ETV Bharat / bharat

77th Independence Day: লালকেল্লায় যার উপর ভর করে ওড়ে তেরঙা , জেনে নিন সেই দড়ির ইতিহাস - স্বাধীনতা দিবস

Rope Used to Hoist Flag at Red Fort: স্বাধীনতা দিবসের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ' হর ঘর তিরঙ্গা 'বার্তা দিয়েছেন । জানেন কি লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনে ব্যবহৃত সেই দড়ির ইতিহাস । যে ইতিহাসে ভর করেই ওড়ে গর্বের তেরঙা ।

Rope Used to Hoist Flag at Red Fort
তেরঙায় ব্যবহৃত দড়ি
author img

By

Published : Aug 13, 2023, 3:11 PM IST

নয়াদিল্লি, 13 অগস্ট: 15 অগস্ট 77তম স্বাধীনতা দিবস পালন করবে দেশবাসী । ঐতিহ্য মেনেই প্রধানমন্ত্রী লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন । যে দড়ির উপর ভর করে লালকেল্লায় উড়বে জাতীয় পতাকা, জানেন কি সেই দড়ি কোথা থেকে আসে? এই দড়ির পিছনে একটি মজার গল্প আছে । জেনে নিন এই প্রতিবেদনে ৷

বিনামূল্যে তেরঙার দড়ি সরবরাহ: জাতীয় পতাকা উত্তোলনে ব্যবহৃত দড়ির জন্য কোনও টাকা নেওয়া হয় না ৷ আর এই দড়ি সরবরাহ করে গোর্খি মল ধনপত রায় জৈন ফার্ম । সদর বাজার, কুতুব রোড, তেলিওয়াড়ায় এই ফার্মের প্রতিষ্ঠান রয়েছে । 1911 সালে পঞ্চম জর্জ ভারতে এলে কিংসওয়ে ক্যাম্পে দিল্লি দরবার অনুষ্ঠিত হয় । এরপর থেকে এই প্রতিষ্ঠানটি চলছে । ফার্মের মালিক নরেশ চাঁদ জৈন ইটিভি ভারতের সামনে দড়ি সংক্রান্ত ঐতিহাসিক বিষয়গুলিকে তুলে ধরেন । তিনি জানান, 1947 সাল থেকে স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এবং 1950 সাল থেকে প্রজাতন্ত্র দিবসে রাষ্ট্রপতির কাছে দড়ি পাঠানো হচ্ছে তাদের ফার্ম থেকে । তবে এই দড়ি কী দিয়ে তৈরি হয় নিরাপত্তার কারণে তা প্রকাশ করা হয়নি ৷

প্রথম বিনামূল্যে দড়ি পাঠানো হয়: নরেশ জৈন জানান যে 2001 সালে প্রথমবার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিনামূল্যে তাঁদের ফার্ম থেকে দড়ি দেওয়া হয়েছিল । তখন অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ৷ সেই থেকেই শুরু ৷ এরপর থেকে দেশের প্রত্যেক প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিকে বিনামূল্যে তেরঙা উত্তোলনের জন্য দড়ি পাঠাচ্ছেন তাঁরা । জানা গিয়েছে, আর পাঁচটা দড়ির মতো এটি নয় ৷ এই দড়ি তৈরিতে বিশেষ যত্ন নেওয়া হয় ৷ যা প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিকে বিনামূল্যে উপহার দেওয়া হয় ফার্মের তরফে ।

আরও পড়ুন: 'হর ঘর তিরঙ্গা'র প্রচারে অংশ নিতে দেশবাসীর কাছে আবেদন মোদির

দড়ি ফেরত পাঠানো জাতীয় ঐতিহ্য: নরেশ জৈন বলেন, "যেহেতু বিনামূল্য এই দড়ি দেওয়া হয় তাই সরকার দড়ি আবার ফেরত দিয়ে দেয় । এটিও একটি জাতীয় ঐতিহ্য ৷ দড়িটিকে আমরা খুব যত্ন সহকারে রাখি । এই দড়িগুলো সরকার খুব সুন্দর করে প্যাক করে ফেরত পাঠায় । এর প্যাকিংয়ের উপরে সরকারি সীলমোহর এবং শংসাপত্র-সহ উপহার দেওয়া ব্যক্তির নাম এবং বছর লেখা থাকে । দড়ির পরিবর্তে অনুষ্ঠানের আয়োজক সেনাবাহিনী প্রশংসাপত্রও দেয় ।"

দড়ির সঙ্গে আবেগ জড়িত: নরেশ জানান, এই দড়ির সঙ্গে আবেগ জড়িয়ে রয়েছে । দেশের জন্য কিছু করার অনুভূতি আছে । 2001 সালের আগে ওই সময় অনুযায়ী দড়ির মূল্য নির্ধারণ করে সরকারের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হত । এখন তা বিনামূল্যে পাঠানো হয় ৷ তবে সেনা জওয়ানরা তাঁর কাছ থেকে দড়ি নিয়ে যান । এই দড়ি যেতে এবং আসতে প্রায় 2 মাস সময় লাগে । একই সঙ্গে বায়ুসেনার পক্ষ থেকে দড়ি তৈরির ফার্মকে অনেক ধরনের উপহার দেওয়া হয়েছে । দিল্লির বেশিরভাগ সরকারি প্রতিষ্ঠানে তেরঙা উত্তোলনের জন্য এই ফার্মের দড়ি ব্যবহার করা হয় । দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের কাছেও বিনামূল্যে দড়ি পাঠানো হয় । এর পাশাপাশি সরকারি স্কুল, অফিস ও সাধারণ মানুষকেও দড়ি সরবরাহ করা হয় এই ফার্ম থেকে ।

আরও পড়ুন: অনলাইন বা অফলাইন, দু'ভাবেই পাবেন জাতীয় পতাকা; সৌজন্যে ভারতীয় ডাক বিভাগ

অগস্টে দড়ির চাহিদা বাড়ে: ফার্মের মালিক জানান, আগে দড়ির খাটের চাহিদা ছিল ৷ তবে এখন বাজারে কাঠের খাট পাওয়া যায় । এখন তাই আর কেউ দড়ির খাট কিনতে চায় না । ধীরে ধীরে দড়ির বদলে অন্য সামগ্রী দিয়ে তৈরি জিনিস ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে ৷ ফলে দড়ির উপযোগিতা ও চাহিদা কমছে । কিন্তু আজও আখড়ায়, নির্মাণ কাজে, সেনাবাহিনীতে দড়ির চাহিদা রয়েছে । তিনি বলেন, "দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন থেকে 'হর ঘর তিরঙ্গা' প্রচার শুরু করেছেন ৷ তখন থেকে অগস্ট মাসে দড়ির চাহিদা বেড়েছে ।"

দড়ির উপর কর: নরেশ জৈন জানান যে 1995 সালে দিল্লিতে কংগ্রেস সরকার ছিল । সেসময় দড়িকে বিক্রয় করের বাইরে রাখা হয়েছিল । তবে তার আগে সাত শতাংশ কর ধার্য ছিল দড়িতে । এখন জিএসটি আরোপ করা হচ্ছে । পাটের দড়িতে 5 শতাংশ জিএসটি এবং পলিপ্রোপিলিন দড়িতে (প্লাস্টিক) 12 শতাংশ জিএসটি লাগু হয়েছে ৷ পরিবহণের ক্ষেত্রেও দড়ি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হত । তবে এখন বেশিরভাগ ট্রাকই ঢাকা । তাই দড়ির ব্যবহার কমেছে । বর্তমানে মিলিটারি, আখড়া, কুয়ো, কাপড় শুকানো, তাঁবু-প্যান্ডেল ও ডেইরিতে গরু-মহিষ বাঁধতে দড়ি ব্যবহার করা হয় ।

আরও পড়ুন: অনাদরে পড়ে আছে বিপ্লবীর নামফলক, হারিয়ে যাচ্ছে 'হান্টারওয়ালি' বিমলপ্রতিভা দেবীর ইতিহাস

