চণ্ডীগড়, 24 ডিসেম্বর: বোর্ড পরীক্ষার (Board Exams) জন্য দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি নিতে হবে ৷ তাই সাতসকালে তাদের ঘুম থেকে তোলার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিল হরিয়ানা সরকার (Haryana Government) ! রাজ্যের তরফে স্থির করা হয়েছে, ঘুমকাতুরে পড়ুয়াদের জাগাতে প্রকাশ্যে ঘোষণা করা হবে লাউডস্পিকারে (Loudspeakers) !
এই কাজের জন্য ইতিমধ্যেই রাজ্যের গুরুদ্বার, মন্দির এবং মসজিদগুলিতে লাউডস্পিকার লাগানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া হয়েছে ৷ সরকারের দাবি, পরীক্ষার্থীদের জন্য এভাবেই নয়া 'অ্যালার্ম ক্লক'-এর বন্দোবস্ত করবে তারা ! প্রসঙ্গত, বিজেপিশাসিত এই রাজ্যে দশম ও দ্বাদশের বোর্ড পরীক্ষা আসন্ন ৷ তার ঠিক আগেই এই পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার ৷
আরও পড়ুন: বিহারিবাবুর গলায় মালা দিলেন ওলন্দাজ কন্যে
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট মন্দির, মসজিদ এবং গুরুদ্বার কর্তৃপক্ষকে লাউডস্পিকার চালানোর বিষয়ে বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ বিদেশ নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে স্কুলগুলিকেও ৷ তাতে বলা হয়েছে, পরীক্ষার আগে হাতে আর 70 দিনও নেই ৷ এর মধ্যেই পরীক্ষার্থীদের এমনভাবে প্রস্তুত করতে হবে, যাতে তাদের পরীক্ষার ফল খুব ভালো হয় ! পরীক্ষার্থীদের তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করে প্রয়োজনীয় পাঠ ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য ৷
কীভাবে হবে এই শ্রেণিবিন্যাস ? তার নির্দেশিকাও দেওয়া হয়েছে রাজ্যের তরফে ৷ বলা হয়েছে, যারা ইতিমধ্যেই পরীক্ষায় খুব ভালো ফল করেছে, তারা থাকবে প্রথম শ্রেণিতে ৷ দ্বিতীয় শ্রেণিতে থাকবে তারা, যারা 50 শতাংশ বা তার আশপাশে নম্বর পেয়েছে ৷ এবং তৃতীয় শ্রেণিতে সেই পরীক্ষার্থীদের জায়গা দেওয়া হবে, যারা কোনও মতে 35 শতাংশ নম্বর পেয়ে পাস করে গিয়েছে ৷ এর পাশাপাশি, পরীক্ষার্থীদের দৈনিক, সাপ্তাহিক এবং 15 দিন অন্তর আলাদা আলাদাভাবে পরীক্ষা নিতে হবে ৷
তবে, রাজ্যের এই অতিতৎপরতা নিয়েও নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে ৷ কারণ, সমস্ত পড়ুয়াদের পড়ার ধরন সমান নয় ৷ কেউ ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে পড়াশোনা করে, কেউ বা পড়ে রাত জেগে ৷ তাছাড়া, সারারাজ্যের সব মানুষ তো আর পরীক্ষা দিচ্ছেন না ৷ বহু গুরুতর অসুস্থ মানুষ রয়েছেন । তাছাড়া এমনও অনেকেই আছেন যাঁদের একটানা নাইট ডিউটি করতে হয় ৷ এইসব মানুষের সকালে ঘুমোনো দরকার ৷ সেখানে সরকার কি এভাবে পরীক্ষার দোহাই দিয়ে সাতসকালে লাউডস্পিকার চালাতে পারে ? তাহলে কি কোনও পরীক্ষার্থী ভালো ফল করলে এবার তার কৃতিত্বও নেবে রাজ্য সরকার ? এর থেকে যদি প্রত্যেকটি সরকারি স্কুলের পরিকাঠামো আধুনিক করা হয়, বিশেষ করে করোনা যখন আবারও ফিরে আসার হুঁশিয়ারি দিচ্ছে, তখন কি প্রত্যেক পড়ুয়ার জন্য অত্যাধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করাই রাজ্যের প্রধান কর্তব্য নয় ? আপাতত এইসব প্রশ্নের উত্তর মেলেনি ৷