বেতিয়া (বিহার), 29 সেপ্টেম্বর: 7 বছর আগে হারিয়ে যাওয়া দুই সন্তানকে বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিল আধার কার্ড ৷ বিহারের বেতিয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে ৷
2016 সালে বিহারের বেতিয়ার নারকাটিয়াগঞ্জ প্রকাশনগরে বাড়ির বাইরে থেকে দুই শিশু নিখোঁজ হয়ে যায় । গত সাত বছর ধরে গোটা পরিবার শিশু দুটির খোঁজ চালালেও তাদের কোনও সন্ধান পায়নি ৷ দুই শিশুই গত বছর থেকে লখনউ শিশু সংশোধনাগারের হোমে ছিল ৷ 19 বছরের কৌশিকী কুমারী চলতি বছর নবম শ্রেণির পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সময় এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে । তার পড়াশোনার জন্য ফর্ম ফিল-আপ করতে আধার কার্ডের প্রয়োজন ছিল । আর সেই আধার কার্ড করতে গিয়েই 7 বছর পর পরিবারের কাছে ফিরতে পারল দুই নিখোঁজ সন্তান ৷
7 বছর পর বাড়ি ফেরা: দুই শিশু যখন আধার কার্ড তৈরি করতে যায়, তখন তারা জানতে পারে যে তাদের আধার কার্ড আগেই তৈরি হয়ে গিয়েছে । এরপর আধারের রেকর্ড ঘেঁটে শিশু দুটির প্রকৃত পরিচয় জানা যায় এবং তাদের বাবা-মায়ের সন্ধান মেলে ৷ শিকারপুর পুলিশের সহায়তায় কৌশিকী কুমারী তার বাবা-মাকে ফিরে পেয়েছে ৷ তার ছোট ভাই (14) এখনও হোমে রয়েছে । তার পরীক্ষা চলছে এবং পরীক্ষা শেষ হলেই, সে-ও নিজের বাড়িতে ফিরবে ৷
সন্তানদের ফিরিয়ে দিল আধার কার্ড: কৌশিকী বলে যে, তার শৈশবের কিছুই মনে নেই । সে জানে না কীভাবে সে নিখোঁজ হয়েছিল এবং কীভাবে সে লখনউতে পৌঁছেছিল ৷ এসব তার কিছুই মনে নেই ।
কৌশিকী বলে, "গত সাত বছর ধরে শিশুসদনে থাকতাম । নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশনের জন্য আধার কার্ডের প্রয়োজন ছিল । আমি শিক্ষকের কাছে আধার কার্ড করতে গিয়ে আমার বাবা-মায়ের কথা জানতে পারি ।"
2016 সালে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ: জানা গিয়েছে, শিকারপুর পুলিশ সমাজকর্মীদের মাধ্যমে মেয়েটির বাড়ির সন্ধান পায় । কৌশিকীর মা সুনীতা দেবী প্রকাশ নগরের বাসিন্দা ৷ তিনি জানান, 2016 সালের 21 জুন পাড়ায় খেলছিল তাঁর 12 বছরের মেয়ে কৌশিকী এবং তার ভাই । সেই সময়ই তারা দুজন নিখোঁজ হয়ে যায় ।
আরও পড়ুন: দিদিকে বলোতে অভিযোগ জানিয়ে 5 বছর পর মেয়েকে খুঁজে পেলেন বাবা-মা, ধন্যবাদ মুখ্যমন্ত্রীকে
অনেক খোঁজাখুঁজি করেও শিশু দুটিকে খুঁজে না পাওয়ায় পরিবারের লোকজন শিকারপুর থানায় মিসিং ডায়েরি করে । সুনিতা দেবী এই ঘটনায় তাঁর ভগ্নিপতি মুন্নির উপর সন্দেহ প্রকাশ করেন । এই মামলায় মুন্নিকে গ্রেফতার হয়ে প্রায় 6 মাস সংশোধনাগারে থাকতে হয় । এরপর জামিনে জেল থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি ৷
শিকারপুর থানার প্রধান রামাশ্রয় যাদব জানিয়েছেন, "নিখোঁজ কৌশিকীকে নাবালক হোম থেকে আনা হয়েছে । তার ভাই পরীক্ষার কারণে আসতে পারেনি । কৌশিকীকে জবানবন্দির জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে ।"