কলকাতা, 19 সেপ্টেম্বর : তাঁর বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া সিদ্ধান্ত গত চারদিনের আলোচনার ফল ৷ আজ সাংবাদিক বৈঠক করে এমনই জানালেন সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় ৷ জানালেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় তাঁকে কাজ করার সুযোগ দেবেন, সেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলেই ফের রাজনীতির মূলস্রোতে ফিরে এলেন ৷ সেই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, ‘‘আমি নিচের স্তরে খেলব না ৷ প্লেয়িং ইলেভেন খেলতে চাই ৷ প্রয়োজনে ছোট দলের হয়ে কাজ করবেন ৷’’ কার্যত স্পষ্ট করে দিলেন, বিজেপিতে তাঁর ক্ষমতা ছাঁটার কারণেই দলত্যাগ ৷ বাবুল জানান, বুধবার দিল্লিতে গিয়ে লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লার সঙ্গে দেখা করে সাংসদ পদে ইস্তফা দেবেন তিনি ৷
শনিবার দুপুরে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় ৷ আর তার সেই যোগদানের পরেই হাজার সমালোচনা এবং ব্যঙ্গ ভেসে এসেছে বাবুলের বিরুদ্ধে ৷ আজ সাংবাদিক বৈঠক করে এবার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন তিনি ৷ সেই সঙ্গে বুঝিয়ে দিলেন, তিনি পিছনের সারির নেতা হয়ে থাকতে চান না ৷ তাই সাধারণ মানুষের হয়ে কাজ করতে তুলনায় ছোট রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি হিসেবে, সামনের সারি থেকে লড়াই করবেন বাবুল ৷ তাই মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গলের তুলনা টেনে বললেন, তাঁকে প্লেয়িং ইলেভেন থেকে বাদ দিয়ে জুনিয়র দলে পাঠানো হয়েছিল ৷ কিন্তু, তিনি প্লেয়িং ইলেভেনে খেলতে চান ৷
আরও পড়ুন : Babul Supriyo : স্বপনের টুইট বাণে কড়া প্রতিক্রিয়া বাবুলের
প্রসঙ্গত, বাংলার বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির পর বাবুল সুপ্রিয়’কে কার্যত কোণঠাসা করে দেওয়া হয়েছিল বিজেপিতে ৷ এমনকি মোদির দ্বিতীয় মন্ত্রিসভার প্রথম রদবদলে বাবুল সুপ্রিয়’কে তাঁর মন্ত্রিত্ব হারাতে হয় ৷ যার পর সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি ৷ যেখানে দিলীপ ঘোষকে সরাসরি আক্রমণ করেছিলেন বাবুল ৷ বিজেপির এই গৃহযুদ্ধ থামাতে মাঠে নেমেছিলেন স্বয়ং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা ৷ তাঁর হস্তক্ষেপে তখনের মতো বাবুলকে রোখা গিয়েছিল ৷ কিন্তু, এবার তিনি আর সাংসদ পদে ইস্তফা দিলেন না ৷ সরাসরি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে এলেন ৷
আরও পড়ুন : Rujira Banerjeee: 30 সেপ্টেম্বর অভিষেকের স্ত্রী রুজিরাকে সমন দিল্লি আদালতের
সেই সঙ্গে বাবুল জানালেন, বিজেপিতে থাকলেও তিনি, কার্যত রাজনৈতিক সন্ন্যাসে চলে গিয়েছিলেন ৷ কিন্তু, বিগত 3-4 দিনে তাঁর সঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমো এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের বিস্তর আলোচনা হয়েছে ৷ তাঁদের সঙ্গে কথা বলে এবং সেই আলোচনায় সন্তুষ্ট হয়েই তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন এবং মূলধারার রাজনীতিতে ফিরে এসেছেন ৷ তবে, তাঁর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে অনুঘটকের কাজ করেছেন তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন ৷ আর সাংবাদিক বৈঠকে যা একাধিকবার বলতে শোনা গেল আসানসোলের সাংসদকে ৷
আরও পড়ুন : Babul Supriyo-Dilip Ghosh : বাবুল সুপ্রিয় পলিটিক্যাল ট্যুরিস্ট, তীব্র কটাক্ষ দিলীপের
প্রসঙ্গত, রাজনীতির নৈতিকতা থেকে তিনি সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেবেন বলেও আজকে জানিয়েছেন ৷ যেখানে তিনি বলেছেন, আগামী বুধবার তিনি দিল্লি যাচ্ছেন ৷ সেখানেই সাংসদ ওম বিড়লার সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চাইবেন ৷ তিনি সময় দিলে, বিজেপির সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেবেন বাবুল ৷ তবে, প্রথমসারির নেতা হিসেবে যে কাজ করতে বাবুলের তৃণমূলে আসা, সেই কাজের কী দায়িত্ব পেলেন বাবুল ? এই প্রশ্নে নব্য তৃণমূল নেতার জবাব, বিষয়টি পুরোটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবেচনাধীন ৷ তিনিই সেই দায়িত্ব ঠিক করে দেবেন ৷