জৌনপুর (উত্তরপ্রদেশ), 13 নভেম্বর: চিকিৎসকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জীবন ফিরে পেলেন এক ব্যক্তি ৷ তাঁর যকৃতে (Liver) টানা ছ'দিন ধরে আটকে থাকা একটি ছুরি (Knife) অস্ত্রোপচার (Surgery) করে বের করে আনলেন চিকিৎসকরা ৷ উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) জৌনপুরের (Jaunpur) এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও কর্তৃপক্ষকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন রোগী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ৷ একইসঙ্গে কাঠগড়ায় তুলেছেন স্থানীয় জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ প্রশাসনকে ৷
জীবন ফিরে পাওয়া ওই রোগীর নাম মনসারাম সৈকতে ৷ তিনি স্থানীয় কেরাকাট থানা এলাকার বাসবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ৷ এই গ্রামেই বাড়ি রামাদীন নামে এক ব্যক্তির ৷ রামাদীনের মেয়ে সন্তানসম্ভবা ৷ চলতি মাসে বাড়িতেই মেয়ের জন্য সাধের অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিলেন রামাদীন ৷ সেই অনুষ্ঠানে আসা এক যুবকের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের ঝামেলা হয় ৷ বিবাদ মেটাতে এগিয়ে যান মনসারাম ৷ অভিযোগ, তখনই অনুষ্ঠান বাড়িতে আসা ওই যুবক মনসারামের পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দেন ! আহত মনসারামকে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ কিন্তু, অবস্থার ক্রমশ অবনতি হওয়ায় তাঁকে জৌনপুরের হাসপাতালে 'রেফার' করে দেন চিকিৎসকরা ৷ গত 11 নভেম্বর সন্ধ্যায় তাঁকে ওই হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় ৷ পরে সেই হাসপাতালেই সফল অস্ত্রোপচার করা হয় মনসারামের ৷
আরও পড়ুন: বাবার শেষকৃত্য সেরে ভোট দিলেন হিমাচলের তিন ভাই !
এই অস্ত্রোপচারের দায়িত্বে ছিলেন হাসপাতালের শল্যচিকিৎসক সিদ্ধার্থ ৷ সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, "বিশেষ কয়েকটি কারণে এই অস্ত্রোপচার জটিল এবং ঝুঁকিবহুল ছিল ৷ কারণ, ছুরিটি মনসারামের হৃদপৃণ্ডের ঠিক নীচে আটকে ছিল ৷ ওই স্থানে যে ক্ষত তৈরি হয়েছিল, তার জেরে মনসারামের পেটের ভিতরের অংশ রক্তে ভরে গিয়েছিল ! তাছাড়া, এই অস্ত্রোপচারের জন্য রোগীকে আগে প্রচুর পরিমাণে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন ছিল ৷ কিন্তু, নির্দিষ্ট গ্রুপের রক্ত পাওয়া যাচ্ছিল না ৷ অবশেষে শনিবার (12 নভেন্বর, 2022) তাঁকে রক্ত দেওয়া হয় ৷ তারপর অস্ত্রোপচার করা হয় ৷ প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় মনসারামের শরীরে আটকে থাকা 6 সেন্টিমিটারের ধারাল ছুরিটি বের করে আনা হয় ৷ এখন তিনি বিপন্মুক্ত ৷"
এই ঘটনায় পুলিশ ও স্থানীয় জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চরম গাফিলতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন মনসারামের পরিবারের সদস্যরা ৷ তাঁরা জানিয়েছেন, এত বড় একটা ঘটনার পরও পুলিশ কোনও অভিযোগ নেয়নি ৷ অন্যদিকে, জৌনপুরের হাসপাতালে আসার আগে পর্যন্ত স্থানীয় জেলা হাসপাতালে মনসারামের কোনও চিকিৎসাই করা হয়নি ৷ এমনকী, সেখানে তাঁর একটি এক্স-রে পর্যন্ত করা হয়নি !