ETV Bharat / bharat

অতিমারির সময় অত্যাধিক নির্বাচনী সমাবেশ : নির্বাচন কমিশন ব্যর্থতা অস্বীকার করতে পারে না - Madras High Court

নির্বাচন কমিশনকে এবার প্রচারের ধরণের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত, যাতে কোনও ভাবেই জন সমাগম বাড়তে না পারে ৷ ডিজিটাল প্রচারের উপর আরও বেশি করে জোর দেওয়ার সময় এসে গিয়েছে ৷

Massive electoral rallies
ছবি
author img

By

Published : May 1, 2021, 11:00 PM IST

পশ্চিমবঙ্গে আট দফায় বিধানসভা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাঁচ বিধানসভা ভোটের এক মাস ব্যাপী নির্বাচনী প্রক্রিয়ার পরিসমাপ্তি হয় ৷ পশ্চিমবঙ্গে আট দফায় এই নির্বাচন স্বাভাবিক ভাবেই একাধিক প্রশ্ন তুলেছে ৷ তামিলনাড়ু, পুদুচেরি, কেরালা, অসমে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছিল 6 এপ্রিল ৷ কোন যুক্তিতে নির্বাচন কমিশন আট দফায় ভোট করানোর সিদ্ধান্ত নিল, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে ৷ কোভিড আতঙ্কের কারণে অনেকে এবার ভোট দেননি ৷ এই ভোট না দেওয়ার প্রভাব ভোটের ফলাফলে পড়বে কি না বা পড়লে কতটা পড়বে তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন প্রার্থীরাও ৷ এই ভোটে কে জিতবে, কে হারবে তা নিয়ে বিবেচনা না করে একটা কথা নিঃসন্দেহে বলা চলে নির্বাচন কমিশন ন্যূনতম কোভিড বিধি মেনে ভোট করাতে চূড়ান্ত ভাবে ব্যর্থ হয়েছে ৷

করোনা অতিমারির সময় কঠোর ভাবে কোভিড বিধি মেনে ভোট পরিচালনা করার জন্য নির্বাচন কমিশনের অবশ্যই কঠোর পদক্ষেপ অবলম্বন করা উচিত ছিল ৷ এ কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে, গত বছর অক্টোবরে নির্বাচন কমিশন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেছিল, তারা ভোট পরিচালনা করতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত ৷ একই সঙ্গে কমিশন হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছিল, জন সমাবেশ এবং জনসভাগুলির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা মানা না হলে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের 51 থেকে 60 নম্বর ধারা এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির 188 নম্বর ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷ নির্বাচন কমিশন বিহার নির্বাচনের সময়ও একই রকম ভাবে নির্দেশিকা জারি করেছিল ৷ তবে, পাঁচটি রাজ্যে সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের সময় এই নিয়মাবলী সামান্য তম মানা হয়নি বা মানার আগ্রহ দেখানো হয়নি নির্বাচন কমিশেনর পক্ষ থেকে ৷

বেশ কয়েকটি উচ্চ আদালত কোভিড সতর্কতা অবলম্বন না করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে কাঠগড়ায় তুলেছে ৷ সব থেকে বড় কথা, রাজনৈতিক দল গুলোর শীর্ষ স্থানীয় নেতারা যখন কোভিড প্রটোকল না মেনে একের পর এক জন সভা করলেন, তখন নির্বাচন কমিশন চুপ করে রইল ৷ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজ্যের উচ্চ আদালত যখন কমিশনকে ভর্ৎসনা করেছে, এর জন্য নির্বাচন কমিশন কোনও ভাবেই নিজের দায় এড়াতে পারে না ৷

আরও পড়ুন : সোনার বাংলার স্বপ্নে আস্থা নাকি নিজের মেয়েকেই চাইল বাংলা, রায়-দিবসে মিলবে উত্তর

এ প্রসঙ্গে মাদ্রাজ হাই কোর্টের কথা সবার আগে বলতে হয় ৷ মাদ্রাজ হাই কোর্ট মন্তব্য করেছে, রাজ্যগুলিতে কোভিড রীতি না মেনে ভোট প্রচার করা হয়েছিল, সে ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন যে ভূমিকা নিয়েছিল সেই প্রেক্ষিত উল্লেখ করে হাই কোর্টের উক্তি ছিল, "আপনাদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা করা উচিত" ৷ এত কিছুর পর নির্বাচন কমিশন একটি নির্দেশিকা জারি করে ঘোষণা করে, 2 মে ফল প্রকাশের পর কোনও রাজ্যে কোনও দল বিজয় উৎসব করতে পারবে না ৷ তবে, কমিশনের এই নির্দেশিকা কোনও ভাবেই তাদের ব্যর্থতাকে ঢাকতে পারে না ৷

করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গের ধাক্কায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা চার লাখের গন্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে ৷ এই একটি তথ্যই বর্তমান পরিস্থিতির গুরুত্বের পরিচয় দেয় ৷ ভাইরাসের আক্রমণের সময় নির্বাচনী প্রচার নিয়ে প্রটোকল করা উচিত ছিল, সেই ঘটনার ব্যর্থতাতেই সামনে আনে ৷ বিভিন্ন রাজ্য থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ কথা বলা চলে, 15 মার্চের পর কোভিডের আক্রমণের তীব্রতা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে ৷ 27 মার্চ যখন পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দফায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তখন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যত ছিল, এখন সেই সংখ্যাটা 40 গুণ বেশি হয়ে গিয়েছে ৷

আরও পড়ুন : "খুনের মামলা হওয়া উচিত" পর্যবেক্ষণের বিরুদ্ধে এবার সুপ্রিম কোর্টে কমিশন

পরিসংখ্যান থেকে একটা কথা স্পষ্ট, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি, কেরালা এবং অসমে প্রচার যত বেড়েছে ততই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৷ জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের দেওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে একটা কথা স্পষ্ট করে বলা চলে, অসমে করোনার 75 শতাংশ ঘটনা নির্বাচনের সময় প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য ঘটে ৷ এর দোষ অবশ্যই প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে নিতে হবে, যারা প্রচারের সময় লক্ষ লক্ষ মানুষকে একত্রিত করেছিল, কোভিড বিধির কোনও রকম তোয়াক্কা না করে ৷

নির্বাচন কমিশন ভোটের দিন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের পুরো শক্তি নিয়ে প্রচারের ময়দানে নেমে পড়বে, এটাই স্বাভাবিক ছিল ৷ নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্রীয় সরকার করোনা প্রটোকলটি কঠোর ভাবে প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হয়, এই দায় অবশ্যই তাদের ৷ আবার আধ্যাত্মিকতার নামে কুম্ভমেলায় শক্তি প্রদর্শন এবং বিশাল জন সমাগম কোভিড অতিমারির প্রকোপকে আরও বহু গুণ বাড়িয়ে তোলে ৷ নির্বাচন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশটি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে ৷ নির্বাচন কমিশনকে এবার প্রচারের ধরণের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত, যাতে কোনও ভাবেই জন সমাগম বাড়তে না পারে ৷ ডিজিটাল প্রচারের উপর আরও বেশি করে জোর দেওয়ার সময় এসে গিয়েছে ৷

পশ্চিমবঙ্গে আট দফায় বিধানসভা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাঁচ বিধানসভা ভোটের এক মাস ব্যাপী নির্বাচনী প্রক্রিয়ার পরিসমাপ্তি হয় ৷ পশ্চিমবঙ্গে আট দফায় এই নির্বাচন স্বাভাবিক ভাবেই একাধিক প্রশ্ন তুলেছে ৷ তামিলনাড়ু, পুদুচেরি, কেরালা, অসমে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছিল 6 এপ্রিল ৷ কোন যুক্তিতে নির্বাচন কমিশন আট দফায় ভোট করানোর সিদ্ধান্ত নিল, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে ৷ কোভিড আতঙ্কের কারণে অনেকে এবার ভোট দেননি ৷ এই ভোট না দেওয়ার প্রভাব ভোটের ফলাফলে পড়বে কি না বা পড়লে কতটা পড়বে তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন প্রার্থীরাও ৷ এই ভোটে কে জিতবে, কে হারবে তা নিয়ে বিবেচনা না করে একটা কথা নিঃসন্দেহে বলা চলে নির্বাচন কমিশন ন্যূনতম কোভিড বিধি মেনে ভোট করাতে চূড়ান্ত ভাবে ব্যর্থ হয়েছে ৷

করোনা অতিমারির সময় কঠোর ভাবে কোভিড বিধি মেনে ভোট পরিচালনা করার জন্য নির্বাচন কমিশনের অবশ্যই কঠোর পদক্ষেপ অবলম্বন করা উচিত ছিল ৷ এ কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে, গত বছর অক্টোবরে নির্বাচন কমিশন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেছিল, তারা ভোট পরিচালনা করতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত ৷ একই সঙ্গে কমিশন হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছিল, জন সমাবেশ এবং জনসভাগুলির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা মানা না হলে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের 51 থেকে 60 নম্বর ধারা এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির 188 নম্বর ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷ নির্বাচন কমিশন বিহার নির্বাচনের সময়ও একই রকম ভাবে নির্দেশিকা জারি করেছিল ৷ তবে, পাঁচটি রাজ্যে সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের সময় এই নিয়মাবলী সামান্য তম মানা হয়নি বা মানার আগ্রহ দেখানো হয়নি নির্বাচন কমিশেনর পক্ষ থেকে ৷

বেশ কয়েকটি উচ্চ আদালত কোভিড সতর্কতা অবলম্বন না করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে কাঠগড়ায় তুলেছে ৷ সব থেকে বড় কথা, রাজনৈতিক দল গুলোর শীর্ষ স্থানীয় নেতারা যখন কোভিড প্রটোকল না মেনে একের পর এক জন সভা করলেন, তখন নির্বাচন কমিশন চুপ করে রইল ৷ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজ্যের উচ্চ আদালত যখন কমিশনকে ভর্ৎসনা করেছে, এর জন্য নির্বাচন কমিশন কোনও ভাবেই নিজের দায় এড়াতে পারে না ৷

আরও পড়ুন : সোনার বাংলার স্বপ্নে আস্থা নাকি নিজের মেয়েকেই চাইল বাংলা, রায়-দিবসে মিলবে উত্তর

এ প্রসঙ্গে মাদ্রাজ হাই কোর্টের কথা সবার আগে বলতে হয় ৷ মাদ্রাজ হাই কোর্ট মন্তব্য করেছে, রাজ্যগুলিতে কোভিড রীতি না মেনে ভোট প্রচার করা হয়েছিল, সে ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন যে ভূমিকা নিয়েছিল সেই প্রেক্ষিত উল্লেখ করে হাই কোর্টের উক্তি ছিল, "আপনাদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা করা উচিত" ৷ এত কিছুর পর নির্বাচন কমিশন একটি নির্দেশিকা জারি করে ঘোষণা করে, 2 মে ফল প্রকাশের পর কোনও রাজ্যে কোনও দল বিজয় উৎসব করতে পারবে না ৷ তবে, কমিশনের এই নির্দেশিকা কোনও ভাবেই তাদের ব্যর্থতাকে ঢাকতে পারে না ৷

করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গের ধাক্কায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা চার লাখের গন্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে ৷ এই একটি তথ্যই বর্তমান পরিস্থিতির গুরুত্বের পরিচয় দেয় ৷ ভাইরাসের আক্রমণের সময় নির্বাচনী প্রচার নিয়ে প্রটোকল করা উচিত ছিল, সেই ঘটনার ব্যর্থতাতেই সামনে আনে ৷ বিভিন্ন রাজ্য থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ কথা বলা চলে, 15 মার্চের পর কোভিডের আক্রমণের তীব্রতা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে ৷ 27 মার্চ যখন পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দফায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তখন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যত ছিল, এখন সেই সংখ্যাটা 40 গুণ বেশি হয়ে গিয়েছে ৷

আরও পড়ুন : "খুনের মামলা হওয়া উচিত" পর্যবেক্ষণের বিরুদ্ধে এবার সুপ্রিম কোর্টে কমিশন

পরিসংখ্যান থেকে একটা কথা স্পষ্ট, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি, কেরালা এবং অসমে প্রচার যত বেড়েছে ততই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৷ জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের দেওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে একটা কথা স্পষ্ট করে বলা চলে, অসমে করোনার 75 শতাংশ ঘটনা নির্বাচনের সময় প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য ঘটে ৷ এর দোষ অবশ্যই প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে নিতে হবে, যারা প্রচারের সময় লক্ষ লক্ষ মানুষকে একত্রিত করেছিল, কোভিড বিধির কোনও রকম তোয়াক্কা না করে ৷

নির্বাচন কমিশন ভোটের দিন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের পুরো শক্তি নিয়ে প্রচারের ময়দানে নেমে পড়বে, এটাই স্বাভাবিক ছিল ৷ নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্রীয় সরকার করোনা প্রটোকলটি কঠোর ভাবে প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হয়, এই দায় অবশ্যই তাদের ৷ আবার আধ্যাত্মিকতার নামে কুম্ভমেলায় শক্তি প্রদর্শন এবং বিশাল জন সমাগম কোভিড অতিমারির প্রকোপকে আরও বহু গুণ বাড়িয়ে তোলে ৷ নির্বাচন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশটি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে ৷ নির্বাচন কমিশনকে এবার প্রচারের ধরণের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত, যাতে কোনও ভাবেই জন সমাগম বাড়তে না পারে ৷ ডিজিটাল প্রচারের উপর আরও বেশি করে জোর দেওয়ার সময় এসে গিয়েছে ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.