নয়াদিল্লি, 16 জুলাই : গরম আবহাওয়াতেও ভাল থাকবে এমন করোনার ভ্যাকসিন তৈরি করেছে বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউ অফ সায়েন্স ৷ ভ্যাকসিনটি বর্তমানে পশুদের উপর প্রয়োগ করা হয়েছে ৷ সেই প্রয়োগের গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সার্স-কোভ-2-র যতগুলি ভ্য়ারিয়েন্ট রয়েছে, সেই সবক’টি বিরুদ্ধে এই ভ্যাকসিন কার্যকর ৷ বৃহস্পতিবার এসিএস ইনফেকশিয়াস ডিজিস নামে এক জার্নালে এই গবেষণাটি প্রকাশ করা হয়েছে ৷ জার্নালটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, আইআইএসসি-র তৈরি ‘মাইনভ্যাকস’ (Mynvax) ভ্যাকসিনের ফর্মুলেশন গবেষণায় ব্যবহার করা ইঁদুরের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলছে ৷
তবে, শুধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো নয়, ভ্যাকসিনটি গবেষণায় ব্যবহার হওয়া ইঁদুরগুলিকে করোনা ভাইরাসের থেকেও রক্ষা করছে ৷ সেই সঙ্গে 37 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেও ভ্যাকসিনটি 1 মাস ভাল থাকছে এবং 100 ডিগ্রি তাপমাত্রায় সেটি 90 মিনিট কার্যকরী অবস্থায় থাকছে ৷ ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউ অফ সায়েন্সের বিজ্ঞানী এবং অস্ট্রেলিয়ার কমনওয়েলথ সায়েন্টেফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ অর্গানাইজেশনের গবেষকরা জানিয়েছেন, করোনার বেশিরভাগ ভ্য়াকসিনকে কার্যকরী রাখতে হলে, ঠান্ডা জায়গায় সংরক্ষণ করা বাধ্যতামূলক ৷ সেখানে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউ অফ সায়েন্সের তৈরি ভ্যাকসিন গরমেও কার্যকরী প্রমাণিত হচ্ছে ৷
উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি ভ্যাকসিন, যা ভারতে কোভিশিল্ড নামে পরিচিত, সেই ভ্যাকসিনটিকে কার্যকর অবস্থায় রাখতে হলে, 2-8 ডিগ্রি তাপমাত্রার মধ্যে সংরক্ষণ করতে হবে ৷ অন্যদিকে, ফাইজারের তৈরি ভ্যাকসিনকে মাইনাস সত্তর ডিগ্রি সেলসিয়াসে সংরক্ষণ করা বাধ্যতামূলক ৷ গবেষকরা ভ্যাকসিনেটেড ইঁদুরগুলির রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে ৷ যেখানে দেখা হয়েছে করোনা ভাইরাসের প্রধান যে ভ্যারিয়েন্টগুলি রয়েছে তার বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন কতটা কার্যকরী ৷ ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রেও ওই নমুনাগুলিকে পরীক্ষা করা হয় ৷ কারণ, করোনার এই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বর্তমানে গোটা বিশ্বে খুব দ্রুততার সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে ৷
আরও পড়ুন : ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে কোভিশিল্ডের ছাড়পত্রের আবেদন করেনি সেরাম
কমনওয়েলথ সায়েন্টেফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ অর্গানাইজেশনের কোভিড-19 গবেষণার নেতৃত্বে থাকা গবেষক এস এস ভাসান জানিয়েছেন, ‘মাইনভ্যাকস’ ভ্যাকসিনেটেড ইঁদুরের রক্তের নমুনা করোনার সবধরণের জীবিত ভাইরাসের বিরুদ্ধে সমানভাবে কার্যকর ৷ ভাসান বলেন, ‘‘আমাদের গবেষণার সব তথ্য বলছে, মাইনভ্য়াকসের ফর্মুলেশনে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি আলফা, বেটা, গামা এবং ডেলটা সবধরনের সার্স-কোভ-2 ভাইরাসকে ধারাবাহিকতার সঙ্গে নষ্ট করতে সক্ষম ৷’’
আরও পড়ুন : PM Modi: কোভিড বৃদ্ধি রুখতে 6 রাজ্যকে 4 দাওয়াই মোদির
গবেষণায় বলা হয়েছে, মাইনভ্য়াকস করোনার ভাইরাল স্পাইক প্রোটিনের অংশে গিয়ে লড়াই করে ৷ যে স্পাইক প্রোটিনের মাধ্যমে মানুষের শরীরের কোষের মধ্যে করোনার ভাইরাস নিজের বিস্তার ঘটায় ৷ অস্ট্রেলিয়ার কমনওয়েলথ সায়েন্টেফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ অর্গানাইজেশনের আবিস্কার করা মাইনভ্যাকসের এই ভিন্নধরনের ফর্মুলেশন মানব শরীরে এর গবেষণার ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে ৷