত জিএম জিওলজি ভুবনেশ কুমার বলেছেন যে, বর্তমানে এই টানেলে কোনও ব্লাস্টিং করা হচ্ছে না । সেগুলোতেও জল ভর্তি হয়নি । ব্লাস্টিং-এর ফলে যদি ভূমিধস এবং বাড়িগুলিতে ফাটল সৃষ্টি হত তবে টানেলটি আরও আগেই প্রভাবিত হত । এই টানেলের কারণে ভূমি তলিয়ে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই । ভুবনেশ কুমার আরও বলেন যে, ভূমিতে ধস এখানে একটি পুরনো সমস্যা । টানেলের (এনটিপিসির একটি প্রকল্প) সঙ্গে ধসের কোনও সম্পর্ক নেই । 12 কিলোমিটার দীর্ঘ এই টানেলটি বোরিং মেশিন দিয়ে খনন করা হয়েছে ।
জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে ভূমিধসের অভিযোগ সঠিক নয়: এনটিপিসির উভয় কর্মকর্তাই বলেছেন যে, তপোবন বিষ্ণুগড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের সঙ্গে জোশীমঠের জমির তলদেশকে যুক্ত করা সঠিক নয় । এনটিপিসির একজন শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন যে, টানেলটি 'একটি সক্ষম শিলার' নীচে তৈরি করা হচ্ছে । এটি পার্শ্ববর্তী শিলাকে প্রভাবিত করে না। এনটিপিসি টানেলের সঙ্গে জোশীমঠের পরিস্থিতির যোগসূত্র টানা সঠিক নয় । কারণ টানেল বোরিং মেশিনের সাহায্যে এটি নির্মাণ করা হচ্ছে ।
আরও পড়ুন: জোশীমঠে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য 4টি স্থান বাছল জিএসআই, রইল তালিকা
টানেল করতে ব্লাস্টিং করা হবে: উভয় কর্মকর্তা জানান, 12 কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলের মধ্যে 8.5 কিলোমিটার টানেল বোরিং করে নির্মাণ করা হচ্ছে । বাকিটা ব্লাস্টিং করে করা হবে । সুড়ঙ্গটি জোশীমঠের মধ্য দিয়ে যায় না । তপোবন প্রকল্পের প্রধান রাজেন্দ্র প্রসাদ আহিরওয়ার বলেছেন যে, উত্তরাখণ্ডের পার্বত্য শহরের বর্তমান অবস্থার সঙ্গে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পকে যুক্ত করা উচিত নয় । পাথরের নীচে টানেল তৈরি করা হচ্ছে এবং এটি একটি খুব শক্তিশালী পাথর ।
'জোশীমঠের ভূমি ধস একটি পুরনো সমস্যা': জোশীমঠের কিছু বাসিন্দা এনটিপিসি টানেলকে ভূমির ধসের জন্য দায়ী করলেও এনটিপিসির অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার জিওলজি ভুবনেশ কুমার বলেন যে, দুটির মধ্যে কোনও সংযোগ নেই ৷ ভূমি ধস এখানে একটি পুরনো সমস্যা । এই সুড়ঙ্গের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই । প্রকল্প অনুমোদনের আগে সব জরিপ করা হয়, তারপরই কাজ শুরু হয় বলে দাবি করেন তিনি ।
ভুবনেশ কুমার 1976 সালে মিশ্র কমিটির রিপোর্ট উল্লেখ করে বলেন যে, জোশীমঠ শহরটি ভূমিধসের উপাদানের উপর অবস্থিত । তখন এনটিপিসির কোনও প্রকল্প ছিল না । স্থানীয় মানুষ 10 জানুয়ারি প্রতিবাদ করে এবং এনটিপিসির তপোবন বিষ্ণুগড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায় । পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রকল্পের নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হয়েছে ।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব ড. রঞ্জিত কুমার সিনহা জানিয়েছেন যে, মোট 2,190 জনকে জোশীমঠের অস্থায়ী ত্রাণ শিবিরে এবং 2,205 জনকে পিপলকোটিতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি ।