ঔরঙ্গাবাদ (বিহার), 5 ডিসেম্বর: কথায় আছে কু-সন্তান যদিও বা হয় কু-মাতা কভু নয় ৷ এ কথারই উলোটপুরাণ বিহারে ৷ নিজের সন্তানকে খুন করে বাড়ির উঠোনে পুঁতে দিলেন মা ৷ এমনই ঘটনা ঘটেছে বিহারের ঔরঙ্গাবাদের (Aurangabad) মদনপুর থানার শিবগঞ্জে (Son Murdered in Aurangabad)। পুলিশ অভিযুক্ত মা কাঞ্চন সিংহকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ৷ মৃতের নাম মারুতি নন্দন (15) ৷
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ওই মহিলার শ্বশুর রাজেন্দ্র সিং সাব-ইন্সপেক্টর পদ থেকে অবসর নিয়ে শিবগঞ্জে একটি জমি কিনে বাড়ি বানান । রাজেন্দ্র সিং মূলত গয়া জেলার পাচরুখিয়া গ্রামের বাসিন্দা । শিবগঞ্জে বাড়ি তৈরির পর সেখানেই থাকত গোটা পরিবার । 2018 সালে রাজেন্দ্র সিংয়ের ছেলে বিনয় কুমার এইডসে মারা যান । বিনয়ের মৃত্যুর পর জানা যায়, তাঁর স্ত্রী কাঞ্চন দেবীও এইডসে আক্রান্ত হন । বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান কাঞ্চনদেবী ৷ অনুমান, এর জেরে নিজের 15 বছরের ছেলে মারুতি নন্দনকে খুন করেন ওই মহিলা । খুনের পর প্রমাণ লোপাট করতে বাড়ির উঠোনে এক শ্রমিককে গিয়ে গর্ত খোঁড়ান ৷ এরপর তিনি ছেলের দেহ মাটিতে পুঁতে দেন ৷
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত রবিবার থেকে মারুতি নন্দন নামে এই কিশোর নিখোঁজ ছিল । শনিবার স্কুলের ফি জমা দেওয়ার জন্য 750 টাকা দেওয়া হলেও জানা যায় সে স্কুলে ফি জমা দেয়নি । অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায়নি তাকে । এরপর পুলিশে খবর দেওয়া হয় । স্থানীয়দের সন্দেহ যায় কাঞ্চনদেবীর ওপর ৷ অভিযোগ, 2 মাস আগেও ওই মহিলার মেয়েও খুন হয় ৷ নিহতের মামা উদয় সিং জানান, 2 মাস আগে 17 বছরের মেয়ে পুনিতা কুমারীকেও খুন করে দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল । ছেলে নিখোঁজের পর কাঞ্চনদেবীকে জেরা করা হয় ৷
মদনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শশী কুমার রানা জানান, মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অনেক তথ্য পাওয়া যায় ৷ পাটনা থেকে এফএসএল দলকে ডাকা হয়েছে । ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে নিহত কিশোরের দেহ মাটি খুঁড়ে তুলে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে । এই ঘটনার পর থেকে জেলাবাসীর কাছে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে । বাড়িটি আপাতত সিল করে দেওয়া হয়েছে ৷ অভিযুক্ত কাঞ্চনদেবীকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ ৷
আরও পড়ুন: বাবার সঙ্গে শত্রুতা, মেয়ের পেট কেটে দেহাংশ গমের ক্ষেতে ছড়াল প্রতিবেশী
রবিবার বিকেলে পাটনা থেকে ফরেনসিক দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে । খবর পেয়ে ঔরঙ্গাবাদ এসডিপিও সুইটি শেরাওয়াত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘটনা খতিয়ে দেখেন । তিনি জানান, গ্রামবাসীর কাছ থেকে খবর পাওয়া গিয়েছে যে শিবগঞ্জের একটি ছেলে দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ ছিল । তার মা তাকে খুন করে দেহটি গোপনে পুঁতে দিয়েছে । এই কাজে মহিলার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে । 2 মাস আগে ওই মহিলা তার মেয়েকেও খুন করেছে বলে অনুমান পুলিশের ৷ তবে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ ৷ দোষী প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।