নয়াদিল্লি, 19 জুলাই : ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য দায়ী ডেল্টা ভ্যারিয়্যান্ট ৷ 80 শতাংশ রোগী নতুন এই ভ্যারিয়্যান্টে আক্রান্ত হয়েছেন ৷ সোমবার এই কথা জানালেন ভারতে করোনা সংক্রান্ত জেনোমিক্স কনসোর্টিয়ামের সহযোগী চেয়্যারম্যান ড. এন কে অরোরা ৷ একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন যে নতুন কোনও ভ্যারিয়্যান্ট এলে, তা আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে ৷
ডেল্টা ভ্যারিয়্যান্ট করোনার আলফা ভ্যারিয়্যান্টের চেয়ে 40-60 শতাংশ বেশি সংক্রামক ৷ আর এই ভ্যারিয়্যান্ট ছড়িয়ে পড়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, সিঙ্গাপুর-সহ বিশ্বের 80টি দেশে ৷
আরও পড়ুন : Corona Lockdown : লকডাউনে বন্ধ উৎসব-অনুষ্ঠান, প্রবল সমস্যায় ছোট ব্যবসায়ীরা
ড. অরোরা জানিয়েছেন, ডেল্টা প্লাসের দু’টি ভ্যারিয়্যান্টের সংক্রমণ দেশের 11টি রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে ৷ এখনও পর্যন্ত 50-60 জন আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে ৷ 11টি রাজ্যের তালিকায় মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু ও মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্য রয়েছে ৷ এই ভ্যারিয়্যান্টের চরিত্র সম্পর্কে গবেষণা চলছে ৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বিবৃতির প্রেক্ষিতে তিনি এই মন্তব্য করেছেন ৷ ড. অরোরা জানালেন, ডেল্টা ভ্যারিয়্যান্টে স্পাইক প্রোটিন রয়েছে ৷ যা কোষের ত্বকে আরও মজবুত ভাবে থাকতে পারে ৷ আর এটা আরও বেশি সংক্রামক ৷ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর আঘাতও অনেক বেশি করতে পারে ৷
উল্লেখ্য, ডেল্টা ভ্যারিয়্যান্ট প্রথমবার ভারতেই চিহ্নিত হয় ৷ সেটা ছিল গত বছরের অক্টোবর ৷ মহারাষ্ট্রে প্রথমবার এই ভ্যারিয়্যান্ট সামনে এসেছিল ৷ পরে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের দিকে ছড়িয়ে পড়ে ৷ তার পর তা ধীরে ধীরে মধ্য ভারত হয়ে পূর্বদিকে সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করে ৷
আরও পড়ুন : বকখালি ও ফ্রেজারগঞ্জে বাধ্যতামূলক দু'টি টিকার শংসাপত্র ও করোনা পরীক্ষা
ড. অরোরা জানিয়েছেন যে এই ভ্যারিয়্যান্ট মানুষের শরীরের কোষের ক্ষতি করে ৷ দ্রুত নিজেদের সংখ্যা বৃদ্ধি করে ৷ ফুসফুসের উপর গভীর প্রভাব ফেলে ৷ তবে এর জেরে যে রোগগুলি হচ্ছে, তা খুবই ক্ষতিকর, তা বলা শক্ত বলে ড. অরোরার মত ৷ কিন্তু যে বয়সের লোকেরা দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৷ আর যা মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ৷ তা প্রথম দফার করোনা সংক্রমণের সঙ্গে অনেকটা একই রকম বলে তিনি জানান ৷
চলতি বছরের মার্চের শেষ থেকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব ক্রমশ দেশজুড়ে বাড়তে শুরু করে ৷ এখন পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে ৷ দেশের অধিকাংশ জায়গায় করোনার সংক্রমণ অনেকটাই কমে গিয়েছে ৷ তবে দেশের উত্তর-পূর্ব অংশ ও দক্ষিণের কিছু জেলায় সংক্রমণের হার অনেকটাই বেশি ৷ এটা করোনার করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়্যান্টের প্রভাবেই হচ্ছে বলে মত ড. অরোরার ৷
আরও পড়ুন : Corona in India : সামান্য কমল দৈনিক সংক্রমণ, কমল মৃত্যুও
দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব থেকে দেশ এখনও পুরোপুরি মুক্ত হয়নি ৷ তার উপর তৃতীয় ঢেউ আসার সম্ভাবনা রয়েছে ৷ এই পরিস্থিতিতে রক্ষা পাওয়ার জন্য করোনার টিকা নেওয়াই একমাত্র উপায় বলে মনে করছেন ড. অরোরা ৷ কারণ, তাহলে কিছুটা হলেও সুরক্ষিত থাকা যাবে ৷ তার সঙ্গে সকলকে করোনাবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি ৷