নয়াদিল্লি, 27 সেপ্টেম্বর: বাবা এবং মা যদি একে-অপরের স্নেহ থেকে সন্তানকে বঞ্চিত করার জন্য চক্রান্ত করেন, তাহলে তা মানসিক নিষ্ঠুরতা হিসেবে গণ্য হবে ৷ এক দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদের মামলার শুনানিতে এমনই পর্যবেক্ষণ দিল দিল্লি হাইকোর্ট ৷
2018 সালে পরিবার আদালত একটি বিবাহবিচ্ছেদের মামলা মঞ্জুর করে যে নির্দেশ দিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে আবেদন করেছিলেন স্ত্রী ৷ সেই আবেদন খারিজ করে দিয়ে আদালত বলেছে, এই ক্ষেত্রে কন্যাসন্তানকে 'সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন' রেখে সেনাকর্মী স্বামীর বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন স্ত্রী ৷
বিচারপতি সুরেশ কুমার কাইত এবং নীনা বনসাল কৃষ্ণার একটি বেঞ্চ বলেছে, "পরিবার আদালতের প্রিন্সিপাল জাজ সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, এই ভাবে শিশুকে তার বাবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হলে তা চরম মানসিক নিষ্ঠুরতা, যখন সেই বাবা তাঁর সন্তানকে কখনও অবহেলা করেননি ৷"
আদালত বলেছে যে, দ্বন্দ্ব এবং বিরোধ ছিল এই দম্পতির মধ্যে, যাঁরা 1996 সালে হিন্দু রীতি অনুসারে বিয়ে করেছিলেন ৷ সম্পর্ক যতই তিক্ত হোক না কেন, সন্তানকে তাতে জড়ানো বা বাবার বিরুদ্ধে তাকে একটি হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে উসকানি দেওয়া বা ব্যবহার করা একেবারেই ঠিক নয় ।
আদালত বলেছে, "বাবা ও মা একে অপরের স্নেহ থেকে সন্তানকে বঞ্চিত করার জন্য চক্রান্ত করলে তা মানসিক নিষ্ঠুরতার সমান...নিজের রক্ত-মাংসে গড়া সন্তানকে দূরে রাখার থেকে বেশি বেদনাদায়ক আর কিছুই হতে পারে না ৷ শিশুকে এমন ভাবে ইচ্ছাকৃত ভাবে বিচ্ছিন্ন করে রাখা মানসিক নিষ্ঠুরতার সমান ৷"
স্বামী প্রতিদিন অ্যালকোহল সেবন করেন, আবেদনকারী স্ত্রী এই যুক্তি দিলে আদালত বলেন, যখন কখনও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা আজও ঘটেনি, তখন "একজন ব্যক্তি শুধুমাত্র প্রতিদিন মদ্যপান করলেই তাঁর চরিত্র খারাপ হয়ে যায় না ৷"
স্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন যে, যখনই তিনি স্বামীর কাছে যেতেন, তখনই তাঁকে ফিরিয়ে দিয়ে সর্বদা পুরুষ ও মহিলা বন্ধুদের সঙ্গে ফোনে ব্যস্ত থাকতেন ৷ এ ক্ষেত্রে আদালত বলেছে, "একজন ব্যক্তি যিনি মূলত একা থাকেন, তিনি বন্ধুদের থেকে সান্ত্বনা পেতে পারেন ৷ তিনি তার বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলতেন বলেই একে আবেদনকারীকে উপেক্ষা করা বা নিষ্ঠুর কাজ বলে ধরে নেওয়া যায় না ।"
আরও পড়ুন: ইচ্ছাকৃত স্বামী-স্ত্রী উভয়ের যৌন সম্পর্কে না যাওয়া 'নিষ্ঠুরতা', বার্তা দিল্লি হাইকোর্টের