ETV Bharat / bharat

Arundhati Roy on Left Politics: 'জাতিভেদ না-বুঝলে রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবে না বামেরা', মন্তব্য অরুন্ধতীর - arundhati roy casteism

পটনায় সিপিআই(এম)এলের দলীয় অধিবেশনে অরুন্ধতী রায় বামদলগুলিকে বিশেষ বার্তা দিলেন ৷ অন্যদিকে, জাতিভেদের বিরুদ্ধে লড়া নেতাদের উদারপন্থাকে গ্রহণ করার আবেদনও জানালেন ৷ এভাবেই স্বৈরাচার বিরোধী শক্তি তৈরি করতে হবে, জানালেন লেখক (Left parties in India need to understand casteism to form effective alliance) ৷

Arundhati Roy
অরুন্ধতী রায়
author img

By

Published : Feb 18, 2023, 8:56 AM IST

Updated : Feb 18, 2023, 10:27 AM IST

ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে একান্ত সাক্ষাৎকারে লেখক-সমাজকর্মী অরুন্ধতী রায়

পটনা, 18 ফেব্রুয়ারি: দেশের বাম দলগুলি বর্ণবাদ বুঝতে পারছে না ৷ আপাত দৃষ্টিতে এর জন্যেই জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে প্রতিযোগী হিসেবে শক্তি হারিয়ে ফেলছে তারা ৷ শুক্রবার বিহারের পটনায় সিপিআই(এম)এল-এর 11তম দলীয় অধিবেশনের (CPI(M) Liberation party Congress) মঞ্চ থেকে বামেদের উদ্দেশ্যে এই বার্তা দিলেন লেখক-সমাজকর্মী অরুন্ধতী রায় (Arundhati Roy) ৷ এই মুহূর্তে দেশে বিরোধী দলগুলিকে 'অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট' বা স্বৈরাচার-বিরোধী জোট (anti-Fascist) তৈরি করতে হবে বলে তিনি মনে করেন ৷ বিহারে সিপিআই(এম)এল নীতীশ-তেজস্বীর 'মহাগঠবন্ধন' সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন করছে ৷ আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এই সমর্থন তাৎপর্যপূর্ণ ৷

এদিন ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "বামপন্থী-উদারপন্থীরা পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে লড়ছেন ৷ কিন্তু তাঁদের জাতিবাদের সমীকরণও বুঝতে হবে ৷ এদিকে যাঁরা জাতিভেদ প্রথার বিরুদ্ধে লড়ছেন, তাঁরা উদারপন্থা বুঝতে পারছেন না ৷ তাই যতক্ষণ না পর্যন্ত বামপন্থী-উদারপন্থীরা জাতিবাদ বুঝতে পারছেন এবং অন্যরা পুঁজিবাদ সম্পর্কে অবগত হচ্ছেন- ততক্ষণ পর্যন্ত এই যুদ্ধটা একটা জায়গায় আটকে থাকবে ৷ ফ্যাসিজম বা স্বৈরাচার তাদের মাথায় উঠে শাসন করবে ৷ যেমনটা এখন ভারতে হচ্ছে ৷"

'গড অফ স্মল থিংস'-এর লেখকের মতে, লোকসভা নির্বাচনের সময় এগিয়ে আসছে ৷ তার আগে বিহারে বামদলের জোট দেখে আশার আলো জাগছে বটে ৷ কিন্তু নিশ্চিতভাবে মনে রাখতে হবে যে, এটা শুধুমাত্র লোক দেখানো নয় ৷ এর পিছনে অর্থপূর্ণ ভাবনা (thoughtful) রয়েছে ৷ এ প্রসঙ্গে বুকারজয়ী লেখক বলেন, "2024 সালের লোকসভা নির্বাচনে বিহারে বামদলের জোটকে আরও মজবুত করতে আমি এখানে এসেছি ৷ আমাকে জানানো হয়েছে, নীতীশ এবং তেজস্বীও এখানে (সিপিআইএমএল দলীয় অধিবেশন) আসবেন ৷ এটা যেন নাটকে পরিণত না হয় ৷"

আরও পড়ুন: মুখবন্ধ খামে প্রস্তাব গ্রহণ নয় ! আদানি ইস্যুতে কেন্দ্রের আর্জি খারিজ সুপ্রিম কোর্টে

এর আগে বক্তৃতায় কারও নাম উল্লেখ না করে মোদি সরকারকে আক্রমণ করেন অরুন্ধতী ৷ তিনি বলেন, "পুরো দেশটাকে চারজন মানুষ পরিচালনা করছেন ৷ এঁদের মধ্যে দু'জন ক্রেতা এবং বাকি দু'জন বিক্রেতা ৷ এঁরা সবাই গুজরাতের ৷" তিনি 'চারজন' বলতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, শিল্পপতি গৌতম আদানি এবং মুকেশ আম্বানিকে বুঝিয়েছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ ৷

ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে তিনি বলেন, "আমি এরকম ভাবছি বলেই যে এটা বলছি, তা নয় ৷ আমি জানি এটা সত্যি এবং আমার কাছে সব পরিসংখ্যান আছে ৷ 21 জন শক্তিশালী ভারতীয়র সম্পদের পরিমাণ 30 কোটি সাধারণ মানুষের মোট সম্পদের চেয়েও বেশি ৷ আদানি সম্পর্কে সবকিছু বলেছি ৷ তাদের কাছে বন্দর আছে, সম্পদ আছে ৷ বাস্তবে দেশটি চারজনই চালাচ্ছে ৷"

সম্প্রতি আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট (Adani-Hindenburg scam) এবং সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতাও বাদ যায়নি তাঁর ভাষণে ৷ তাঁর কথায়, "প্রধানমন্ত্রীর মনে হচ্ছে, আদানিকে নিয়ে তাঁর কথা বলার প্রয়োজন নেই ৷ কারণ সাধারণ মানুষকে 5 কিলোগ্রাম রেশন দিচ্ছে মোদি সরকার এবং তারা সেই কারণে নরেন্দ্র মোদির কাছে কৃতজ্ঞ ৷ কিন্তু হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে যে দুর্নীতির কথা বলা হয়েছে, তার সঙ্গে 100 বিলিয়ন মার্কিন ডলার জড়িত ৷ এটাই দেশের বৃহত্তম কর্পোরেট জালিয়াতি ৷"

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে 11টা থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত 60 ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিবিসির দিল্লি ও মুম্বইয়ের অফিসে 'সার্ভে' চালিয়েছে আয়কর দফতর ৷ অরুন্ধতী উল্লেখ করেন, "শিল্পপতি গৌতম আদানির কোনও সম্পত্তিতে এরকম তল্লাশি হয়নি ৷ কিন্তু 2002 সালে গুজরাত দাঙ্গা এবং তার পিছনে থাকা সত্য সামনে আনার জন্য বিবিসিকে এই মাশুল গুনতে হচ্ছে ৷ এমনকী আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নিয়ে চুপ আমেরিকা ও ব্রিটেনও ৷" বৃহস্পতিবার পটনার শ্রীকৃষ্ণ মেমোরিয়াল হলে তিনদিন ব্যাপী সিপিআইএম(এল) অধিবেশন শুরু হয়েছে ৷ শনিবার শেষ দিন ৷

আরও পড়ুন: এলপিজি আমদানিতে আদানিদের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে মহুয়ার অভিযোগ খারিজ ইন্ডিয়ান অয়েলের

ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে একান্ত সাক্ষাৎকারে লেখক-সমাজকর্মী অরুন্ধতী রায়

পটনা, 18 ফেব্রুয়ারি: দেশের বাম দলগুলি বর্ণবাদ বুঝতে পারছে না ৷ আপাত দৃষ্টিতে এর জন্যেই জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে প্রতিযোগী হিসেবে শক্তি হারিয়ে ফেলছে তারা ৷ শুক্রবার বিহারের পটনায় সিপিআই(এম)এল-এর 11তম দলীয় অধিবেশনের (CPI(M) Liberation party Congress) মঞ্চ থেকে বামেদের উদ্দেশ্যে এই বার্তা দিলেন লেখক-সমাজকর্মী অরুন্ধতী রায় (Arundhati Roy) ৷ এই মুহূর্তে দেশে বিরোধী দলগুলিকে 'অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট' বা স্বৈরাচার-বিরোধী জোট (anti-Fascist) তৈরি করতে হবে বলে তিনি মনে করেন ৷ বিহারে সিপিআই(এম)এল নীতীশ-তেজস্বীর 'মহাগঠবন্ধন' সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন করছে ৷ আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এই সমর্থন তাৎপর্যপূর্ণ ৷

এদিন ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "বামপন্থী-উদারপন্থীরা পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে লড়ছেন ৷ কিন্তু তাঁদের জাতিবাদের সমীকরণও বুঝতে হবে ৷ এদিকে যাঁরা জাতিভেদ প্রথার বিরুদ্ধে লড়ছেন, তাঁরা উদারপন্থা বুঝতে পারছেন না ৷ তাই যতক্ষণ না পর্যন্ত বামপন্থী-উদারপন্থীরা জাতিবাদ বুঝতে পারছেন এবং অন্যরা পুঁজিবাদ সম্পর্কে অবগত হচ্ছেন- ততক্ষণ পর্যন্ত এই যুদ্ধটা একটা জায়গায় আটকে থাকবে ৷ ফ্যাসিজম বা স্বৈরাচার তাদের মাথায় উঠে শাসন করবে ৷ যেমনটা এখন ভারতে হচ্ছে ৷"

