দ্বারভাঙা, 21 ডিসেম্বর: দখলদারি উচ্ছেদ অভিযান চালাতে এসেছিল পুলিশ ৷ সেই সময় এক ব্যক্তি গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন ৷ পুলিশের সামনেই এই ঘটনা ঘটে বিহারের কামতাউল থানা এলাকার পিন্ডারুচ গ্রামে ৷ জানা গিয়েছে, এই নিয়ে তৃতীয়বার ওই বাড়িটি থেকে দখলদারদের উচ্ছেদ করতে এসেছিল পুলিশ ৷ এই বাড়িটিতে থাকতেন সঞ্জীব চৌধুরী ৷ এই সময় তিনি পুলিশের সামনেই গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন ৷ তবে অকুস্থলে উপস্থিত স্থানীয়রা তড়িঘড়ি তাঁকে ধরে ফেলেন ৷ তিনি প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন ৷
আহত সঞ্জীব চৌধুরীকে সঙ্গে সঙ্গে একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয় ৷ সেখানে থেকে তাঁকে অন্য একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় ৷ তবে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সঞ্জীব চৌধুরীকে পটনায় নিয়ে যাওয়ার কথা জানান চিকিৎসকরা ৷ তবে পটনায় যেতে অনেক সময় লাগবে, তাই তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে ৷ এই ঘটনায় গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে ৷
স্থানীয় সূত্রে খবর, কেওয়াটির পুলিশ আধিকারিক চন্দন কুমার কামতাউল থানা এলাকার পিন্ডারুচ গ্রামের ওই বাড়িতে দখলদারমুক্ত করার অভিযান চালান ৷ তবে হাইকোর্টের নির্দেশেই এই অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷ এই সময় সঞ্জীব চৌধুরী পুলিশকে জিজ্ঞাসা করেন, "প্রশাসন একই বাড়ি তিন-তিনবার কেন ভাঙতে বলছে ?" এর উত্তরে পুলিশ আধিকারিক জানান, তিনি আদালতের নির্দেশ মেনেই এই কাজ করছেন ৷ এরপরই সঞ্জীব চৌধুরী আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন ৷ তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে পুলিশকর্মীরাও জখম হয়েছেন ৷
পুলিশকর্মী দেবকুমার সিং সেই সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন ৷ তিনি বলেন, "আমরা তখন সঞ্জীবের সামনেই ৷ তিনি ছুটোছুটি করছিলেন ৷ তাঁর গায়ে আগুন ধরে গিয়েছিল ৷ আমরা পড়ে গিয়েছিলাম আর তিনি আমাদের ধরে ফেলেন ৷ সঙ্গে সঙ্গে অন্য নিরাপত্তাকর্মীরা আমাদের টেনে আনে ৷ আমার উর্দি কিছুটা পুড়ে গিয়েছে ৷ তবে আমরা বেঁচে গিয়েছি ৷ আমাদের সঙ্গে আরেক কর্মী কৈলাশ যাদবও সামান্য আহত হয়েছেন ৷"
সঞ্জীবের পরিবারের সদস্যদের দাবি, সুমিত চৌধুরী, নগেন্দ্র চৌধুরী ও সঞ্জীব চৌধুরী তিন ভাই ৷ এই জমি নিয়ে তিন ভাইয়ের মধ্যে বিবাদ চলছে ৷ এর আগেও বাড়িটি ভাঙা হয়েছে ৷ 2019 সালে আদালতের নির্দেশে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ এসে সঞ্জীব চৌধুরীর বাড়িটি ভেঙে দিয়েছিল ৷ এরপর পাঁচ মাস আগেও পুলিশ প্রশাসন এসে সঞ্জীবের বাড়ি ভেঙে দিয়েছিল ৷ সঞ্জীবের পরিবারের সদস্য নীরজ মিশ্র বলেন, "এই বিষয়টি বহু বছরের পুরনো ৷ দু-দু'বার সঞ্জীব চৌধুরীর বাড়ি ভাঙা হয়েছে ৷ যদি তাঁরই দোষ থাকে, তাহলে একবারে পুরো জমিটাই দখল মুক্ত করে দেওয়া উচিত ৷ বারবার সঞ্জীবের বাড়ি ভাঙার ঘটনায় হতাশ হয়ে পড়েছেন সঞ্জীব ৷" গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, সঞ্জীবের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ ৷ রেশনের দোকান থেকে পাওয়া চাল, ডাল দিয়ে তিনি কোনওরকমে সংসার চালান ৷ তবে প্রশাসন বারবার বাড়ি ভেঙে দেওয়ায় তিনি মানসিক চাপে পড়েই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন ৷
আরও পড়ুন: