নাগপুর, 11 মে : একজন ডাক্তার হিসেবে সামনে থেকে দেখেছেন মানুষের যন্ত্রণা ৷ করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে হাসপাতালে রোগীরা যখন ছটফট করছেন তখন সেজেগুজে বিয়ের পিঁড়িতে বসার মতো রুচি হয়নি তাঁর ৷ তাই কিছুদিনের জন্য বিয়েটা পিছিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন ৷ কিন্তু তাতে সায় দেয়নি বরের বাড়ির লোকজন ৷ কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন নাগপুরের ডাক্তার অপূর্বা মঙ্গলগিরি ৷ অগত্যা বিয়েটাই ভেঙে ফেললেন তিনি ৷
প্যানডেমিকের সময় একাধিক ভালো ও খারাপ জিনিসের সম্মুখীন হচ্ছি আমরা ৷ কোথায় রোগীরা চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন ৷ কোথাও আবার প্রথম সারির করোনা যোদ্ধারা নিজেদের স্বার্থের থেকে কর্তব্যেকে এগিয়ে রাখছে ৷ ঠিক সেভাবেই ব্য়ক্তিগত সুখ আনন্দের থেকে কর্তব্যকে এগিয়ে রাখলেন নাগপুরের ডাক্তার অপূর্বা মঙ্গলগিরি ৷ 26 এপ্রিল বিয়ের দিনক্ষণ পাকা হয়ে গিয়েছিল অপূর্বার ৷ হবু বরও ডাক্তার ৷ কিন্তু করোনা দ্বিতীয়বার দেশে আছড়ে পড়ায় ধুমধাম করে বিয়ের আয়োজনে সায় ছিল না অপূর্বার ৷ বিয়েতে ডেকে আর দশটা মানুষের জীবন বিপন্ন করতে চাননি ৷ একই পেশায় যুক্ত হওয়ার কারণে ভেবেছিলেন তার সমস্যাটা বুঝতে পারবে হবু বর ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন ৷ বলেছিলেন, রোগীদের এই সময়ে আমাকে দরকার ৷ তাই বিয়েটা পিছিয়ে দেওয়াটা প্রয়োজন ৷ যদিও অপূর্বার অনুরোধে কাজ হয়নি ৷ বিয়ে পিছোতে রাজি হয়নি বরের বাড়ির লোকজন ৷ তাই শেষমেশ বিয়ে ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন অপূর্বা ৷ তিনি বলেছেন, আমি নিজের প্রায়োরিটিগুলো বুঝি ৷
আরও পড়ুন : কোভিড নীতি নিয়ে 'সুপ্রিম' পদক্ষেপ
নাগপুরের সেন্ট্রাল ইন্ডিয়া কার্ডিওলজি হাসপাতালের ডাক্তার অপূর্বা মঙ্গলগিরি ৷ গত দেড়বছর ধরে করোনা রোগীদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন ৷ তাঁর এই পদক্ষেপে সম্পূর্ণভাবে পাশে পেয়েছেন তাঁর পরিবারকে ৷ পাশাপাশি এই সাহসী পদক্ষেপের জন্য সকলের বাহবা পাচ্ছেন ৷
এতটা মনের জোর পেলেন কীভাবে ? অপূর্বা বলছেন, "গতবছর করোনায় বাবাকে হারিয়েছি ৷ তাই অন্যান্য পরিবারগুলির উপর কী ঝড় বইছে তা ভালোমতো উপলব্ধি করতে পারেন ৷ একের পর এক আত্মীয় বন্ধুবান্ধুবকে দেখছি বেড এবং অক্সিজেনের জন্য এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতলে ছুটছে ৷ চারিদিকের এই পরিস্থিতিতে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে মন সায় দেয়নি ৷"