ETV Bharat / bharat

Independence Special : অসমে আজ বিস্মৃত হরিজন আন্দোলনের কাণ্ডারী কৃষ্ণনাথ শর্মা

অসমে হরিজন আন্দোলনের কাণ্ডারী ছিলেন কৃষ্ণনাথ শর্মা ৷ হরিজন ও দলিতদের উন্নয়নে আজীবন কাজ করে গিয়েছেন তিনি ৷ কিন্তু অসম তাঁকে মনে রাখেনি ৷ তাঁর হাতে তৈরি জোড়হাটের সবরমতী আশ্রমের আজ ভগ্নদশা ৷

author img

By

Published : Oct 10, 2021, 6:05 AM IST

Independence Special :  assam forgets krishna nath sarma
Independence Special : অসমে হরিজন আন্দোলনের কাণ্ডারী কৃষ্ণনাথ শর্মাকে ভুলে গিয়েছে রাজ্যবাসী

গুয়াহাটি, 10 অক্টোবর : 1887 সালের 28 ফেব্রুয়ারি অসমের জোড়হাট জেলার সর্বাইবন্ধে জন্মগ্রহণ করেন কৃষ্ণনাথ শর্মা ৷ তিনি যথার্থ অর্থেই গান্ধিবাদী ছিলেন ৷ ভারতের হরিজন সম্প্রদায় বা দলিতদের উন্নয়নের স্বার্থেই 1932 সালে ‘হরিজন সেবক সংঘ’ নামে একটি সংস্থা তৈরি করেছিলেন জাতির জনক মহাত্মা গান্ধি ৷ এই সংঘের সহযোগিতাতেই মন্দির, স্কুল, রাস্তা এবং নদী-পুকুরের মতো জায়গায় যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল পিছিয়ে থাকা এই সম্প্রদায়ের ৷ সারা দেশের পাশাপাশি অসমও সাক্ষী ছিল এই আন্দোলনের ৷ যার মূল কাণ্ডারী ছিলেন কৃষ্ণনাথ শর্মা ৷ যাঁকে সকলে চেনে হরিজন বন্ধু নামে ৷

আরও পড়ুন : Independence Special : স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র ছিল সবরমতী আশ্রম

অচ্ছুতের যে প্রথা চিরাচরিতভাবে ভারতের সমাজে চলে আসছিল, তা সমূলে উৎখাত করতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন কৃষ্ণনাথ ৷ কুলীন ব্রাহ্মণ সন্তান হলেও দলিতদের প্রার্থনা করার জন্য নিজের বাড়ির নামঘরে আমন্ত্রণ জানাতেন তিনি ৷ যা সেই সময় দাঁড়িয়ে কেউ করে দেখানোর সাহস পর্যন্ত পেত না ৷ গান্ধিজির হরিজন আন্দোলনে সামিল হয়ে আগাগোড়া হরিজনদের সমাজের মূল স্রোতে আনার লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন তিনি ৷ বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকস্তরের পড়াশোনা শেষ করে আর্ল ল’ কলেজ থেকে আইন নিয়েও স্নাতক হন কৃষ্ণনাথ ৷ বেশ কিছুদিন ওকালতিও করেছিলেন ৷ কিন্তু 1921 সালে তাতে ইতি টানেন তিনি ৷ গান্ধিজির অসহযোগ আন্দোলনে সরাসরি সামিল হওয়ার জন্য পেশা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন ৷

অসমে আজ বিস্মৃত হরিজন আন্দোলনের কাণ্ডারী কৃষ্ণনাথ শর্মা

1921 সালেই জোড়হাট জেলায় কংগ্রেসের দায়িত্ব পান কৃষ্ণনাথ শর্মা ৷ ওই বছরই আবার তাঁকে এক বছরের জন্য কারাবাসে যেতে হয় ৷ জেলে তাঁর সঙ্গী ছিলেন নবীনচন্দ্র বরদলুই, তরুণরাম ফুকান এবং কূলধর ছালিহা ৷ এই সময় থেকেই গান্ধিজির সমস্ত পদক্ষেপ অনুসরণ করতে শুরু করেন কৃষ্ণনাথ ৷ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের উদ্দেশ্যে জড়িয়ে পড়েন একের পর এক আন্দোলনে ৷ অশিক্ষার অন্ধকার দূর করতে স্কুল এবং কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি ৷ প্রত্যন্ত এলাকায় হাসপাতাল, রাস্তা প্রভৃতি তৈরির কাজে হাত লাগান ৷

আরও পড়ুন : Independence Special : বয়স ছিল মাত্র 13, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রাণ দিয়েছিলেন কাটিহারের ধ্রুব কুণ্ডু

কৃষ্ণনাথের মৃত্যু হয় 1947 সালের 2 ফেব্রুয়ারি ৷ মৃত্যুর আগে পর্যন্ত গান্ধিজির আদর্শ অনুসরণ করে গিয়েছেন তিনি ৷ দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, আজও অসমে সেভাবে কোনও স্বীকৃতিই পাননি এই মহান সমাজ সংস্কারক ৷ অসমের জোড়হাটেই সবরমতী আশ্রম তৈরি করেছিলেন কৃষ্ণনাথ শর্মা ৷ আজ তার জরাজীর্ণ দশা ৷ স্থানীয় বাসিন্দা থেকে সরকার, কোনও তরফেই আশ্রমটিকে বাঁচানোর কোনও প্রয়াস নেই ৷ ফলে পুরোটাই ঢাকা পড়েছে আগাছা আর জঙ্গলে ৷ অথচ এই আশ্রমের সঙ্গে প্রাক-স্বাধীনতা যুগে অসমের ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে ৷ কিন্তু সেটিকে সংস্কারের কোনও চেষ্টা চোখে পড়ে না ৷ আশ্রম চত্বরেই রয়েছে কৃষ্ণনাথ শর্মার স্মৃতিশৌধ ৷ তারও আজ বেহাল দশা ৷