দড়ি কী দিয়ে তৈরি? নারকেল, পলিপ্রোপিলিন এবং তুলা ইত্যাদি বিভিন্ন জিনিস দিয়ে দড়ি তৈরি করা হয় । নারকেলের দড়ি বেশিরভাগই তৈরি হয় রাজস্থানের মুঞ্জে, উত্তরপ্রদেশের ভাবাদে এবং ওড়িশা ও কেরলে । সিসাল এবং লিনেন দড়ি সবচেয়ে শক্তিশালী বলে মনে করা হয় । এখন সেগুলির দাম অনেকটাই বেশি ৷

নয়াদিল্লি, 13 অগস্ট: 15 অগস্ট 77তম স্বাধীনতা দিবস পালন করবে দেশবাসী । ঐতিহ্য মেনেই প্রধানমন্ত্রী লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন । যে দড়ির উপর ভর করে লালকেল্লায় উড়বে জাতীয় পতাকা, জানেন কি সেই দড়ি কোথা থেকে আসে? এই দড়ির পিছনে একটি মজার গল্প আছে । জেনে নিন এই প্রতিবেদনে ৷

বিনামূল্যে তেরঙার দড়ি সরবরাহ: জাতীয় পতাকা উত্তোলনে ব্যবহৃত দড়ির জন্য কোনও টাকা নেওয়া হয় না ৷ আর এই দড়ি সরবরাহ করে গোর্খি মল ধনপত রায় জৈন ফার্ম । সদর বাজার, কুতুব রোড, তেলিওয়াড়ায় এই ফার্মের প্রতিষ্ঠান রয়েছে । 1911 সালে পঞ্চম জর্জ ভারতে এলে কিংসওয়ে ক্যাম্পে দিল্লি দরবার অনুষ্ঠিত হয় । এরপর থেকে এই প্রতিষ্ঠানটি চলছে । ফার্মের মালিক নরেশ চাঁদ জৈন ইটিভি ভারতের সামনে দড়ি সংক্রান্ত ঐতিহাসিক বিষয়গুলিকে তুলে ধরেন । তিনি জানান, 1947 সাল থেকে স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এবং 1950 সাল থেকে প্রজাতন্ত্র দিবসে রাষ্ট্রপতির কাছে দড়ি পাঠানো হচ্ছে তাদের ফার্ম থেকে । তবে এই দড়ি কী দিয়ে তৈরি হয় নিরাপত্তার কারণে তা প্রকাশ করা হয়নি ৷

প্রথম বিনামূল্যে দড়ি পাঠানো হয়: নরেশ জৈন জানান যে 2001 সালে প্রথমবার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিনামূল্যে তাঁদের ফার্ম থেকে দড়ি দেওয়া হয়েছিল । তখন অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ৷ সেই থেকেই শুরু ৷ এরপর থেকে দেশের প্রত্যেক প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিকে বিনামূল্যে তেরঙা উত্তোলনের জন্য দড়ি পাঠাচ্ছেন তাঁরা । জানা গিয়েছে, আর পাঁচটা দড়ির মতো এটি নয় ৷ এই দড়ি তৈরিতে বিশেষ যত্ন নেওয়া হয় ৷ যা প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিকে বিনামূল্যে উপহার দেওয়া হয় ফার্মের তরফে ।

আরও পড়ুন: 'হর ঘর তিরঙ্গা'র প্রচারে অংশ নিতে দেশবাসীর কাছে আবেদন মোদির

দড়ি ফেরত পাঠানো জাতীয় ঐতিহ্য: নরেশ জৈন বলেন, "যেহেতু বিনামূল্য এই দড়ি দেওয়া হয় তাই সরকার দড়ি আবার ফেরত দিয়ে দেয় । এটিও একটি জাতীয় ঐতিহ্য ৷ দড়িটিকে আমরা খুব যত্ন সহকারে রাখি । এই দড়িগুলো সরকার খুব সুন্দর করে প্যাক করে ফেরত পাঠায় । এর প্যাকিংয়ের উপরে সরকারি সীলমোহর এবং শংসাপত্র-সহ উপহার দেওয়া ব্যক্তির নাম এবং বছর লেখা থাকে । দড়ির পরিবর্তে অনুষ্ঠানের আয়োজক সেনাবাহিনী প্রশংসাপত্রও দেয় ।"

