নয়াদিল্লি, 25 মে : মৃত্যুদণ্ড চেয়েছিল ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি ৷ তবে দিল্লির এনআইএ কোর্ট কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করল (NIA Court in Delhi awards life imprisonment to Yasin Malik) ৷ ইয়াসিনকে নিয়ে এনআইএ আদালত কী রায় দেয় সেদিকেই নজর ছিল সকলের ৷ জঙ্গিদের অর্থসাহায্য মামলায় বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে (UAPA) 19 মে তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত ৷ আজ ঘোষিত হল সাজা ৷
এদিন দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ তাকে আদালতে তোলা হয় ৷ সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ, জঙ্গিদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে অভিযুক্ত ইয়াসিন মালিকের মৃত্যুদণ্ডের দাবি করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ৷ এজেন্সি মারফত জানা গিয়েছে, রায় ঘোষণার আগে এনআইএ আদালতের বিশেষ বিচারক প্রবীণ সিং জানান, ইয়াসিন মালিকই কাশ্মীরিদের দেশত্যাগের জন্য দায়ী ৷ সাজার বিষয়ে মালিক ক্ষমা ভিক্ষা করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছিল ৷ যাতে আদালত বিবেচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারে ৷ পরে আদালত কর্তৃক নিযুক্ত অ্যামিকাস কিউরি, এই বিষয়ে ন্যূনতম শাস্তি অর্থাৎ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড চান ।
ইয়াসিন মালিকের বিরুদ্ধে বিগত দুই দশক ধরে কাশ্মীরে হিংসা ছড়ানো এবং জঙ্গি কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগ ওঠে ৷ যদিও আদালতে মালিক বলে, "ভারতীয় ইনটিলিজেন্স এজেন্সিগুলি যদি প্রমাণ করে দিতে পারে আমি 28 বছর ধরে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে যুক্ত তাহলে রাজনীতি থেকে অবসর নিয়ে নেব ৷" এরপর ইয়াসিনের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ষড়যন্ত্র, অন্যান্য বেআইনি কার্যকলাপ এবং কাশ্মীরে শান্তি বিঘ্নিত করার অভিযোগ আনা হয় । পরে এ ঘটনায় সে দোষ স্বীকার করে ৷
আরও পড়ুন : Laskar Militant Arrested : নিরাপত্তাবাহিনীর উপর হামলার ছক বানচাল, উপত্যকায় গ্রেফতার লস্কর জঙ্গি
জম্মু ও কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের প্রধান শুনানির শেষ দিনে বলে দেয়, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলির বিরুদ্ধে সে লড়বে না ৷ ভারতীয় দণ্ডবিধির ইউএপিএ এবং সেকশন 120-বি (ক্রিমিনাল কন্সপিরেসি) এবং 124-এ (সিডিশন)-র অধীনের মধ্যে সেই অভিযোগগুলির মধ্যে অন্যতম সেকশন 16 (সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ), 17 (সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের জন্য অর্থ জোগাড়), 18 (জঙ্গি কার্যকলাপের ষড়যন্ত্র) এবং 20 (এক জঙ্গিগোষ্ঠী বা জঙ্গি সংস্থার সদস্য) ৷ বর্তমানে সেই মামলাটি ইসলামিক স্টেট দ্বারা সমর্থিত লস্কর-ই-তৈবা, হিজবুল-মুজাহিদিন, জম্মু ও কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট এবং জইশ-ই-মহম্মদের মতো বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে মিলে জম্মু ও কাশ্মীরের শান্তি ব্যাহত করার কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ৷
এদিকে সাজা ঘোষণার আগে থেকে ইয়াসিন মালিকের শ্রীনগরের মিসিউমার বাড়ি-সহ এলাকা কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে দেওয়া হয় ৷ সকাল থেকে ইয়াসিনের পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা জড়ো হয়ে ইয়াসিনের মুক্তির দাবিতে স্লোগান তোলে ৷ প্রতিবাদে ইয়াসিনের বাড়ির সামনে রাস্তায় শুরু হয় ইটবৃষ্টি ৷ বিক্ষোভকারীদের হঠাতে টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করতে হয় পুলিশকে ৷