গুয়াহাটি, 10 অক্টোবর : 1887 সালের 28 ফেব্রুয়ারি অসমের জোড়হাট জেলার সর্বাইবন্ধে জন্মগ্রহণ করেন কৃষ্ণনাথ শর্মা ৷ তিনি যথার্থ অর্থেই গান্ধিবাদী ছিলেন ৷ ভারতের হরিজন সম্প্রদায় বা দলিতদের উন্নয়নের স্বার্থেই 1932 সালে ‘হরিজন সেবক সংঘ’ নামে একটি সংস্থা তৈরি করেছিলেন জাতির জনক মহাত্মা গান্ধি ৷ এই সংঘের সহযোগিতাতেই মন্দির, স্কুল, রাস্তা এবং নদী-পুকুরের মতো জায়গায় যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল পিছিয়ে থাকা এই সম্প্রদায়ের ৷ সারা দেশের পাশাপাশি অসমও সাক্ষী ছিল এই আন্দোলনের ৷ যার মূল কাণ্ডারী ছিলেন কৃষ্ণনাথ শর্মা ৷ যাঁকে সকলে চেনে হরিজন বন্ধু নামে ৷

আরও পড়ুন : Independence Special : স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্র ছিল সবরমতী আশ্রম

অচ্ছুতের যে প্রথা চিরাচরিতভাবে ভারতের সমাজে চলে আসছিল, তা সমূলে উৎখাত করতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন কৃষ্ণনাথ ৷ কুলীন ব্রাহ্মণ সন্তান হলেও দলিতদের প্রার্থনা করার জন্য নিজের বাড়ির নামঘরে আমন্ত্রণ জানাতেন তিনি ৷ যা সেই সময় দাঁড়িয়ে কেউ করে দেখানোর সাহস পর্যন্ত পেত না ৷ গান্ধিজির হরিজন আন্দোলনে সামিল হয়ে আগাগোড়া হরিজনদের সমাজের মূল স্রোতে আনার লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন তিনি ৷ বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকস্তরের পড়াশোনা শেষ করে আর্ল ল’ কলেজ থেকে আইন নিয়েও স্নাতক হন কৃষ্ণনাথ ৷ বেশ কিছুদিন ওকালতিও করেছিলেন ৷ কিন্তু 1921 সালে তাতে ইতি টানেন তিনি ৷ গান্ধিজির অসহযোগ আন্দোলনে সরাসরি সামিল হওয়ার জন্য পেশা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন ৷

অসমে আজ বিস্মৃত হরিজন আন্দোলনের কাণ্ডারী কৃষ্ণনাথ শর্মা

1921 সালেই জোড়হাট জেলায় কংগ্রেসের দায়িত্ব পান কৃষ্ণনাথ শর্মা ৷ ওই বছরই আবার তাঁকে এক বছরের জন্য কারাবাসে যেতে হয় ৷ জেলে তাঁর সঙ্গী ছিলেন নবীনচন্দ্র বরদলুই, তরুণরাম ফুকান এবং কূলধর ছালিহা ৷ এই সময় থেকেই গান্ধিজির সমস্ত পদক্ষেপ অনুসরণ করতে শুরু করেন কৃষ্ণনাথ ৷ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের উদ্দেশ্যে জড়িয়ে পড়েন একের পর এক আন্দোলনে ৷ অশিক্ষার অন্ধকার দূর করতে স্কুল এবং কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি ৷ প্রত্যন্ত এলাকায় হাসপাতাল, রাস্তা প্রভৃতি তৈরির কাজে হাত লাগান ৷

আরও পড়ুন : Independence Special : বয়স ছিল মাত্র 13, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রাণ দিয়েছিলেন কাটিহারের ধ্রুব কুণ্ডু

কৃষ্ণনাথের মৃত্যু হয় 1947 সালের 2 ফেব্রুয়ারি ৷ মৃত্যুর আগে পর্যন্ত গান্ধিজির আদর্শ অনুসরণ করে গিয়েছেন তিনি ৷ দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, আজও অসমে সেভাবে কোনও স্বীকৃতিই পাননি এই মহান সমাজ সংস্কারক ৷ অসমের জোড়হাটেই সবরমতী আশ্রম তৈরি করেছিলেন কৃষ্ণনাথ শর্মা ৷ আজ তার জরাজীর্ণ দশা ৷ স্থানীয় বাসিন্দা থেকে সরকার, কোনও তরফেই আশ্রমটিকে বাঁচানোর কোনও প্রয়াস নেই ৷ ফলে পুরোটাই ঢাকা পড়েছে আগাছা আর জঙ্গলে ৷ অথচ এই আশ্রমের সঙ্গে প্রাক-স্বাধীনতা যুগে অসমের ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে ৷ কিন্তু সেটিকে সংস্কারের কোনও চেষ্টা চোখে পড়ে না ৷ আশ্রম চত্বরেই রয়েছে কৃষ্ণনাথ শর্মার স্মৃতিশৌধ ৷ তারও আজ বেহাল দশা ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.