নয়াদিল্লি, 23 জুলাই: 'ওপেনহাইমার' সিনেমার পোস্টারে লেখা 'মোদেনহাইমার' ৷ এমন একটি পোস্টার টুইট করলেন তৃণমূলের লোকসভা সাংসদ মহুয়া মৈত্র ৷ মহুয়ার দেওয়া পোস্টারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং, জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মার কথা বলা আছে ৷ কটাক্ষের সুরে মহুয়া লেখেন, 'মোদেনহাইমার' নামে এই ছবির পরিচালক ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স বা এনডিএ ৷ সিনমার ট্যাগ লাইন 'দ্য ম্যান বিহাইন্ড মণিপুর'স আনডুয়িং' ৷
সম্প্রতি বিজ্ঞানী রবার্ট ওপেনহাইমারের জীবনী নিয়ে একটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে ৷ পরিচালক খ্রিস্টোফার নোলান ৷ সেই ছবির পোস্টারটিকে নকল করে বিজ্ঞানীর জায়গায় প্রধানমন্ত্রী মোদির ছবি দিয়েছেন লোকসভার এই সাংসদ ৷ পোস্টের উপরে লেখা এই সিনেমাটি এখন সর্বত্র চলছে ৷ উল্লেখ্য, বিশ্বের প্রথম ও দ্বিতীয় পরমাণু বোমা তৈরির প্রজেক্টের প্রধান ছিলেন বিজ্ঞানী ওপেনহাইমার ৷ আমেরিকার নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে অত্যন্ত গোপনে এই পরমাণু বোমা তৈরির কাজ চলছিল ৷ সারা দুনিয়ার কাছ থেকে বিষয়টি লুকিয়ে রেখেছিল আমেরিকা ৷
-
In cinemas everywhere pic.twitter.com/01uYNEEHU8
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) July 23, 2023 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="
">In cinemas everywhere pic.twitter.com/01uYNEEHU8
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) July 23, 2023In cinemas everywhere pic.twitter.com/01uYNEEHU8
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) July 23, 2023
আরও পড়ুন: 'মণিপুরের মেয়েদের সঙ্গে যা হয়েছে, তা ক্ষমার অযোগ্য', বাদল অধিবেশনের আগে বার্তা মোদির
1945 সালের 6 অগস্ট ও 9 অগস্ট আমেরিকা 'লিটল বয়' ও 'ফ্যাট ম্যান' নামে দু'টি পরমাণু বোমা নিক্ষেপ করে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরে ৷ এই ঘটনা আজও মনে রেখেছে বিশ্ব ৷ এই পরমাণু বোমা দু'টি তৈরির কাজে প্রধান বিজ্ঞানী ছিলেন রবার্ট ওপেনহাইমার ৷ তিনি 'ফাদার অফ অ্যাটমিক বম্ব' নামেই পরিচিত ৷ কয়েকটি সূত্র ঐতিহাসিকভাবে দাবি করে এসেছে, এই পরমাণু বোমা নিক্ষেপের পর হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে যে ধ্বংসলীলা হয়েছিল তাতে তীব্র অনুশোচনা প্রকাশ করেছিলেন বিজ্ঞানী ওপেনহাইমার এবং তাঁর দল ৷ বহু ঐতিহাসিকদের দাবি, পরমাণু বোমাটি যে ধ্বংসের কাজে ব্যবহৃত হবে, তা জানা ছিল না প্রজেক্টের বিজ্ঞানীদের ৷ এই মতের সঙ্গে অবশ্য সহমত নন অনেকেই । তাই হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরে কোটি কোটি জীবনহানির জন্য বিজ্ঞানী ওপেনহাইমারকে দায়ী করেন বহু মানুষ ৷
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের মত, লোকসভার সাংসদ মহুয়া মৈত্র বিজ্ঞানী ওপেনহাইমারের এই দিকটির সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তুলনা টেনেছেন ৷ মে মাসের 3 তারিখ থেকে মেইতি ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে অগ্নিগর্ভ মণিপুর ৷ হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়ে ত্রাণ শিবিরে দিন কাটাচ্ছেন ৷ প্রায় আড়াই মাস আগে কুকি সম্প্রদায়ের দুই আদিবাসী মহিলাকে নগ্ন করে প্রকাশ্য রাস্তায় হাঁটানো হয় ৷ গণধর্ষণের অভিযোগও ওঠে ৷ ঘটনাটি ঘটেছিল 4 মে ৷ তবে সেই ভিডিয়োটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে আড়াই মাস পর 19 জুলাই ৷ তার ঠিক পর দিন থেকেই লোকসভা এবং রাজ্যসভায় সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হয়।
মণিপুরের হিংসার শুরু থেকে 78 দিন পর 20 জুলাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংসদের বাইরে সাংবাদিকদের জানান, তিনি এই ঘটনায় ব্যথিত ৷ অপরাধীদের যথোপযুক্ত সাজা দেওয়া হবে ৷ এটাই তাঁর মণিপুর নিয়ে প্রথম মন্তব্য ৷ তবে বিরোধীরা সংসদের মধ্যে তাঁর কাছ থেকে বিবৃতি চেয়ে দাবি তুলেছে ৷ কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এখনও সংসদের অন্দরে কিছু বলেননি ৷
আরও পড়ুন: 'মণিপুরে যাচ্ছি', সফর ঘিরে সরকারি আর্জি খারিজ স্বাতীর
এদিকে 4 মে আদিবাসী মহিলাদের যৌন হেনস্তা ঘটনায় এখনও পর্যন্ত 5 জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ পাশাপাশি, একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে ৷ মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং নিজেই জানিয়েছেন, রাজ্যে ইন্টারনেট চালু হলে এরকম শয়ে শয়ে ঘটনার ভিডিয়ো সামনে আসবে ৷ 4 মে ওই ঘটনাটি ঘটার পর পুলিশের কাছে জিরো এফআইআর দায়ের করেছিল ওই নির্যাতিতাদের পরিবার ৷
কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ ৷ আরও অভিযোগ, জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মাও বিষয়টি জানতেন ৷ সব জেনেও তিনি কোনও ব্যবস্থা নেননি ৷ ভিডিয়োটি আড়াই মাস পর প্রকাশ্যে আসতেই বিরোধীদের চাপে মণিপুর প্রশাসন তড়িঘড়ি তদন্তে নামে ৷ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ এবার এই মণিপুর নিয়েই আরও একবার প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করলেন মহুয়া মৈত্র ।