নিউ দিল্লি, 5 মে: রোজই খবরের শিরোনামে নতুন করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ৷ স্বভাবতই দেশের ল্যাবরেটরিগুলিতে বাড়ছে করোনা পরীক্ষার চাপ ৷ তাই কোনো ব্যক্তির একবার আরটিপিসিআর টেস্ট হয়ে থাকলে আর করতে হবে না ৷
আইসিএমআর-এর নতুন নিয়ম-
1. ব়্যাট (আরএটি) বা আরিটিপিসিআর পরীক্ষা একবার করা থাকলে আর করতে হবে না ৷
2. দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশিকা অনুযায়ী কোভিড-19 রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার সময় আর আরটিপিসিআর পরীক্ষা করার দরকার নেই
3. ল্যাবরেটরিতে আরটিপিসিআর পরীক্ষার চাপ কমানোর জন্য দেশের মধ্যে কোনো রাজ্যে গেলে কাউকে আরটিপিসিআর টেস্ট করতে হবে না ৷
4. নতুন সংক্রমণের সংখ্যা কমাতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া আর কোভিড লক্ষণযুক্ত যাত্রীদের এখন কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয় ৷
5. জরুরি পরিস্থিতিতে কোথাও যেতে হলে সব অ্যাসিম্পটোম্যাটিক বা উপসর্গবিহীন যাত্রীরা যেন অবশ্যই নির্দিষ্ট কোভিড বিধি মেনে যাতায়াত করেন ৷
6. মোবাইল টেস্টিং ল্যাবরেটরিজ বা ভ্রাম্যমাণ ল্যাবরেটরির সন্ধান পাওয়া যাবে জিইএম পোর্টালে ৷ রাজ্যগুলিকেও মোবাইলের মাধ্যমে আরটিপিসিআর টেস্টের নথিভুক্তি করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে ৷
দেশে আরটিপিসিআর পরীক্ষার ব্যবস্থা-
সারা দেশে কোভিড পজিটিভিটি 20 শতাংশের বেশি ৷ হু হু করে বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে টেস্ট-ট্র্যাকিং-ট্রেসিং, আইসোলেশন আর বাড়ি থেকে চিকিৎসার উপরই জোর দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ এতে করোনাভাইরাসের সার্স-কোভ-2 ছড়ানোর প্রবণতাও কমবে ৷
বর্তমানে দেশজুড়ে 2506টি মলিকিউলার ল্যাবরেটরি রয়েছে, যেখানে করোনাসংক্রমণের প্রয়োজনীয় আরটিপিসিআর, ট্রুন্যাট, সিবিএনএএটি ও অন্যান্য জরুরি পরীক্ষাগুলি করা হয় ৷ প্রতিদিন সারা দেশে ল্যাবরেটরিগুলির নেটওয়ার্ক অনুযায়ী তিনটি শিফট বা দফায় পনেরো লক্ষের কাছাকাছি পরীক্ষা করা সম্ভব ৷
বর্তমানে বাড়তে থাকা সংক্রমণের চাপে আর ল্যাবরেটরির কর্মীরাও কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার ফলে প্রতিদিন নির্ধারিত সংখ্যক পরীক্ষা করে ওঠা একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে গিয়েছে ৷
এই পরিস্থিতিতেও আরটিপিসিআর পরীক্ষা চালু রাখা দরকার ৷ আর পাশাপাশি সব দেশবাসীর জন্য এই পরীক্ষার সহজলভ্যতা বাড়ানো প্রয়োজন ৷ তাই এই সিদ্ধান্ত ৷
সমাধান-
2020-র জুনে ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট (আরএটি) পরীক্ষার অনুমোদন দিলেও পরে এই পরীক্ষার ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ চালু করা হয় ৷ তবে আইসিএমআর 36 টি আরএটিকে অনুমোদন দিয়েছে ৷ তার মধ্যে জিইএম পোর্টালে 10-টির সন্ধান মিলবে ৷ 10-15 মিনিটের মধ্যেই এই পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া যায় ৷ তাই চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে এই পরীক্ষার সংখ্যাও বাড়বে ৷
আরও পড়ুন: মোটা তারের ভরসাতেই অলোকানন্দা পার করল জেসিবি
আরএটি পরীক্ষার বন্দোবস্ত-
- সব সরকারি আর প্রাইভেট হাসপাতালেই এই পরীক্ষার সুযোগ পাওয়া যাবে ৷
- শহরে, মফসস্বল অঞ্চলে, গ্রামে এই পরীক্ষার বুথের সংখ্যা বাড়ানো হবে ৷
- এমনকি প্রয়োজনে টেস্টিং বুথ খোলা হবে আরডব্লিউএ, অফিস, স্কুল, কলেজ, কমিউনিটি সেন্টার, আর অন্যান্য খালি জায়গাগুলিতে ৷
- এই পরীক্ষার সুযোগ যাতে যে কেউ যে কোনো সময় পায় তাই 24x7 খোলা রাখা হবে ৷
- আঞ্চলিক প্রশাসন ঠিক করবে ওই অঞ্চলের কোন কোন সুবিধেজনক জায়গায় এই আরএটি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা যায় ৷
- আরএটি পরীক্ষার জায়গাগুলিতে যাতে ভিড় না হয়, তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷
অতিরিক্ত নির্দেশিকা-
- সব রাজ্যকে পাবলিক আর প্রাইভেট, দু'ক্ষেত্রেই আরটিপিসিআর পরীক্ষা করার ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ৷
- আইসিএমআর-এর নির্দেশিকা অনুযায়ী আরএটি পরীক্ষা করতে হবে ৷
- করোনার লক্ষণযুক্ত কেউ আরএটি পরীক্ষায় কোভিড পজিটিভ ধরা পড়লে ফের পরীক্ষা করার দরকার নেই ৷ বাড়িতে থেকে আইসিএমআর-এর নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে ৷
- করোনার লক্ষণ রয়েছে অথচ আরএটি পরীক্ষার ফল কোভিড নেগেটিভ এলে তখন আরটিপিসিআর পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে পারেন রোগী ৷ এর মধ্যের সময় হোম-আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা করতে হবে ৷
- সব আরটিপিসিআর এবং আরএটি পরীক্ষার ফলাফল অবশ্যই আইসিএমআর-এর পোর্টালে আপলোড করতে হবে ৷
- কোনো পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়ার আগে কাশির সঙ্গে জ্বর বা কাশি ছাড়া জ্বর হলে, মাথাব্যথা, গলা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, গায়ে ব্যথা, সম্প্রতি স্বাদ বা গন্ধ হারানো, ক্লান্ত হয়ে পড়া, ডায়ারিয়া, এই লক্ষণগুলি কোভিড-19-এর লক্ষণ হিসেবে ধরা হবে ৷
- যাঁরা কোভিড-19 পরীক্ষা করিয়েছেন, তাঁদের ভ্যাকসিনেশনের তথ্য আরটিপিসিআর অ্যাপের স্যাম্পল রেফারাল ফর্ম (এসআরএফ)-এ অবশ্য়ই দিয়ে রাখতে হবে ৷ এই তথ্য আরটিপিসিআর আর আরএটি দু'ধরনের পরীক্ষার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য ৷
- আরএটি পরীক্ষা বাড়াতে যে খরচ হবে তার দায়িত্ব নেবে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রক ৷