বেঙ্গালুরু, 22 নভেম্বর: সমবেদনামূলক গ্রাউন্ডে বাবা-মায়ের চাকরি (Job on compassionate grounds) পাওয়ার ক্ষেত্রে নিজের সন্তানের মতোই সমান অধিকার দত্তক নেওয়া সন্তানের (Distinction between adopted and biological child)৷ এ ক্ষেত্রে নিজের সন্তান ও দত্তক নেওয়া সন্তানের মধ্যে বৈষম্য করা যাবে না ৷ নির্দেশ কর্নাটক হাইকোর্টের (Karnataka High Court)৷ আদালত বলেছে যে, যদি এই ধরনের পার্থক্য করা হয় "তাহলে দত্তক নিয়ে কোনও উদ্দেশ্য পূরণ হবে না ।"
কর্নাটক সরকার পক্ষের আইনজীবীদের মত প্রত্যাখ্যান করে, বিচারপতি সুরজ গোবিন্দরাজ এবং বিচারপতি জি বাসবরাজার ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, "বাদী 2 এবং 4 (প্রসিকিউশন বিভাগ এবং সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর) দত্তক পুত্র এবং আত্মজের মধ্যে যে পার্থক্য করেছে, আমাদের বিবেচিত মতামতে এর কোনও প্রভাব পড়বে না ।" বর্তমান বিধির উল্লেখ করে একজন দত্তক পুত্রে সহানুভূতির ভিত্তিতে চাকরি পাওয়ার অধিকার প্রত্যাখ্যান করেছিল প্রসিকিউশন বিভাগ ৷
কিন্তু আদালত তার সাম্প্রতিক রায়ে বলেছে, "দত্তক নেওয়া হোক বা অন্য কোনও উপায়ে, একজন পুত্র পুত্রই হয়, একজন কন্যা কন্যাই হয় ৷ যদি এই ধরনের পার্থক্য গ্রহণ করা হয় তাহলে দত্তক নেওয়ার মাধ্যমে কোনও উদ্দেশ্য সাধিত হবে না ৷ এটি সংবিধানের 14 অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করবে বলে মনে হলেও এই কৃত্রিম পার্থক্য দূর করার জন্য উল্লিখিত বিধিগুলি সংশোধন করা হয়েছে ।"
বিনায়ক এম মুত্তাটি বানাহাট্টির জেএমএফসির সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটরের অফিসে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ছিলেন । তিনি একটি পুত্র দত্তক নিয়েছিলেন, তবে দত্তক নেওয়ার ডিড তৈরি করেন 2011 সালে ৷ 2018 সালের মার্চ মাসে তাঁর মৃত্যু হয় ৷ একই বছর, তাঁর দত্তক পুত্র গিরীশ সহানুভূতির ভিত্তিতে চাকরির জন্য আবেদন করেন ৷ আবেদনকারী একজন দত্তক পুত্র হওয়ায় এবং এ সব ক্ষেত্রে চাকরির ক্ষেত্রে বিধি অনুযায়ী দত্তক নেওয়া সন্তানের অধিকার না থাকায়, আবেদনটি খারিজ করা হয়েছিল । এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন গিরীশ । 2021 সালে বর্তমান বিধি তাঁর বিপক্ষে থাকায় আদালতের সিঙ্গল বেঞ্চ তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয় ৷ এরপর ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেন গিরীশ । এরই মধ্যে 2021 সালের এপ্রিল মাসে বায়োলজিকাল সন্তান ও দত্তক সন্তানের মধ্যে পার্থক্য দূর করে বিধিগুলি সংশোধন করা হয় ।
আরও পড়ুন: দত্তক নেওয়া সন্তানের চক্রান্তেই খুন ব্যবসায়ী, হাওড়ায় গ্রেফতার 2
ডিভিশন বেঞ্চের সামনে, গিরীশের আইনজীবী উল্লেখ করেন যে, 2021 সালে করা সংশোধনী সিঙ্গল বেঞ্চের নজরে আনা হয়নি । সরকারি আইনজীবী যুক্তি দিয়েছিলেন যে, যেহেতু সংশোধনীটি 2021 সালে করা হয়েছিল এবং গিরীশ 2018 সালে তাঁর আবেদন করেছিলেন, তাই পরবর্তী সংশোধনীর সুবিধা তাঁকে দেওয়া যাবে না ।
গিরীশের পক্ষে রায় দিয়ে বেঞ্চ বলেছে, "বর্তমান ক্ষেত্রে কন্যা একটি স্বাভাবিক কন্যা হওয়ায়, মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী এবং শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী না হলে তিনি একটি সহানুভূতিশীল নিয়োগের অধিকারী হতেন ৷ এই পরিস্থিতিতে দত্তক পুত্র পরিবারের যত্ন নেওয়ার জন্য আত্মজের মতোই সহানুভূতির ভিত্তিতে চাকরির জন্য আবেদন করেছেন ৷ দত্তক পুত্রের দ্বারা করা আবেদনটি বাস্তবসম্মত এবং পরিবারের সমস্যার পটভূমিতে এই আবেদন করা হয়েছে ৷" এ কথা বলে হাইকোর্ট প্রসিকিউশন বিভাগের বিরোধ প্রত্যাখ্যান করে দেয় এবং আদালত বলেছে, যে তারিখে আবেদন করা হয়েছিল সেই তারিখে প্রযোজ্য নিয়মের ভিত্তিতে এই আবেদনকে বিবেচনা করতে হবে ।