নয়াদিল্লি, 21 সেপ্টেম্বর: বিশ্বাসযোগ্যতার ক্ষেত্রে পাকিস্তান হল বিশ্বের একদম শেষের দেশ ৷ কেউ তাদের মন্তব্যকে গুরুত্ব সহকারেও নেয় না ৷ বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে রীতিমতো পাকিস্তানকে একহাত নিল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক ৷ প্রধানত ভারত ও কানাডার মধ্যে চলমান কূটনৈতিক দোলাচলের মধ্যেই এমন মন্তব্য বিদেশ মন্ত্রকের তরফে ৷
এদিন সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী কড়া ভাষায় পাকিস্তানের উদ্দেশে আক্রমণ শানিয়েছেন ৷ ভারত-কানাডার মধ্যে কূটনৈতিক দ্বন্দ্বের মাঝেই পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়াও এদিন দিয়েছেন অরিন্দম বাগচী ৷
বুধবার পাকিস্তানের তরফে জানানো হয়েছিল, ভারতের দেশের বাইরের হত্যাকাণ্ডের নেটওয়ার্কও এখন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে । একই সঙ্গে, তাদের অভিযোগ, পাকিস্তান ভারতের গুপ্তচর সংস্থা 'র'-এর দ্বারা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে ৷ হত্যা এবং গুপ্তচরবৃত্তির একটি টার্গেট হয়ে গিয়েছে বলেও জানায় তারা । গত বছরের ডিসেম্বরে, পাকিস্তান একটি বিস্তৃত ডসিয়ার প্রকাশ করেছে যা 2021 সালের জুনে লাহোর হামলায় ভারতের জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট এবং অকাট্য প্রমাণ দিয়েছে বলেও জানিয়েছে পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক ৷
পাকিস্তানের দাবি, "সেই হামলাটি ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থার দ্বারা পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছিল । 2016 সালে একজন উচ্চপদস্থ ভারতীয় সেনা অফিসার কমান্ডার কুলভূষণ যাদব, পাকিস্তানে সন্ত্রাস ও নাশকতা পরিচালনা, আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে তাঁর জড়িত থাকার কথাও স্বীকার করেছেন । কানাডিয়ান নাগরিকের উপর ভারতের হত্যাকাণ্ড আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘের নীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন । এটি একটি বেপরোয়া এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ যা, বিশ্বস্ততা বা নির্ভরযোগ্যতার ক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকাকে বিশ্বের সামনে প্রশ্নবিদ্ধ করছে ৷"
এর পালটা এদিন ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি জানান, খালিস্তানপন্থী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই পাকিস্তান থেকে কানাডা-ভিত্তিক খালিস্তানি চরমপন্থীদের টাকার জোগান আরও গুরুতর সমস্যার সৃষ্টি করছে । অরিন্দম বাগচী জানান, ভারতের বিরুদ্ধে কানাডা যে অভিযোগ করেছে তা রাজনৈতিকভাবে কিছুটা কুসংস্কারের দ্বারা চালিত ।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, "অন্যান্য সমস্যাগুলির মধ্যে, পাকিস্তানের মাটি থেকে কানাডার খালিস্তানি চরমপন্থীদের আর্থিক জোগান অনেক বেশি গুরুতর সমস্যা ৷" তাঁর কথায়, "আমরা কানাডা সরকারকে জানিয়েছি যে আমাদের পারস্পরিক কূটনৈতিক উপস্থিতিতে শক্তির ভারসাম্য থাকা উচিত ৷" তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কানাডিয়ান কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ একটি বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে ৷
আরও পড়ুন: ট্রুডোর অভিযোগে রাজনীতি দেখছে দিল্লি, স্থগিতই থাকছে কানাডার নাগরিকদের জন্য ভিসা পরিষেবা
কানাডার অভিযোগের বিষয়ে, অরিন্দম বাগচী সাংবাদিকদের আরও জানান যে, এই অভিযোগগুলি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো প্রধানমন্ত্রীর (নরেন্দ্র মোদি) কাছে উত্থাপন করেছিলেন ৷ প্রধানমন্ত্রী সেগুলি প্রত্যাখ্যানও করেছিলেন ।