গুয়াহাটি, 19 অগস্ট: নারীবাদ, নারীদেল সমানাধিকার নিয়ে যতই গলা ফাটানো হোক না কেন, সমাজের বদ্ধমূল ভাবনার জেরে কোথাও কোথাও আজও নারীদের বঞ্চিত হতে হয়, লাঞ্ছিত হতে হয় ৷ সদ্যজাত কন্যাসন্তান কিংবা বৃদ্ধা, ছাড় পায় না কেউই। এমনই এক মর্মস্পর্শী ঘটনার কথা শুনে শিউড়ে উঠছে দেশের মানুষ। অসমের বাজালি জেলায় 11 দিনের কন্যা শিশুকে প্রথমে বিক্রি করার পরিকল্পলনা করেছিল বাবা ৷ কিন্তু সেই পরিকল্পনা ভেস্তে গেলে সদ্যজাত কন্যাকে মেরে মাটিতে পুঁতে দিল বাবা ৷
জানা গিয়েছে, বছর পঁয়ত্রিশের অভিযুক্ত বাবা 11 দিনের শিশুটিকে এক দম্পতির কাছে চার লক্ষ টাকায় বিক্রি করার চেষ্টা করেছিল ৷ পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের নাম নিরঞ্জন মালাকার ৷ অসমের দুবি মালিপাড়া এলাকার বাসিন্দা সে। শুক্রবার রাত থেকে সদ্যজাত শিশুকে নিয়ে সে নিখোঁজ ছিল ৷ শনিবার সকালে নিরঞ্জন তার শ্যালককে ফোন করে জানায় শিশুটি মারা গিয়েছে ৷ মৃতদেহটি মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়েছে ৷ খবর পেয়ে, পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন ৷ পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিরাও খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন ৷ পুলিশ আরও জানায়, বিসনালা নদীর নিকটবর্তী স্থান থেকে কন্যাসন্তানটির দেহ উদ্ধার হয় ৷
বাজালি জেলার পুলিশ সুপার সিদ্ধার্থ কুমার বরগোহাইন সংবাদসংস্থা আইএএনএসকে জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে বাবা শিশুটিকে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে দিয়েছে। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে ৷ তারা এখনও পলাতক ৷ পরিবারের সদস্যদের দাবি, নিরঞ্জন চিকিৎসক দিগন্ত চৌধুরীর সহায়তায় শিশুটিকে জন্মের পর হাসপাতাল থেকে বিক্রি করার চেষ্টা করে। তাতে ব্যর্থ হলেও শিশুটিকে নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।
জন্মের একদিন পরে তারা শিশুটিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু পরিবারের সদস্যদের তৎপরতায় সেই চেষ্টা রুখে দেওয়া হয়। পরে, নিরঞ্জন পরিবারকে জানায়, এক ধনী দম্পতির থেকে শিশু বিক্রির জন্য ইতিমধ্যেই 4 লক্ষ টাকা নিয়ে ফেলেছে সে। পরিবারের সদস্যরা আরও দাবি করেছেন, নিরঞ্জন টাকা নেওয়ায় তার উপর চাপ দিচ্ছিল ওই দম্পতি ৷ তাই শেষমেশ এই ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে ৷
আরও পড়ুন: টাকার অভাব 5 দিনের শিশুকে বিক্রির অভিযোগ বাবা-মার বিরুদ্ধে