সোলাপুর (মহারাষ্ট্র), 9 অগস্ট: প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্ক মেনে নিচ্ছেন না বাবা ৷ তাই ভাড়াটে গুন্ডা দিয়ে বাবাকে মেরে হাত-পা ভাঙার জন্য 'সুপারি' দেওয়ার অভিযোগ যুবতীর বিরুদ্ধে ৷ ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের সোলাপুরের ওয়াড়াচি ওয়াড়িতে ৷ ঘটনায় আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মহেন্দ্র শাহ নামে ওই ব্যক্তি ৷ পুলিশ মূল অভিযুক্ত সাক্ষী শাহ এবং তাঁর প্রেমিক চৈতন্য ও বাকি চার দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে ৷ পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত সাক্ষী প্রথমে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছিল ৷ কিন্তু, ঘটনাস্থলে তদন্তে গিয়ে সাক্ষীর বয়ানের সঙ্গে বিস্তর ফারাক পায় পুলিশ ৷ এর পরেই তাকে পালটা জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে, সে সব স্বীকার করে বলে জানিয়েছে পুলিশ ৷
পুলিশ সূত্রে খবর, পেশায় ব্যবসায়ী মহেন্দ্র শাহ মাড তালুকের বাসিন্দা ৷ তাঁর একমাত্র মেয়ে সাক্ষী শাহ চৈতন্য নামে এক যুবকের সঙ্গে প্রেম করে ৷ কিন্তু, তাদের সম্পর্কে আপত্তি জানান মহেন্দ্র শাহ ৷ চৈতন্যের সঙ্গে তার বিয়ে দিতে রাজি করাতে না-পেরে, এক ভয়াবহ পরিকল্পনা ফাঁদে সাক্ষী ৷ যে পরিকল্পনায় তার সঙ্গে চৈতন্য জড়িত ছিল ৷ সাক্ষী 15 হাজার টাকা করে মোট 60 হাজার টাকায় 4 জন দুষ্কৃতীকে ভাড়া করেন ৷ সম্প্রতি সাক্ষী পুণেতে ছিলেন ৷ সেখান থেকে মেয়েকে মাডের বাড়িতে নিয়ে আসতে যান মহেন্দ্র ৷
পুলিশ জানিয়েছে, ফেরার সময় শ্বেতফল এবং মাডের মাঝে ওয়াড়াচি ওয়াড়ি নামে একটি শুনসান এলাকায় গাড়ি থামাতে বলে সাক্ষী ৷ তিনি মহেন্দ্রকে জানান, শৌচালয়ে যাবেন ৷ কিছুক্ষণ পর একটি জায়গায় গাড়ি থামান মহেন্দ্র ৷ সেখানে গাড়ি থেকে নামতেই পিছন থেকে দু’টি বাইকে 4 জন এসে মারধর শুরু করেন তাঁকে ৷ অভিযোগ ওই 4 জনের মধ্যে একজন মহেন্দ্রের মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করেন ৷ ফলে সেখানেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন তিনি ৷ অন্যদিকে, তাঁর মেয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে চিৎকার করছিলেন ৷
আরও পড়ুন: বিবাহিত তবু ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সাজা, শিক্ষককে পাশবিক মারধরের ভিডিয়ো ভাইরাল
সেই চিৎকারেই বেশকিছু দূর থেকে লোকজন ছুটে আসেন ৷ কিন্তু, ততক্ষণে মহেন্দ্র শাহকে ওই 4 জন গুরুতরভাবে জখম করে পালিয়ে যায় ৷ জানা গিয়েছে, ওয়াড়াচি ওয়াড়ির উপ-প্রধান বাপু কালে এবং রাম চরণ ডোংরে ঘটনাস্থলে পৌঁছন ৷ তাঁরাই মহেন্দ্র শাহকে হাসপাতালে ভরতি করান এবং পুলিশে খবর দেন ৷ পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ৷ সেখানে সাক্ষী পুলিশকে জানান, এই ঘটনারর পুরো পরিকল্পনা তার প্রেমিক চৈতন্য করেছেন ৷ তিনি কিছু জানতেন না ৷ কিন্তু, ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করতেই পুলিশের সন্দেহ হয় ৷ সাক্ষীর কথার সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিস্তর ফারাক দেখতে পান তদন্তকারীরা ৷
এমনকি চৈতন্যকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে, তিনিও সাক্ষীর বিরুদ্ধেই পুরো পরিকল্পনা তৈরির অভিযোগ করেন ৷ এর পর সাক্ষীকে আটক করে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনায় তার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন সাক্ষী শাহ ৷ সে জানায়, চৈতন্যের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি হচ্ছিলেন না মহেন্দ্র শাহ ৷ তাই বাবার হাত-পা ভেঙে দিতে চেয়েছিল ৷ যাতে তারা বিয়ে করতে পারেন ৷ পুলিশ সাক্ষী, চৈতন্য এবং বাকি 4 দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে ৷