জয়পুর, 12 ডিসেম্বর: করণি সেনা প্রধান সুখদেব সিং গোগামেডি খুনে একটি বড় অপরাধচক্র কাজ করেছে ৷ আর সেই চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এক মহিলাকে গ্রেফতার করল পুলিশ ৷ তার নাম পূজা সাইনি ৷ এর আগে 9 ডিসেম্বর, শনিবার গভীর রাতে চণ্ডীগড় থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ এবং রাজস্থান পুলিশের যৌথ দল ৷ তাদের মধ্যে 2 জন শুটার রোহিত রাঠোর এবং নীতিন ফৌজি ৷ তাদের সঙ্গে সঙ্গী উধম সিংকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ তিনজনকে 7 দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক ৷ এছাড়া শনিবারই রামবীর জাট নামে আরেকজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷
এরপর সোমবার শ্রী রাষ্ট্রীয় রাজপুত করণি সেনার প্রধান খুনে গ্রেফতার করা হল পূজা সাইনিকে ৷ জয়পুরের পুলিশ কমিশনার বিজু জর্জ জোসেফ জানান, পূজা সাইনি এবং তাঁর স্বামী মহেন্দ্র মেঘওয়াল নীতিন ফৌজিকে অস্ত্র সরবরাহ করেছে ৷ আর করণি সেনা প্রধান খুনে অভিযুক্ত শুটার নীতিন ফৌজি ওই দম্পতির সঙ্গে একই ফ্ল্যাটে থাকছিল ৷ 5 সেপ্টেম্বর নিজের বাড়িতেই খুন হন করণি সেনা প্রধান ৷ তাঁর খুনের এক সপ্তাহ আগে থাকতে ওই ফ্ল্যাটটিতে বসবাস করছিল ফৌজি ৷ পুলিশ আরও জানিয়েছে, মহেন্দ্র মেঘওয়াল ওরফে সমীর কোটার একজন দাগী অপরাধী বলেই পরিচিত ৷ এখন সে পলাতক ৷
কীভাবে খুন হন শ্রী রাষ্ট্রীয় রাজপুত করণি সেনার প্রধান সুখদেব সিং গোগোমেডি: অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার কৈলাশ চন্দ্র বিষ্ণোই বলেন, "28 নভেম্বর ফৌজি ট্যাক্সিতে করে জয়পুরে আসে ৷ সেখানে মেঘওয়ালের সঙ্গে তার দেখা হয় ৷ মেঘওয়াল তাকে জগতপুরার ফ্ল্যাটে নিয়ে যায় ৷ মেঘওয়ালের মাধ্যমেই গ্যাংস্টার রোহিত গোদারার সঙ্গে যোগাযাগ রাখছিল নীতিন ফৌজি ৷" এদিকে করণি সেনা প্রধান সুখদেব সিং গোগামেডি খুনের দায় স্বীকার করেছে রোহিত গোদারা ৷ সে গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই এবং গ্যাংস্টার গোল্ডি ব্রারের ঘনিষ্ঠ ৷ সোশাল মিডিয়ায় রোহিত গোদারা জানায়, সুখদেব সিং তার শত্রুদের সাহায্য করছিল ৷ তাই রোহিতের দলের লোকেরাই তাকে খুন করেছে ৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মেঘওয়াল আধ ডজনেরও বেশি পিস্তল জোগাড় করেছিল ৷ পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ কার্টিজও ৷ নীতিন ফৌজি তার কাছ থেকে নিজের জন্য দু'টি পিস্তল আর যতগুলি সম্ভব ম্যাগাজিন নেয় ৷ এর সঙ্গে আরেক শুটার রোহিত রাঠোরের জন্য একটি পিস্তল আর দু'টি ম্যাগাজিন সংগ্রহ করে ৷ মেঘওয়ালের স্ত্রী পূজা সাইনি ফৌজিদের জন্য খাবারদাবারের ব্যবস্থা করেছিল ৷
5 ডিসেম্বর সকালে মহেন্দ্র মেঘওয়াল ওরফে সমীর,নীতিন ফৌজিকে আজমের রোডে নামিয়ে দেয় ৷ সেখানে রোহিত রাঠোর তাদের জন্য অপেক্ষা করছিল ৷ এরপর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নীতিন ফৌজি ও রোহিত রাঠোরকে জয়পুরের শ্যামনগর এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানে শ্রী রাষ্ট্রীয় করণি সেনার প্রধান সুখদেব সিং গোগামেডির বাসভবন ৷ গোগামডির পরিচিত নবীন শেখাওয়াত রোহিত রাঠোর ও নীতিন ফৌজিকে গোগামেডির বাসভবনের ভিতরে নিয়ে যায় ৷ তখন করণি সেনা প্রধান তাঁর বসার ঘরে সোফায় বসেছিলেন ৷ তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ কথাবার্তার পরই রোহিত ও নীতিন পিস্তল বের করে সুখদেব সিং গোগামেডিকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে ৷ সে সময় শেখাওয়াত পালানোর চেষ্টা করলে ওই গুলিতে তারও মৃত্যু হয় ৷ আর গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে মৃত্যু হয় করণি সেনা প্রধানের ৷
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার কৈলাশ চন্দ্র বিষ্ণোই আরও বলেন, "লরেন্স বিষ্ণোইয়ের গ্যাং ওই ফ্ল্যাট থেকে পরিকল্পনামাফিক কাজ করছিল ৷ দম্পতির ফ্ল্যাট থেকে এই বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে ৷ তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই পূজা ও মহেন্দ্র দম্পতি এই অপরাধের জন্য লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংকে অস্ত্র সরবরাহের কাজ করেছিল ৷"
আরও পড়ুন: