কানপুর, 24 সেপ্টেম্বর: "বাবা, তুমি বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেই এক আংকেল মায়ের সঙ্গে দেখা করতে আসে ৷ ওরা দুজনে একটি ঘরে চলে যায় ৷ তখন আমি কোনও কাজে মাকে ডাকলে মা আর ওই আংকেল আমাকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয় ৷" 6 বছরের শিশুকন্যার মুখে কথাগুলো শুনে চমকে গিয়েছিলেন তাঁর চিকিৎসক বাবা ৷ মেয়ের কথা যাচাই করতে গিয়ে তিনি তাঁর স্ত্রীকে তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় হাতে নাতে ধরে ফেলেন ৷ অভিযোগ, মা ও তাঁর প্রেমিক একরত্তি ওই কন্যাকে চুপ করিয়ে রাখার জন্য ভয় দেখাতেন ৷
কানপুরের নওবস্তা থানা এলাকার বাসিন্দা ওই চিকিৎসক তাঁর স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতে পারেন তাঁর 6 বছরের কন্যার কাছ থেকে ৷ জানা গিয়েছে, ওই চিকিৎসক রোজ তাঁর ক্লিনিকে চলে গেলেই তাঁর স্ত্রী প্রেমিককে বাড়িতে ডাকতেন । মা ও তাঁর প্রেমিক ভয় দেখানোয় এতদিন চুপ করে ছিল ফুটফুটে নিস্পাপ শিশুটি ৷ তবে একদিন সে তার বাবাকে সব খুলে বলে ।
ফতেহপুরে ডাক্তার, স্ত্রী সরকারি শিক্ষিকা: নওবস্তা থানার বাসিন্দা ওই চিকিৎসকের ক্লিনিক রয়েছে ফতেপুরে । তাঁর স্ত্রী একজন সরকারি শিক্ষক ৷ তাঁদের 15 বছরের একটি ছেলে ও ছয় বছরের একটি মেয়ে রয়েছে । স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্কের বিষয়ে চিকিৎসকের কোনও ধারণা ছিল না । তাঁর ছোট্ট কন্যার সামনেই চিকিৎসকের স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে আসতেন তাঁর প্রেমিক ৷
শিশুকে হুমকি দিতেন মা ও তাঁর প্রেমিক: অভিযোগ, 6 বছরের শিশু যাতে এ ব্যাপারে কারও কাছে মুখ না খোলে, সে জন্য তাঁকে ভয় দেখাতেন তাঁর মা ও তাঁর প্রেমিক ৷ তাই ভয়ে বাবাকে কিছু বলতে পারেনি সে। তবে একদিন সে সাহস সঞ্চয় করে তার মায়ের কথা জানিয়ে দেয় বাবাকে ৷ সে তার বাবাকে জানায়, "তুমি যখন ডিউটিতে যাও তখন একটা আংকেল মায়ের সঙ্গে দেখা করতে আসে । আংকেল অনেক ঘণ্টা মায়ের সঙ্গে রুমে থাকে । কারওকে কিছু বললে আমাকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয় আংকেল । মা-ও তাকে সমর্থন করে ।"
স্ত্রীর প্রেমিককে ধরার পরিকল্পনা: স্ত্রীর এমন কাণ্ড শুনে হতবাক হয়ে যান চিকিৎসক । তিনি মেয়ের কথা যাচাই করতে বৃহস্পতিবার ফতেপুর যাওয়ার জন্য যথারীতি বাড়ি থেকে বের হন । কিছুক্ষণ কেটে যাওয়ার পর তিনি মাঝপথ থেকেই সোজা বাড়ি ফিরে আসেন ৷ তাঁর মেয়ে দরজা খুলে দেয় । এরপর চিকিৎসক সোজা ঘরে গিয়ে দেখেন, তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় রয়েছেন এক ব্যক্তি ৷ স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিক চিকিৎসককে হঠাৎ সামনে দেখে স্তব্ধ হয়ে যান ।
ঘরে তালা দিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ চিকিৎসক: স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিকা যে ঘরে ছিলেন, সেই ঘরের দরজা তালা দিয়ে বন্ধ করে দেন চিকিৎসক । পরে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে বিষয়টি জানান তিনি । কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশ এসে দুজনকে থানায় নিয়ে যায় । স্ত্রীর প্রেমিকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি, ভয় দেখানো, পকসো আইন, লাঞ্ছনা ও শ্লীলতাহানির মামলা দায়ের করেছেন চিকিৎসক। নওবস্তা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জগদীশ প্রসাদ পান্ডে জানিয়েছেন যে, একটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে । পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।