বেঙ্গালুরু, 18 অগস্ট: চাঁদের চারপাশে চক্কর দেওয়ার কাজ আগেই শেষ হয়েছিল ৷ এবার চন্দ্রযান থেকে আলাদা হয়ে গেল ল্যান্ডার বিক্রম ৷ ইসরো জানিয়েছে, যেমনটা নির্দিষ্ট ছিল, সেই মতোই এদিনের সফল ফায়ারিং-এর ফলে প্রোপালশন মডিউল থেকে ল্যান্ডার মডিউল আলাদা হয়ে যায় ৷ সে সময় চন্দ্রযান-3 153 কিমি x 163 কিমি কক্ষপথে ছিল ৷ ফলে ল্যান্ডারের চাঁদের মাটি ছোঁয়ার দিনগোনা শুরু হল ৷
প্রোপালশন মডিউলের এর ভূমিকা কী ?
প্রোপালশন মডিউলটি চন্দ্রের কক্ষপথ থেকে পৃথিবীর বর্ণালী এবং পোলারিমেট্রিক পরিমাপ অধ্যয়ন করবে । ফলে চাঁদের কাছে ভারতের স্যাটেলাইট সংখ্যা এখন দু’য়ের বদলে তিন ৷ এই মডিউল ল্যান্ডার এবং রোভারকে ইনজেকশন কক্ষপথ থেকে 100 কিলোমিটার চন্দ্র কক্ষপথ পর্যন্ত বহন করবে। স্পেকট্রো-পোলারিমেট্রি অফ হ্যাবিটেট প্ল্যানেটারি আর্থ (শেপ) পেলোডও বহন করছে এটি । ইসরো জানিয়েছে, শেপ এর লক্ষ্য বিভিন্ন এক্সো-প্ল্যানেটের অনুসন্ধান করা যা বাসযোগ্য (অর্থাৎ, এক্সো প্ল্যানেটে প্রাণের উপস্থিতি খোঁজা)।
এরপরের ধাপ কী ?
প্রোপালশন মডিউল ও ল্যান্ডার আলাদা হওয়ার পর চন্দ্রযান-3 এর কক্ষপথকে ধীরে ধীরে হ্রাস করবেন বিজ্ঞানীরা ৷ একই সঙ্গে এটিকে চন্দ্রের মেরুতে প্রতিস্থাপন করার শেষ পর্যায়ের কাজও শুরু হয়ে গেল । ইসরো জানিয়েছে, পৃথকীকরণের পর ল্যান্ডারটি একটি ‘ডিবুস্ট’ (মন্থর হওয়ার প্রক্রিয়া) এর মধ্য দিয়ে যাবে ৷ 23 অগস্ট, শেষ ধাপে চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে অবতরণের চেষ্টা করা হবে ।
আরও পড়ুন: আলাদা হল ল্যান্ডার, হাতে চাঁদ পাওয়ার দিকে আরও একধাপ এগোল ইসরো
দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার চেয়ারম্যান এস সোমনাথ সম্প্রতি বলেন, ‘‘পেরিলিউন (চাঁদের নিকটতম বিন্দু) 30 কিলোমিটার এবং অ্যাপুলুন (চাঁদের সবচেয়ে দূরবর্তী বিন্দু) 100 কিলোমিটার । অবতরণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল ল্যান্ডারের গতিবেগ কমিয়ে আনার প্রক্রিয়া যখন এটি 30 কিলোমিটার উচ্চতা থেকে চূড়ান্ত অবস্থানে অবতরণ শুরু করবে । মহাকাশযানটিকে অনুভূমিক থেকে উল্লম্ব দিকে স্থানান্তর করার ধাপটিই সবচেয়ে জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ ।’’
গত 14 জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে যে মহাকাশযানটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল সেটি আগামী 23 অগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চল স্পর্শ করবে বলে আশা করা হচ্ছে । চন্দ্রযান 3 উৎক্ষেপণের জন্য একটি জিএসএলভি মার্ক 3 (এলভিএম 3) ভারী-লিফট লঞ্চ ভেহিকেল ব্যবহার করা হয় এবং 5 অগস্ট চাঁদের কক্ষপথে স্থাপন করা হয় মহাকাশযানটিকে ৷ তারপর থেকে এটি বেশ কয়েকটি কক্ষপথের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে গিয়েছে চন্দ্রপৃষ্ঠের দিকে ৷ এবার শুরু হয়ে গেল দেশের স্বপ্নের উড়ানের হাতে চাঁদ পাওয়ার দিনগোনা ৷
আরও পড়ুন: চন্দ্রযান-3 মানবজাতির কল্যাণ করবে, ভূটানের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বার্তা মোদির