প্রয়াগরাজ, 21 জানুয়ারি: অশ্লীল ভিডিয়ো ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে এক যুবকের কাছ থেকে 30 হাজার টাকা দাবি করেছিল একটি চক্র (Blackmailed by Sextortion Gang) ! সেই টাকা মেটানোর জন্য নিজেরই অপহরণের নাটক করেন ওই যুবক (Man Fakes Own Kidnapping) ! উদ্দেশ্য ছিল, মুক্তিপণের নামে বাবার কাছ থেকে 2 লক্ষ টাকা আদায় করা ৷ ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) প্রয়াগরাজে (Prayagraj) ৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি স্থানীয় থানার দ্বারস্থ হন এক বৃদ্ধ ৷ পুলিশের কাছে তিনি জানান, তাঁর ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে ৷ বৃদ্ধ দাবি করেন, শুক্রবার নিজের মোবাইল নম্বর থেকেই তাঁকে হোয়াটসঅ্য়াপ কল করেন তাঁর ছেলে ৷ বাবাকে বলেন, একটি কালো গাড়িতে সওয়ার কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁকে অপহরণ করেছে ! এখন তারা তাঁর কাছ থেকে 2 লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চাইছে ৷ ওই ব্যক্তি তাঁর বাবাকে অনুরোধ করেন, তিনি যেন দ্রুত ওই 2 লক্ষ টাকা অপহরণকারীদের দিয়ে দেন ! কিন্তু, বৃদ্ধ তা না-করে সটান পুলিশের কাছে চলে যান !
আরও পড়ুন: যোগীর বাড়ির নিরাপত্তা কর্মীর গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার
বৃদ্ধ পুলিশকে জানান, প্রথম হোয়াটসঅ্য়াপ কলের কিছুক্ষণ পরই তাঁর কাছে আরও একটি হোয়াটসঅ্য়াপ কল আসে ৷ দ্বিতীয় কলে বৃদ্ধের ছেলেকে খুনের হুমকি দেওয়া হয় ৷ তবে, সেই হুমকি ঠিক কে দিয়েছিল, সেটা স্পষ্ট নয় ৷ এরপর বৃদ্ধ নিজের সাধ্যমতো ছেলের খোঁজ করার চেষ্টা করেন ৷ কিন্তু, তাতে কোনও লাভ হয়নি ৷ ফলে তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন ৷ পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধের ছেলের খোঁজ শুরু করে ৷ তাঁর মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্র্য়াক করে দেখা যায়, তিনি রয়েছেন প্রতাপগড় জেলায় ৷ পরে সেখান থেকেই ওই 'অপহৃত'কে 'উদ্ধার' করা হয় ৷ সেই সময় তিনি সেখানে একা ছিলেন ! যা দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের ৷
পরবর্তীতে টানা জিজ্ঞাসাবাদে ভেঙে পড়েন ওই যুবক ৷ পুলিশকে তিনি জানান, "সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমার সঙ্গে একটি মেয়ের বন্ধুত্ব হয়েছিল ৷ পরে আমরা মোবাইল নম্বর দেওয়া-নেওয়া করি এবং আমাদের মধ্যে কথা শুরু হয় ৷ একদিন মেয়েটি আমাকে একটি অশ্লীল ভিডিয়ো কল করে ৷ আমি সঙ্গে সঙ্গে সেই কলটি কেটে দিলেও ওইটুকু সময়ের মধ্য়েই সে ওই ভিডিয়ো কলটি রেকর্ড করে নেয় ৷ এরপর থেকেই আমার কাছে হুমকি ফোন আসতে শুরু করে ৷ আমাকে বলা হয়, 30 হাজার টাকা না-দিলে ওই অশ্লীল ভিডিয়ো কলের রেকর্ডিং সোশাল মিডিয়ায় আপলোড করে দেওয়া হবে ৷ কিন্তু, আমার কাছে অত টাকা ছিল না ৷ তাই আমি নিজের অপহরণের নাটক করি ৷ যাতে আমার বাবার কাছ থেকেই ওই টাকা জোগাড় করতে পারি ৷"
পুলিশ ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় আলাদা একটি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে ৷ তাদের বক্তব্য, ইদানীং এই ধরনের ব্ল্যাকমেলিংয়ের ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে ৷ কিন্তু, তার জন্য ভয় পেয়ে ভুয়ো অপহরণের মতো বেআইনি কোনও পদক্ষেপ করা ঠিক নয় ৷ বরং, আক্রান্তের উচিত দ্রুত পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা ৷ যাতে অপরাধীদের শনাক্ত করে পাকড়াও করা সম্ভব হয় ৷