কলকাতা, 27 মার্চ: বিলকিস বানো গণধর্ষণ (Bilkis Bano Gangrape) মামলায় দোষী সাব্যস্ত 11 জনকে মুক্তি দিয়েছে গুজরাত সরকার। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক। এবার আরও এক বির্তক দেখা দিল ৷ তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র রবিবার মধ্যরাতে টুইটারে একটি ছবি শেয়ার করেছেন ৷ যাতে অভিযোগ করা হয়েছে যে বিলকিস বানো গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার 11 জনের মধ্যে একজনকে গুজরাতে বিজেপির দুই নেতার সঙ্গে সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চে দেখা গিয়েছে ৷ দাহোদের বিজেপির সাংসদ যশবন্ত সিং ভাভোর এবং তাঁর ভাই তথা লিমখেদার বিধায়ক শৈলেশ ভাভোর, বিলকিস বানোর ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত ধর্ষক শৈলেশ ভাটের সঙ্গে একটি জল সরবরাহ প্রকল্পের উদ্বোধনে অংশ নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, 1992 সালের গুজরাত সরকারের 'মওকুফ নীতি'র অধীনে গত বছর স্বাধীনতা দিবসে 11 জন ধর্ষককে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
এবার এ নিয়েই সরব হলেন মহুয়া। ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করে তিনি দোষীদের কারাদণ্ডের আহ্বান জানিয়েছেন । পাশাপাশি জনগণকে এই ধরনের ধর্ষকদের সমর্থনকারী দলকে ভোট না-দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছিলেন। কৃষ্ণনগরের সাংসদ লিখেছেন, "আমি এই রাক্ষসদের আবার জেলে দেখতে চাই । জেলের চাবিটি যেন আর কোনওদিন যেন খুঁজে না-পাওয়া যায় ৷ আমি চাই এই শয়তান সরকার যারা ন্যায়বিচারের সঙ্গে প্রতারণা করেছে তাদের যেন নির্বাচনে উচিত শিক্ষা দেওয়া হয় ৷ সেই সঙ্গে আরও চাই, ভারত তার নৈতিক গরিমা পুনরুদ্ধার করুক।"
এদিকে সাংসদ যশবন্ত সিংও সরকারি অনুষ্ঠানের ছবিগুলি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছেন এবং লিখেছেন, "দাহোদ জেলার লিমখেদা তালুকে, কাদানা বাঁধ বাল্ক পাইপলাইন-ভিত্তিক লিমখেদা গ্রুপ জল সরবরাহ প্রকল্পের আনুমানিক পরিমাণের অধীনে 101.89 কোটি কাজ স্থাপন করা হয়েছিল। যার মধ্যে লিমখেদা তালুকের 43টি গ্রাম, সিংওয়াদ তালুকের 18টি গ্রাম এবং ঝালোদ তালুকের 3টি গ্রাম এই প্রকল্পের সুবিধা পাবে।"
আরও পড়ুন: 'আপেলকে আপেলই বলব, অন্য কিছু নয় !' মন্তব্য বিতর্কে জবাব মহুয়ার
উল্লেখ্য, বিলকিসের দোষীদের মুক্তির এই ঘটনাকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে । সোমবার বিচারপতি এম জোসেফ এবং বিভি নাগারথনার সমন্বয়ে গঠিত একটি নতুন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে। গত মাসে, প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পিএস নরসিমহা এবং জেবি পদ্রিওয়ালার একটি বেঞ্চ এই ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছিল । বলেছিল, দোষীদের মুক্তির বিরুদ্ধে করা আবেদনগুলির শুনানির জন্য শীঘ্রই একটি নতুন বেঞ্চ গঠন করা হবে। সেই মতো বেঞ্চ গঠিত হয়।
2002 সালের মামলায় ধর্ষকদের মুক্তির বিরুদ্ধে একাধিক পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, মহুয়া মৈত্র সেই আবেদনকারীদের মধ্যে একজন। প্রসঙ্গত, 2008 সালে 21 বছর বয়সী পাঁচ মাসের গর্ভবতী বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ করার জন্য এবং গুজরাত দাঙ্গার সময় তার তিন বছরের মেয়ে-সহ তাঁর পরিবারের সাত সদস্যকে হত্যার জন্য 11 জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। পরে তাদেরই ছেড়ে দেয় গুজরাতের বিজেপি সরকার ।