নয়াদিল্লি, 16 অগস্ট: দলের নাম এবং প্রতীক কার দখলে যাবে ? তা ঠিক করতে 3 সপ্তাহ সময় চাইল ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি বা এনসিপির দুই শিবির ৷ দলের নাম ও প্রতীকের আসল দাবিদার হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার ৷ এর বিরোধিতা করেছেন প্রবীণ নেতা তথা দলের প্রতিষ্ঠাতা শরদ পাওয়ার ৷ তাঁর শিবিরের তরফেও চিঠি গিয়েছে দিল্লির নির্বাচন সদনে।
গত বছরের জুলাইয়ে একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল শিবসেনা শিবিরে ৷ শিবসেনায় বিভাজন হয়। উদ্ধব ঠাকরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন একনাথ শিন্ডে। শিবসেনা, এনসিপি এবং কংগ্রেসের সরকার পড়ে যায়। বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়ে একনাথের নেতৃত্বে থাকা শিবসেনা। তিনিই মহারাষ্ট্রের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হন ৷ তাঁর নেতৃত্বে গঠিত শিবসেনা নির্বাচন কমিশনের কাছে দলের নাম ও প্রতীকের দাবি জানিয়ে তথ্য জমা দিয়েছিল ৷ নির্বাচন কমিশন নির্দেশ দেয় বালাসাহেব ঠাকরে প্রতিষ্ঠিত শিবসেনার নাম ও প্রতীকের অধিকারী হবেন একনাথ শিন্ডেরাই ৷
আরও পড়ুন: শরদ-অজিতের বৈঠকের খবরে নয়া জল্পনা মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে
এরপর এবছরের জুলাইয়ে ভাঙন ধরে মহারাষ্ট্রের মহা বিকাশ আঘাড়ি জোটের এনসিপিতে ৷ ঘটনার সূত্রপাত 2 জুলাই ৷ মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন শরদ পাওয়ারের ভাইপো অজিত পাওয়ার ৷ এতে এনসিপি-কংগ্রেস-উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বে শিবসেনা জোটে ভাঙন ধরে ৷ শরদ পাওয়ারের এনসিপিতেও এর প্রভাব পড়ে ৷ প্রবীণ নেতার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় ভাইপো অজিতের ৷ দু'ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় এনসিপি ৷
এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরেই বিদ্রোহী অজিত পাওয়ারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার ৷ 3 জুলাই এনসিপির কার্যনির্বাহী প্রধান জয়ন্ত পাটিল জানান, অজিত পাওয়ার এবং অন্য 8 জনের বিধায়ক পদ খারিজের আবেদন জানিয়ে অধ্যক্ষকে চিঠি পাঠানো হয়েছে ৷ পাশাপাশি শরদ পাওয়ারের নেতৃত্বে গঠিত এনসিপি শিবির নির্বাচন কমিশনের কাছে দলের নাম ও প্রতীকের দাবি জানিয়ে চিঠি দেয় ৷ এদিকে অশীতিপর শরদ পাওয়ার প্রতিষ্ঠিত এনসিপির একাধিক বিধায়ক ও বিধান পরিষদের সদস্য অজিত পাওয়ারকে সমর্থন করেন ৷ তাই অজিত পাওয়ারের নেতৃত্বে আরেকটি এনসিপি শিবির গঠিত হয় ৷
5 জুলাই, 40 জন এনসিপি সাংসদ, বিধায়ক, বিধান পরিষদের সদস্য অজিত পাওয়ারকে তাঁদের প্রধান হিসেবে বেছে নেন ৷ তাঁরা এই মর্মে নির্বাচন কমিশনকে চিঠিও পাঠান তাঁরা ৷ তবে সেই চিঠিতে তারিখ দেওয়া ছিল 30 জুন ৷ অজিত পাওয়ারের নেতৃত্বে গঠিত এনসিপি শিবিরও দলের নাম ও প্রতীকের দাবি জানায় ৷
এনসিপি নাম ও দলের প্রতীকের আসল দাবিদার কে তা নিয়ে তৈরি হওয়া জটিলতার সমাধানে 27 জুলাই নির্বাচন কমিশন এনসিপির দুই শিবিরকেই চিঠি পাঠায় ৷ শরদ পাওয়ারের শিবির সূত্রে জানা যায়, অজিত পাওয়ারের এনসিপি শিবির দলের নাম ও প্রতীক চেয়ে দাবি জানিয়েছে ৷ এই প্রসঙ্গেই নির্বাচন কমিশন শরদ পাওয়ারের শিবরের কাছ থেকে উত্তর চেয়েছে ৷
আরও পড়ুন: বালাসাহেবের শিবসেনার কর্তৃত্ব একনাথ শিন্ডের হাতেই দিল নির্বাচন কমিশন
বুধবার শরদ পাওয়ারের এনসিপি এবং অজিত পাওয়ারের নেতৃত্বে এনসিপি শিবির নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে আরও 4 সপ্তাহ সময় চেয়েছে ৷ এর মধ্যে দুই শিবিরই দলের নাম ও প্রতীকের দাবির সমর্থনে প্রয়োজনীয় তথ্য দেবে কমিশনকে ৷ নির্বাচন কমিশন দুই শিবিরকেই নিজেদের অবস্থান জানাতে তিন সপ্তাহ সময় দিয়েছে ৷