হরিদ্বার, 20 জুন : কুম্ভের মেলার স্মৃতি এখনও দগদগে ৷ দেশে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ত্বরান্বিত হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে কুম্ভ মেলার বিপুল জনস্রোতকেই দায়ী করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা ৷ তীব্র ধ্বংসলীলা চালানোর পর সবে শান্ত হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে সেই ঢেউ ৷ শিগগিরই তৃতীয় ঢেউয়ের আগমনীর বার্তাও আগাম মিলেছে ৷ এরই মধ্যে কোভিডে মৃত্যুমিছিল, অক্সিজেনের সংকটে হাহাকার, সংক্রমণের রেকর্ডের মতো সব ক্ষত বেমালুম ভুলতে শুরু করে দিয়েছে মানুষ ৷ তারই প্রমাণ মিলল উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে ৷ কোভিড বিধি (Covid Restrictions) শিকেয় তুলে সেখানে গঙ্গায় পুণ্যস্নানের ধুম পড়েছে ৷ রবিবার গঙ্গা দশেরা (Ganga Dussehra) উপলক্ষে উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে গঙ্গায় পুণ্যস্নানে (Holy Dip in Ganga) মানুষের ঢল নামল ৷ একই ছবি ধরা পড়েছে উত্তরপ্রদেশের বারাণসী ও ফারুখাবাদ এলাকাতেও ৷
কোভিড বিধিনিষেধকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রবিবাসরীয় সকালে চলল নিয়ম ভাঙার খেলা ৷ অধিকাংশ পুণ্যার্থীর মুখে ছিল না মাস্ক ৷ ছিল না সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার কোনও তাগিদ ৷ হরিদ্বারের হর কি পৌরী ঘাট, ফারুখাবাদের পাঞ্চাল ঘাটে পুণ্যার্থীদের দলে দলে পূণ্যস্নান করতে দেখা গিয়েছে ৷ সার্কেল অফিসার বলেছেন, "আমরা মানুষকে বলেছিলাম, বাড়িতেই পুণ্যস্নান সেরে নিতে ৷ শুধুমাত্র আরটি-পিসিআর নেগেটিভ যাঁরা তাঁদেরই প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে ৷ ঘাটে যাতে কোভিড নিয়ম মেনে চলা হয়, সেই আর্জি জানানো হচ্ছে ৷"
আরও পড়ুন: কোভিড সংকটে মানুষের পাশে ভারত বায়োটেকের চেয়ারম্যান, দান কোভ্যাকসিনের ডোজ
গঙ্গা দশেরা উপলক্ষে উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতেও কোভিড নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলে পুণ্যস্নান ৷ কোভিড প্রোটোকল মেনে চলার জন্য ও বাড়িতেই পুণ্যস্নান সেরে নেওয়ার জন্য মাইকিং করা হয় পুলিশের তরফে ৷ তবে তাতে বিশেষ কাজ হতে দেখা যায়নি ৷ এক পুণ্যার্থীই বললেন, "গঙ্গাস্নানে প্রচুর ভীড় হয়েছে ৷ মানুষ কিছু মানছে না ৷ কোভিড বিধি মানার কোনও বালাই নেই ৷ আমি মাস্ক পরেছি ৷ সবাইকে বলছি, তাঁরা যেন মাস্ক পরেন এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলেন ৷ করোনা ভাইরাস এখনও চলে যায়নি ৷"
জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষের দশমীর দিন গঙ্গা দশেরা পালন করা হয় ৷ হিন্দু শাস্ত্রমতে এই দিনই দেবী গঙ্গা স্বর্গ থেকে মর্ত্যে অবতরণ করেছিলেন ৷
আরও পড়ুন: 81 দিন পর 60 হাজারের নিচে দৈনিক সংক্রমণ
একদিকে যখন নিয়ম ভাঙার প্রচেষ্টা চলেছে, তখনই কোভিড সংক্রমণ হ্রাস পাওয়ায় বিধিনিষেধ আরও শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন ৷ খুলছে শপিং মল, রেস্তরাঁ, দোকান, বাজার ৷ তবে সপ্তাহান্তের লকডাউন বজায় থাকবে বলে জানানো হয়েছে ৷ সপ্তাহের কাজের দিনগুলিতে কার্ফুর সময়সীমা 2 ঘণ্টা কমানো হয়েছে ৷ এখন থেকে রাত 9টা থেকে সকাল 7টা পর্যন্ত কার্ফু জারি থাকবে ৷ তবে সপ্তাহান্তের লকডাউন এখই উঠছে না উত্তরপ্রদেশে ৷ বন্ধই থাকছে সিনেমা হল, স্টেডিয়াম, জিম, সুইমিং পুল, স্কুল, কলেজ, শিক্ষা ও কোচিং প্রতিষ্ঠান ৷
আরও পড়ুন: ভারতে বৈজ্ঞানিক দক্ষতার বড় মাইলফলক কোভ্যাকসিন : কৃষ্ণ এল্লা
শনিবার উত্তরপ্রদেশে কোভিডে মৃত্যু হয়েছে 51 জনের ৷ এর ফলে কোভিডের কারণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে 22,132 জন ৷ শনিবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন আরও 294 জন ৷ এর ফলে রাজ্যে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে 17,04,139 ৷