নয়াদিল্লি, 16 সেপ্টেম্বর : কংগ্রেসে নাম লেখানোর জমি নাকি পাকা করছেন কানহাইয়া কুমার (Kanhaiya Kumar) ৷ ইতিমধ্যেই কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধির (Rahul Gandhi) সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি ৷ সূত্রের খবর, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আর হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেবেন জেএনইউ-এর (JNU) এই প্রাক্তন ছাত্রনেতা ৷ এদিকে, গত দু’বছরে গেরুয়া দাপটে কংগ্রেসের হাত ছেড়েছেন বহু তরুণ তুর্কী ৷ যাঁরা এখনও দলে রয়ে গিয়েছেন, নবীন বনাম প্রবীণের লড়াইয়ে তাঁরাও আজ কোণঠাসা ৷ এই অবস্থায় কানহাইয়া যদি কংগ্রেসে যোগ দেন, তাতে কংগ্রেসের ভিত কিছুটা হলেও পোক্ত হবে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের ৷ কারণ, কানহাইয়া নিজে তরুণ নেতা হিসাবে বেশ জনপ্রিয় ৷ তিনি খুব ভাল বক্তাও ৷ আগামী দিনে উত্তরপ্রদেশ-সহ ভারতের একাধিক রাজ্যে বিধানসভার ভোট রয়েছে ৷ কানহাইয়ার ক্য়ারিশমা সেইসব জায়গায় কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রচারের হাতিয়ার হতেই পারে ৷
আরও পড়ুন : Sushmita Dev : কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে সুস্মিতা দেব
কানহাইয়ার পাশাপাশি জল্পনা শুরু হয়েছে আরও এক তরুণ তুর্কীকে নিয়েও ৷ তিনি গুজরাতের বিধায়ক জিগনেশ মেভানি (Jignesh Mevani) ৷ সূত্রের খবর, তলায় তলায় কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন তিনি ৷ প্রসঙ্গত, গুজরাতের গত বিধানসভা নির্বাচনে জিগনেশের জয় নিশ্চিত করতেই বানসকান্থা জেলার ভাদগাঁও আসনে কোনও প্রার্থী দাঁড় করায়নি কংগ্রেস ৷
কানহাইয়া কুমারের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, সিপিআই-এর (CPI) অন্দরে নাকি ‘দমবন্ধ’ হয়ে যাচ্ছে তাঁর ৷ আর সেই কারণেই গত মঙ্গলবার কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধির সঙ্গে দেখা করেন তিনি ৷ কীভাবে কংগ্রেসে যোগদান করা যায়, তা নিয়েই আলোচনা হয় দু’জনের মধ্যে ৷ এই বিষয়ে সিপিআই-এর সাধারণ সম্পাদক ডি রাজাকে (D Raja) প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, কানহাইয়াকে নিয়ে শুধুমাত্র নানা জল্পনাই শুনেছেন তিনি ৷ তার বেশি কিছু জানেন না ৷ প্রবীণ নেতার কথায়, ‘‘আমি শুধু এটুকুই বলতে পারি যে চলতি মাসের গোড়ায় আমাদের জাতীয় কার্যনির্বাহী বৈঠকে তিনি (কানহাইয়া কুমার) উপস্থিত ছিলেন ৷ তিনি নিজের বক্তব্যও রেখেছেন এবং অন্য নেতাদের সঙ্গে কথাও বলেছেন ৷’’
তবে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কানহাইয়া নিজে কিছুই বলেননি ৷ যদিও কংগ্রেসের একাংশ মনে করছেন, বিহারের রাজনীতিতে কানহাইয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন ৷ প্রসঙ্গত, গত প্রায় তিন দশক ধরে বিহারের রাজনীতিতে বিশেষ সুবিধা করে উঠতে পারছে না জাতীয় কংগ্রেস ৷ এমনকী, গত বিধানসভা নির্বাচনেও বিহারে দলের ফল হয়েছিল শোচনীয় ৷ বরং তাদের জোটসঙ্গী আরজেডি এবং সিপিআই (এমএল) তুলনামূলকভাবে অনেক ভাল ফল করেছিল ৷ যে 70টি আসনে কংগ্রেসের প্রার্থীরা লড়াই করেছিলেন, তার মধ্যে মাত্র 19টিতেই বিজয় পতাকা তুলতে পেরেছেন তাঁরা ৷ অন্যদিকে, রাজ্য়ে মোট আসনের প্রায় অর্ধেকই নিজেদের ঝুলিতে পুরতে সক্ষম হয় আরজেডি ৷ আর সিপিআই (এমএল) 19টি আসনে লড়াই করে জিতে নেয় 12টি ৷
আরও পড়ুন : Prashant Kishor : পিকেকে দলে নেওয়া নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত কংগ্রেস
সূত্রের খবর, কংগ্রেসী নেতাদের একটা বড় অংশই মনে করছেন, কানহাইয়া কুমার এবং জিগনেশ মেভানি তাঁদের দলের নাম লেখালে গোটা দলটাই নতুন করে অক্সিজেন পাবে ৷ কারণ, এই মুহূর্তে কংগ্রেসের যোগ্য নবীন নেতার বড়ই অভাব ৷ যাঁরা দলে প্রভাবশালী ছিলেন, তাঁদের অনেকেই কংগ্রেসের সঙ্গ ত্যাগ করে অন্যত্র ঘাঁটি গেড়েছেন ৷ এঁদের মধ্যে অন্যতম জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, সুস্মিতা দেব এবং প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী ৷ এতে দলের ক্ষতি হয়েছে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের ৷ বিশেষ করে তরুণদের কাছে কংগ্রেসের জনপ্রিয়তা কমেছে ৷