'গড অফ স্মল থিংস'-এর লেখকের মতে, লোকসভা নির্বাচনের সময় এগিয়ে আসছে ৷ তার আগে বিহারে বামদলের জোট দেখে আশার আলো জাগছে বটে ৷ কিন্তু নিশ্চিতভাবে মনে রাখতে হবে যে, এটা শুধুমাত্র লোক দেখানো নয় ৷ এর পিছনে অর্থপূর্ণ ভাবনা (thoughtful) রয়েছে ৷ এ প্রসঙ্গে বুকারজয়ী লেখক বলেন, "2024 সালের লোকসভা নির্বাচনে বিহারে বামদলের জোটকে আরও মজবুত করতে আমি এখানে এসেছি ৷ আমাকে জানানো হয়েছে, নীতীশ এবং তেজস্বীও এখানে (সিপিআইএমএল দলীয় অধিবেশন) আসবেন ৷ এটা যেন নাটকে পরিণত না হয় ৷"

আরও পড়ুন: মুখবন্ধ খামে প্রস্তাব গ্রহণ নয় ! আদানি ইস্যুতে কেন্দ্রের আর্জি খারিজ সুপ্রিম কোর্টে

এর আগে বক্তৃতায় কারও নাম উল্লেখ না করে মোদি সরকারকে আক্রমণ করেন অরুন্ধতী ৷ তিনি বলেন, "পুরো দেশটাকে চারজন মানুষ পরিচালনা করছেন ৷ এঁদের মধ্যে দু'জন ক্রেতা এবং বাকি দু'জন বিক্রেতা ৷ এঁরা সবাই গুজরাতের ৷" তিনি 'চারজন' বলতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, শিল্পপতি গৌতম আদানি এবং মুকেশ আম্বানিকে বুঝিয়েছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ ৷

ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে তিনি বলেন, "আমি এরকম ভাবছি বলেই যে এটা বলছি, তা নয় ৷ আমি জানি এটা সত্যি এবং আমার কাছে সব পরিসংখ্যান আছে ৷ 21 জন শক্তিশালী ভারতীয়র সম্পদের পরিমাণ 30 কোটি সাধারণ মানুষের মোট সম্পদের চেয়েও বেশি ৷ আদানি সম্পর্কে সবকিছু বলেছি ৷ তাদের কাছে বন্দর আছে, সম্পদ আছে ৷ বাস্তবে দেশটি চারজনই চালাচ্ছে ৷"

সম্প্রতি আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট (Adani-Hindenburg scam) এবং সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতাও বাদ যায়নি তাঁর ভাষণে ৷ তাঁর কথায়, "প্রধানমন্ত্রীর মনে হচ্ছে, আদানিকে নিয়ে তাঁর কথা বলার প্রয়োজন নেই ৷ কারণ সাধারণ মানুষকে 5 কিলোগ্রাম রেশন দিচ্ছে মোদি সরকার এবং তারা সেই কারণে নরেন্দ্র মোদির কাছে কৃতজ্ঞ ৷ কিন্তু হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে যে দুর্নীতির কথা বলা হয়েছে, তার সঙ্গে 100 বিলিয়ন মার্কিন ডলার জড়িত ৷ এটাই দেশের বৃহত্তম কর্পোরেট জালিয়াতি ৷"

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে 11টা থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত 60 ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিবিসির দিল্লি ও মুম্বইয়ের অফিসে 'সার্ভে' চালিয়েছে আয়কর দফতর ৷ অরুন্ধতী উল্লেখ করেন, "শিল্পপতি গৌতম আদানির কোনও সম্পত্তিতে এরকম তল্লাশি হয়নি ৷ কিন্তু 2002 সালে গুজরাত দাঙ্গা এবং তার পিছনে থাকা সত্য সামনে আনার জন্য বিবিসিকে এই মাশুল গুনতে হচ্ছে ৷ এমনকী আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নিয়ে চুপ আমেরিকা ও ব্রিটেনও ৷" বৃহস্পতিবার পটনার শ্রীকৃষ্ণ মেমোরিয়াল হলে তিনদিন ব্যাপী সিপিআইএম(এল) অধিবেশন শুরু হয়েছে ৷ শনিবার শেষ দিন ৷

আরও পড়ুন: এলপিজি আমদানিতে আদানিদের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে মহুয়ার অভিযোগ খারিজ ইন্ডিয়ান অয়েলের

Last Updated : Feb 18, 2023, 10:27 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.