চন্দ্রপুর (মহারাষ্ট্র), 20 অক্টোবর: মর্মান্তিক দুর্ঘটনার বলি হলেন এক অন্তঃসত্ত্বা ৷ তাঁর চার বছরের পুত্রসন্তান অল্পের জন্য বাঁচলেও সারারাত মায়ের দেহের পাশে বসে চিৎকার করে কেঁদে চলল সে ৷ ছেলের জন্য চকোলেট কিনতে তাকে নিয়েই দু-চাকার গাড়িতে বেরিয়েছিলেন ওই অন্তঃসত্ত্বা ৷ তবে সেই গাড়িটি সেতু থেকে নীচে পড়ে যায় ৷ ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয় ৷ বুধবার রাতে মহারাষ্ট্রর চন্দ্রপুরে ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা ৷
বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ ওই মহিলাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে এবং তাঁর সন্তানকেও উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । পুলিশ জানিয়েছে, মৃত সুষমা পবন কাকেড়ে তাঁর স্বামী ও ছেলের সঙ্গে বল্লারপুর তালুকের বামনিতে থাকতেন । বুধবার সন্ধ্যায় তাঁর ছোট্ট ছেলে একটি চকলেট খেতে চেয়েছিল ৷ সেই চকোলেট কিনতে বাইকে চড়ে পাশের বাজারে চলে যান সুষমা । সঙ্গে তাঁর ছেলেকেও নিয়ে যান তিনি ৷ রাজুরা-বল্লারপুর সড়কে যাওয়ার সময় তাঁর দুই চাকার গাড়িটি সেতু থেকে নীচে ছিটকে পড়ে ৷ আর সুষমা ও তাঁর ছেলে ওয়ার্ধা নদীর সেতু থেকে নীচে পড়ে যান ।
যদিও উভয়েই পড়েছিলেন একটি কর্দমাক্ত এলাকায় ৷ তবে মহিলাটির ঘাড়ে তীব্র আঘাত লাগায় ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে । সৌভাগ্যবশত, তাঁর ছেলের বড় কোনও আঘাত লাগেনি ৷ তবে অসহায় শিশুটি সারারাত তাঁর মায়ের দেহের পাশে বসে কাঁদতে থাকে । সকাল হলেই ওই অবস্থায় তাঁদের দেখতে পান দুজন পথচারী ৷ তাঁরাই পুলিশে খবর দেন ৷
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ । মা ও ছেলে দুজনকেই দ্রুত বল্লারপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ শিশুটির চিকিৎসা চলছে ৷ তবে মহিলাকে মৃত বলে ঘোষণা করেছেন চিকিৎসকরা ৷
আরও পড়ুন: তিস্তায় ভেসে আসা সেনার বিস্ফোরক ফেটে জখম কৃষক
তদন্তের সময় জানা যায় যে, মহিলার মানসিক চিকিৎসা চলছিল ৷ কিন্তু গর্ভাবস্থার কারণে তাঁর ওষুধ কিছুদিন বন্ধ রাখা হয়েছিল । একজন প্রতিবেশী বলেন যে, মহিলাটি সর্বদা নদীর প্রতি আকৃষ্ট থাকতেন এবং অবশেষে সেই নদীই তাঁর জীবন কেড়ে নিল । পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।
নিহতের স্বামী বলেন যে, তাঁর স্ত্রী তাঁকে বলেছিলেন যে তিনি তাঁদের সন্তানের সঙ্গে একটি চকোলেট কিনতে বাইরে যাচ্ছেন । কিছুক্ষণ পরও তিনি ফিরছেন না দেখে তাঁকে সর্বত্র খোঁজা শুরু হয় ৷ বল্লারপুর থানাতেও খবর দেওয়া হয় ।
বল্লারপুর থানার একজন প্রবীণ আধিকারিক বলেন যে, জানা গিয়েছে, মহিলাটি এলাকার কোনও দোকানে যাননি এবং তিনি যে রাস্তায় গিয়েছিলেন, সেটাও আশ্চর্যজনক ৷ কারণ ওই রাস্তাটি লোকেরা এড়িয়ে চলেন ৷ কারণ এটি অত্যন্ত নির্জন রাস্তা ৷ তিনি এই রাস্তায় ঠিক কোথায় যাচ্ছিলেন তা জানা যায়নি বলে জানিয়েছেন পুলিশের ওই আধিকারিক ৷ এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ ।
বল্লারপুর থানার পরিদর্শক উমেশ পাতিল জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে । তাঁর কথায়, "প্রাথমিক দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে তিনি ব্রিজ থেকে কর্দমাক্ত এলাকায় পড়েছিলেন ৷ তবে ঘটনাটি সব দিক থেকে তদন্ত করা হচ্ছে ৷"