নয়াদিল্লি, 12 সেপ্টেম্বর: বিজয়কান্ত চেঞ্জি নামে এক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেলকে মঙ্গলবার রক্ষাকবচ দিল সুপ্রিম কোর্ট ৷ তাঁর বিরুদ্ধে মণিপুর পুলিশ যে এফআইআর দায়ের করেছে, সেই নিয়ে তারা কোনও কঠোর পদক্ষেপ করতে পারবে না, এ দিন এমনই নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত ৷
ওই অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল 2022 সালের জানুয়ারিতে একটি বই প্রকাশ করেন ৷ সেই বইয়ের বিষয়বস্তু সংক্রান্ত বিষয়েই তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করেছিল মণিপুর পুলিশ ৷ সেই সংক্রান্ত মামলায় এ দিন দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে এবং বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, “এই ব্যক্তি একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল । তিনি 2022 সালে তাঁর বই প্রকাশ করেছেন… তাঁকে রক্ষা করা উচিত… ৷”
সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ বলেছে, একমাত্র প্রশ্ন হল আদালত তাঁকে রক্ষাকবচ দেবে এবং বিষয়টি মণিপুর হাইকোর্টে ফেরত পাঠাবে কি না ! সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা শুনানিতে জানান যে আদালত রক্ষাকবচ দিলে কোনও আপত্তি নেই । তবে তিনি জানান যে যেভাবে একটি অংশ সরাসরি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন, এটা নিয়ে আপত্তি রয়েছে ৷ কারণ, উত্তর পূর্ব ভারতের ওই রাজ্যে হাইকোর্টে এখনও সক্রিয় রয়েছে ৷
অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল বিজয়কান্ত চেঞ্জির হয়ে এ দিন সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন সিনিয়র আইনজীবী আনন্দ গ্রোভার ৷ আদালতে তিনি দাবি করেন, মণিপুর হাইকোর্টে এই মামলা লড়ার জন্য কোনও আইনজীবীই রাজি নন ৷ একজন আইনজীবী রাজি হয়েছিলেন ৷ কিন্তু তাঁর চেম্বারে ভাঙচুর করা হয়েছে ৷ এফআইআর-এর কপিও পেতে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে ৷
সবপক্ষের বক্তব্য শোনার পর শীর্ষ আদালত চেঞ্জির আবেদনের উপর নোটিশ জারি করে ৷ মণিপুর হাইকোর্টে যে কেউ তাঁর হয়ে মামলা লড়তে রাজি নন, সেই সংক্রান্ত একটি হলফনামাও চেঞ্জিকে আদালতে দাখিল করতে বলেছে দেশের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ ৷ পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত অবসরপ্রাপ্ত কর্নেলের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারবে না বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ৷
শীর্ষ আদালত হেনমিনলুন নামে একজন অধ্যাপককেও রক্ষাকবচ দিয়েছে ৷ ওই অধ্যাপক আদালতে পৃথক একটি আবেদন করেছিলেন ৷ সেখানে তিনি মণিপুর পুলিশের দ্বারা দায়ের করা এফআইআর বাতিলের আর্জি জানান এবং মণিপুরে সুরক্ষা দেওয়ার আবেদন করেন ৷ একটি প্রকাশ্য বিবৃতির প্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর হয় ৷ সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে রক্ষাকবচ দেওযার পাশাপাশি হলফনামা জমা দিতে বলেছে ৷ মণিপুর হাইকোর্টে যে তাঁর হয়ে কোনও আইনজীবী মামলা লড়তে রাজি নয়, সেই বিষয়টি হলফনামায় জানাতে তাঁকেও নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত ৷
একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে যে প্রয়োজনে এই অভিযুক্তদের জন্য আইনি সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে ৷ মণিপুর হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের রিপোর্ট চাওয়া হতে পারেও ইঙ্গিত দিয়েছে শীর্ষ আদালত ৷
আরও পড়ুন: মণিপুরের ডিজিপি'কে তলব সুপ্রিম কোর্টের, পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