লন্ডন, 4 মে : ভারতের পর এবার ব্রিটেনে ভ্যাকসিন উৎপাদনের পদক্ষেপ নিল সেরাম ইনস্টিটিউট ৷ তার জন্য 240 মিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ করবে আদর পুনাওয়ালার সংস্থা ৷ আজ এই তথ্য জানিয়েছেন স্বয়ং বরিস জনসন ৷ মঙ্গলবার বরিস জনসন আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে ভার্চুয়াল বৈঠকের আগেই এই ঘোষণা করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ৷
ডাউনিং স্ট্রিট থেকে জানানো হয়েছে, "ক্লিনিকাল ট্রায়ালস, গবেষণা, ফলাফল আর সম্ভব হলে ভ্যাকসিন তৈরির" জন্য এই প্রজেক্টে এই অর্থ বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷
কম দামি অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন তৈরি করেছে ভারত তথা বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন নির্মাতা সংস্থা ৷ কোডাজেনিক্স-আইএনসির সঙ্গে একজোটে এই সংস্থা ব্রিটেনে একটি ডোজের নাজাল ভ্যাকসিনের প্রথম দফার পরীক্ষার কাজও শুরু করেছে ৷
ডাউনিং স্ট্রিটের তরফে আরো জানানো হয়েছে, এক বিলিয়ন ডলারের বিশাল প্রজেক্টের শুধুমাত্র একটা অংশ এটা ৷ এতে দেশে 6500 নতুন চাকরির ব্যবস্থা হবে ৷
আরো পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় সহায়তার জন্য আমেরিকার বিদেশসচিবকে ধন্যবাদ জয়শঙ্করের
কোভিডে সাহায্য-
গত বছর ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য পদ ছেড়েছে ব্রিটিশ সরকার ৷ এর পর বিপুল জনসংখ্যা আর অর্থনৈতিক উন্নয়নের কারণে লন্ডনের বাণিজ্য দেশগুলির তালিকায় উপরের দিকেই রয়েছে ভারত ৷
এ বছর ভারতে আসার পরিকল্পনা থাকলেও কোভিড-19 সংক্রমণের জন্যে তা বাতিল করতে হয়েছে জনসনকে ৷ করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আগের পরিস্থিতিতে সেরামের তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোভ্যাক্স প্রকল্পের মাধ্যমে বিশ্বের গরিব দেশগুলিকে পাঠিয়েছে ভারত ৷ শুধুমাত্র গত মাসে দেশের সংকটকালীন পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিনের চাহিদা জন্য নিউ দিল্লি ভ্যাকসিন রপ্তানি বন্ধ করে, এমনকি কোভ্যাক্সের মাধ্যমেও নয় ৷
সেরাম প্রতি মাসে 6-7 কোটি অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন উৎপাদন করছে, জুলাইতে সেই সংখ্যা 10 কোটিতে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে তারা ৷
ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছ, তারা ভারতে আরো 1000 অক্সিজেন ভেন্টিলেটর পাঠাবে ৷ পুনের সেরাম ইনস্টিটিউটের সিইও 40 বছরের আদর পুনাওয়ালার সম্পত্তির পরিমাণ 11 বিলিয়ন ডলার ৷
ভারতে তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, এই অভিযোগ জানিয়ে ক'দিন আগেই আদর পুনাওয়াল স্ত্রী-সন্তান সমেত লন্ডন পাড়ি দেন ৷ আর শনিবার একটি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন যে ব্রিটেনে থাকা ভারতীয়রা তাঁকে ভ্যাকসিন সরবরাহ করার জন্য জোর দিচ্ছেন ৷ সেখানে "হুমকিটা একটা ভুল তথ্য" জানিয়ে ভারতে ফেরার কথা বলেছেন ৷
বাণিজ্য শর্ত-
ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্য নীতিতে জনসন সরকার এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে ভারত-সহ জাপান আর সিঙ্গাপুরের সঙ্গে ব্যবসায় আগ্রহী ৷ সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে "এনহ্যান্সড ট্রেড পার্টনারশিপ" চুক্তি করেছে ব্রিটেন ৷ এর ফলে ব্রিটেন থেকে ফল আর ওষুধ রপ্তানির নীতি কিছুটা শিথিল করা হয়েছে ৷
তবে মোদির "মেড ইন ইন্ডিয়া" আর "আত্মনির্ভার ভারত"-র পর কেন্দ্রীয় সরকার এ ধরনের ব্যবসায় কতটা আগ্রহ দেখাবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে ৷
গত বছর দেশের কৃষি, দুগ্ধজাত পণ্য আর এর সঙ্গে যুক্ত পরিষেবাগুলির উন্নয়নের জন্য 15টি এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি "রিজিওনাল কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ" (আরসিইপি)-তে স্বাক্ষর করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