দড়ির সঙ্গে আবেগ জড়িত: নরেশ জানান, এই দড়ির সঙ্গে আবেগ জড়িয়ে রয়েছে । দেশের জন্য কিছু করার অনুভূতি আছে । 2001 সালের আগে ওই সময় অনুযায়ী দড়ির মূল্য নির্ধারণ করে সরকারের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হত । এখন তা বিনামূল্যে পাঠানো হয় ৷ তবে সেনা জওয়ানরা তাঁর কাছ থেকে দড়ি নিয়ে যান । এই দড়ি যেতে এবং আসতে প্রায় 2 মাস সময় লাগে । একই সঙ্গে বায়ুসেনার পক্ষ থেকে দড়ি তৈরির ফার্মকে অনেক ধরনের উপহার দেওয়া হয়েছে । দিল্লির বেশিরভাগ সরকারি প্রতিষ্ঠানে তেরঙা উত্তোলনের জন্য এই ফার্মের দড়ি ব্যবহার করা হয় । দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের কাছেও বিনামূল্যে দড়ি পাঠানো হয় । এর পাশাপাশি সরকারি স্কুল, অফিস ও সাধারণ মানুষকেও দড়ি সরবরাহ করা হয় এই ফার্ম থেকে ।

আরও পড়ুন: অনলাইন বা অফলাইন, দু'ভাবেই পাবেন জাতীয় পতাকা; সৌজন্যে ভারতীয় ডাক বিভাগ

অগস্টে দড়ির চাহিদা বাড়ে: ফার্মের মালিক জানান, আগে দড়ির খাটের চাহিদা ছিল ৷ তবে এখন বাজারে কাঠের খাট পাওয়া যায় । এখন তাই আর কেউ দড়ির খাট কিনতে চায় না । ধীরে ধীরে দড়ির বদলে অন্য সামগ্রী দিয়ে তৈরি জিনিস ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে ৷ ফলে দড়ির উপযোগিতা ও চাহিদা কমছে । কিন্তু আজও আখড়ায়, নির্মাণ কাজে, সেনাবাহিনীতে দড়ির চাহিদা রয়েছে । তিনি বলেন, "দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন থেকে 'হর ঘর তিরঙ্গা' প্রচার শুরু করেছেন ৷ তখন থেকে অগস্ট মাসে দড়ির চাহিদা বেড়েছে ।"

দড়ির উপর কর: নরেশ জৈন জানান যে 1995 সালে দিল্লিতে কংগ্রেস সরকার ছিল । সেসময় দড়িকে বিক্রয় করের বাইরে রাখা হয়েছিল । তবে তার আগে সাত শতাংশ কর ধার্য ছিল দড়িতে । এখন জিএসটি আরোপ করা হচ্ছে । পাটের দড়িতে 5 শতাংশ জিএসটি এবং পলিপ্রোপিলিন দড়িতে (প্লাস্টিক) 12 শতাংশ জিএসটি লাগু হয়েছে ৷ পরিবহণের ক্ষেত্রেও দড়ি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হত । তবে এখন বেশিরভাগ ট্রাকই ঢাকা । তাই দড়ির ব্যবহার কমেছে । বর্তমানে মিলিটারি, আখড়া, কুয়ো, কাপড় শুকানো, তাঁবু-প্যান্ডেল ও ডেইরিতে গরু-মহিষ বাঁধতে দড়ি ব্যবহার করা হয় ।

আরও পড়ুন: অনাদরে পড়ে আছে বিপ্লবীর নামফলক, হারিয়ে যাচ্ছে 'হান্টারওয়ালি' বিমলপ্রতিভা দেবীর ইতিহাস

দড়ি কী দিয়ে তৈরি? নারকেল, পলিপ্রোপিলিন এবং তুলা ইত্যাদি বিভিন্ন জিনিস দিয়ে দড়ি তৈরি করা হয় । নারকেলের দড়ি বেশিরভাগই তৈরি হয় রাজস্থানের মুঞ্জে, উত্তরপ্রদেশের ভাবাদে এবং ওড়িশা ও কেরলে । সিসাল এবং লিনেন দড়ি সবচেয়ে শক্তিশালী বলে মনে করা হয় । এখন সেগুলির দাম অনেকটাই বেশি ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.