হায়দরাবাদ, 1 নভেম্বর: মানিব্যাগে আর নগদ টাকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে হবে না । তার পরিবর্তে আপনি ডিজিটাল আকারে সেই টাকা বহন করতে পারবেন ৷ কীভাবে?
আপনার ফোনে সেই পেমেন্টই করুন নিরাপদ এবং সুরক্ষিতভাবে ৷ সেই দিন আর বেশি দূরে নয়, যখন দেশের অধিকাংশ মানুষ ডিজিটাল কারেন্সির (Digital Currency) দিকে ঝুঁকবে বলে মনে করা হচ্ছে । আর এই সমস্তই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (আরবিআই) নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে সম্ভব হতে চলেছে ৷ যার মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে পরীক্ষার ভিত্তিতে সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক ডিজিটাল কারেন্সি (সিবিডিসি) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এবং পরে খুচরোও সংযুক্ত হবে (RBI digital currency project) ।
একবার ডিজিটাল কারেন্সি সম্পূর্ণরূপে কার্যকরী হয়ে গেলে আপনি আপনার হাতে থাকা ফোনের মাধ্যমে শুধুমাত্র একটি ক্লিকেই বেশিরভাগ আর্থিক লেনদেন করতে পারবেন (Pay digital currency from your phone) । আর নগদ টাকা গুনতে হবে না । আপনি এতদিন যেমন নিজের হাতে টাকা গুনে কাউকে দিতেন, ই-কারেন্সি ক্ষেত্রে তা করতে হবে না । ফোনে একটি আঙুলের স্পর্শে টাকা লেনদেন করতে পারবেন । বলাই বাহুল্য ই-রুপি সাধারণ মানুষের জীবনকে চিরতরে বদলে দিতে চলেছে (Digital Currency RBI) ।
ডিজিটাল রুপি মূলত প্রযুক্তিগতভাবে সত্যিকারের টাকা বা ফিজিক্যাল রুপির মতো । কাগজের টাকার ক্ষেত্রে যেমন মুদ্রণ, প্রকাশ এবং বিতরণের উপর আরবিআই সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখে, তেমনই ডিজিটাল কারেন্সির ক্ষেত্রেও তাই হবে ৷ ফলে এই বিষয়টি এতটাই বিশ্বাসযোগ্য যে উপভোক্তা বা গ্রাহকদের এর সম্পর্কে কোনওরকম সন্দেহের অবকাশ থাকার দরকার নেই । টাকা-পয়সার মতোই ডিজিটাল কারেন্সি যে সঙ্গে রাখবে সেটা তারই থাকবে (Digital Currency News) ৷
ধরুন, যখন আপনি 599 টাকায় কোনও জিনিস কিনছেন ৷ আপনি টাকা দেবেন বিক্রেতাকে ৷ তাহলে এই টাকা ডিজিটাল কারেন্সির মাধ্যমে বিক্রেতার কাছে ফোনে এক ক্লিকেই চলে যাবে । কিন্তু এটাই যদি আপনি ক্যাশ বা টাকা দিয়ে করতে যান আপনাকে 600 টাকা দিতে হবে, তারপর 1 টাকা খুজরো ফেরত নিতে হবে ৷ ডিজিটাল কারেন্সিতে সেই ঝামেলা থাকবে না ৷ এদিকে ডিজিটাল কারেন্সি পেমেন্ট কিন্তু ইতিমধ্যে উপলব্ধ ডিজিটাল অ্যাপ পেমেন্টের থেকে আলাদা । ডিজিটাল কারেন্সিতে লেনদেনের জন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা ইন্টারনেটের প্রয়োজন হবে না (No Internet is Required) ৷
আরেকটি সুবিধা হল, ডিজিটাল এবং ফিজিক্যাল কারেন্সি পারস্পরিকভাবে বিনিময়যোগ্য কোনও চার্জ ছাড়াই । ডিজিটাল কারেন্সি লেনদেন হয় ফিজিক্যাল কারেন্সি পেমেন্টের চেয়ে দ্রুত । ডিজিটাল কারেন্সি ক্রিপ্টোকারেন্সি বা বিটকয়েনের থেকে আলাদা ৷ ডিজিটাল কারেন্সির উপর আরবিআই-এর (Reserve Bank of India) সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে নেই ।
ডিজিটাল কারেন্সি দুটি ফরম্যাটে আসবে । একটি হল নন-অ্যাকাউন্ট ভিত্তিক, ব্যক্তি এবং সংস্থাগুলির মধ্যে লেনদেনের জন্য কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের প্রয়োজন নেই ৷ আরেকটি হল আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অ্যাকাউন্ট-ভিত্তিক কারেন্সি লেনদেন । প্রথম পর্যায়ে, ডিজিটাল কারেন্সি শুধুমাত্র গ্রাহকদের দ্বারা উপলব্ধ কয়েকটি লেনদেনের জন্যই সীমাবদ্ধ থাকবে ।
আরও পড়ুন: ইএমআই আয়ের 40 শতাংশের চেয়ে বেশি ? সমস্যায় পড়তে পারেন ভবিষ্যতে
ডিজিটাল কারেন্সি আসার ফলে বর্তমানে কেন্দ্র সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করবে ৷ কারণ নোট এবং কয়েন ছাপা ও বিতরণের যে ব্যয় তা অনেকটা বেঁচে যাবে । ই-কারেন্সিও স্বচ্ছতা আনবে, কালো টাকার থেকে দেশকে মুক্ত করবে । ইন্টারনেট বা পাওয়ার ছাড়াই দেশব্যাপী লেনদেন করা যেতে পারা যাবে ডিজিটাল কারেন্সিতে । এর মাধ্যমে জাল মুদ্রা রোধ করা যাবে এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন বাড়ানো যাবে ।