মুম্বাই, 2 জুলাই: তিনিই দল ৷ তিনিই দলের একমাত্র মুখ ৷ মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক নাটক, দলের অন্দরে বিদ্রোহ, চাপানোতর সবকিছুর মাঝেই চেনা ছন্দে দেখা দিলেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার ৷ আর দলের রক্তক্ষরণ দেখেও 82 বছরের প্রৌঢ় পাওয়ার ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিলেন তিনিই এনসিপি এবং এখনও তিনিই দলের একমাত্র মুখ ৷ সুতরাং অজিত পাওয়ার হোক বা প্রফুল্ল প্যাটেল, কেউই দলে অপরিহার্য নন ৷
রবিবার এনসিপি ছেড়ে এনডিএ সরকারে যোগ দিয়েছেন অজিত পাওয়ার ৷ অন্তত 40 জন বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে দল ছেড়ে একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন মহারাষ্ট্র সরকারে যোগ দিয়েছেন তিনি ৷ শুধু তাই নয়, রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদও দেওয়া হয়েছে তাঁকে ৷ এদিন অজিত পাওয়ার ছাড়াও আরও আট জন এনসিপি নেতা মহারাষ্ট্র সরকারের মন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন ৷ অজিতের এদিনের আচমকা পদক্ষেপ একদিকে রাজ্যে গড়ে ওঠা শিবসেনা-কংগ্রেস এবং এনসিপি জোট যা মহা বিকাশ আঘাড়ি (এমভিএ) নামে পরিচিত, তাকেও ধাক্কা দিয়েছে, তেমনই এনসিপির পক্ষেও যে যথেষ্ট চিন্তার তা অন্য়ান্য বিরোধীদলগুলিও স্বীকার করে নিচ্ছে ৷ তবে অজিত পাওয়ার এবং প্রফুল্ল প্যাটেলের ভূমিকায় একেবারেই বিচলিত নন শরদ পাওয়ার ৷
এদিন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার বলেন, "এনসিপিকে অভিযুক্ত করে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছিলেন যে, দলের নেতারা দুর্নীতিতে জড়িত এবং সেচ কেলেঙ্কারিতে জড়িত। আজ তা প্রমাণিত হয়েছে যে মোদির অভিযোগ ভুল ছিল। আমি বিশ্বাস করি এজেন্সি ব্যবহার করে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কারণ আমাদের ছয়-সাতজন নেতার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ৷" সংকট মুহূর্তে দলের নির্ভরযোগ্য মুখ কে হবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শরদ পাওয়ার তাঁর হাত তুলে বলেন "শরদ পাওয়ার" ৷
সূত্রের খবর, অজিত পাওয়ারের সঙ্গে থাকা বিধায়করা পটনায় বিরোধী জোটের সভায় রাহুল গান্ধির সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করার তীব্র বিরোধী ছিলেন ৷ একইসঙ্গে, কংগ্রেসের সঙ্গে আঁতাতে যাওয়া প্রশ্নেও শরদ পাওয়ারের একতরফা সিদ্ধান্তে বিরক্ত ছিলেন তাঁরা। যে কারণে দলে এই আড়াআড়ি বিভাজন বলে অনেকেই মনে করছেন ৷ যদিও এদিন শরদ পাওয়ার বলেন, "আমি কখনই বলব না যে, আমার সংসার ভাগ হয়েছে ৷ এই সমস্যাটি আমার ব্যক্তিগত বিষয় নয়, এটি মানুষের সমস্যা। যারা চলে গিয়েছে তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি চিন্তিত। আমি এর কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী মোদিকে দিতে চাই। তিনি বক্তব্য রেখেছিলেন এবং সেই বক্তব্যের পর কিছু লোক অস্বস্তি বোধ করতে শুরু করেছিলেন ৷ তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ ইডির পদক্ষেপের মুখোমুখিও অতীতে হয়েছিলেন ৷"
আরও পড়ুন: অজিতের 'পাওয়ার' বদলে ধাক্কা বিরোধী জোটে ! উচ্ছ্বসিত বিজেপি
অন্যদিকে, এদিন মহারাষ্ট্র বিধানসভার অধ্যক্ষ রাহুল নারওয়েকার জানান, অজিত পাওয়ার বিরোধী দলের নেতা পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন এবং এবং সেই পদত্যাগ পত্র তিনি গ্রহণও করেছেন।