লন্ডন, 15 ডিসেম্বর: লন্ডনের (London) হাইকোর্টে (High Court of Justice) বড় ধাক্কা খেলেন ভারতের পলাতক হীরক ব্যবসায়ী (Fugitive Diamond Merchant) নীরব মোদি (Nirav Modi) ৷ তাঁকে যাতে ভারত সরকারের হাতে তুলে না দেওয়া হয়, তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট প্রত্যর্পণ (Extradition) প্রক্রিয়ায় বিরুদ্ধে ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্টে (UK Supreme Court) মামলা রুজু করার অনুমতি চেয়েছিলেন নীরব ৷ কিন্তু, বৃহস্পতিবার তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দেয় লন্ডনের হাইকোর্ট ৷ ফলে এই বিষয়ে পরবর্তী পর্যায়ের আইনি লড়াই লড়া নীরবের পক্ষে একপ্রকার অসম্ভব হয়ে পড়ল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল ৷
এদিন লন্ডনের রয়্যাল কোর্টস অফ জাস্টিসের (Royal Courts of Justice) তরফে এই প্রসঙ্গে একটি রায় দেওয়া হয় ৷ তাতে লর্ড জাস্টিস জেরেমি স্টুয়ার্ট স্মিথ এবং জাস্টিস রবার্ট জয় বলেন, "আবেদনকারী নীরব মোদি সুপ্রিম কোর্টে মামলা রুজু করার অনুমতি চেয়েছেন ৷ কিন্তু, আদালতের পক্ষ থেকে তাঁর সেই আবেদন খারিজ করা হল ৷"
আরও পড়ুন: আত্মহত্যার ঝুঁকি প্রত্যর্পণে বাধা হতে পারে না, নীরব মোদির আবেদন খারিজ ব্রিটেনের আদালতে
প্রত্যর্পণ এড়াতে এর আগেও আইনি সুরক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করেছেন নীরব ৷ সম্প্রতি তাঁর আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, তাঁকে যদি ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়, তাহলে পরিস্থিতি এতটাই প্রতিকূল হয়ে উঠবে যে নীরব মোদিকে হয়তো আত্মহত্য়া করতে হবে ! সেই মামলার শুনানিও এই একই বেঞ্চে হয়েছিল ৷ এই দুই বিচারপতি সেই সময় তাঁদের পর্যবেক্ষণে বলেছিলেন, নীর মোদির বিরুদ্ধে প্রায় 200 কোটি মার্কিন ডলারের আর্থিক তছরুপের অভিযোগ রয়েছে ৷ তাই তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ হওয়া জরুরি ৷ সেক্ষেত্রে, তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন, এই আশঙ্কা কখনই এতটা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে না যে তাঁর প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া আটকে দেওয়া হবে ! নীরবের আইনজীবী সেই সময় তাঁর মক্কেলের মানসিক অবস্থা সম্পর্কেও আদালতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন ৷ কিন্তু, বিচারপতিরা সেই উদ্বেগকেও বিশেষ পাত্তা দেননি ৷
তবে, ব্রিটেনের আদালতে নীরব মোদিকে নিয়ে একের পর এক মামলা চললেও তিনি কিন্তু মুক্তি পাননি ৷ দীর্ঘ সময় ধরে কারাগারেই বন্দি রয়েছেন তিনি ৷ আপাতত লন্ডনের ওয়ান্ডসওয়ার্থ বন্দিশালাই (Wandsworth Prison) তাঁর ঠিকানা ৷ ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, নীরব মোদিকে কবে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে, তার উত্তর হয়তো এখনই পাওয়া মুশকিল ৷ কিন্তু, তিনি যে সহজে কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন না, সেটা ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে ৷ প্রসঙ্গত, 2019 সালের মার্চ মাসে নীরব মোদির বিরুদ্ধে প্রত্যর্পণ সমন জারি করা হয় ৷ তারপরই গ্রেফতার হন তিনি ৷ তখন থেকে জেলেই দিন কাটছে কোটিপতি এই প্রতারকের ৷