নান্দ্যালা(অন্ধ্রপ্রদেশ), 21 জুন: ক্ষমা করে দিও মা-ভাইরা ৷ ভিডিয়ো করে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা এক দলিত যুবকের ৷ ঘটনাটি অন্ধ্রপ্রদেশের নান্দ্যালার ৷ মৃতের নাম চিন্নাবাবু (22) ৷ তিনি নান্দ্যালা শহরের থোটালাইনের বাসিন্দা । সম্প্রতি শহরে একটি বাইক চুরির ঘটনা ঘটে । সেই ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ চিন্নাবাবুকে অভিযুক্ত হিসেবে সনাক্ত করে বলে জানা গিয়েছে ৷
আত্মহত্যার আগে যুবক ভিডিয়োতে বলেন, "হ্যালো বন্ধুরা । আমি জানি না আপনারা যখন এই ভিডিয়োটি দেখবেন তখন আমি বেঁচে থাকব কি না । পুলিশ আমার বিরুদ্ধে গাড়ি চুরির মামলা করেছে । বলা হয়, সিসিটিভি ক্যামেরায় আমার মতো একজনকে দেখা গিয়েছে । ওটা আমি নই ৷ তবে তা সত্ত্বেও সোমবার রাতে তারা আমাকে পুলিশ স্টেশনে নিয়ে গিয়ে মারধর করে ৷ অপরাধ স্বীকার করানোর চেষ্টা করে । এরপর পুলিশ রাতে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় ।"
"তারা আমাকে সকালে আবার আসতে বলেছে অপরাধ স্বীকার করতে । কিন্তু আমি করিনি ৷ যদি আমি এই অপরাধ স্বীকার করে নিই আমাকে চোর বলা হবে । বন্ধুরা আমি যদি চুরির কথা স্বীকার করি তাহলে সেই বাইকটা কোথা থেকে পাব? আমাদের কলোনীর সবাই আমাকে চোর মনে করে । এসআই আমাকে মারধর করেছে এবং আমার বোন ও মাকে বকাঝকা করেছে ৷ যাতে আমি অনেক কষ্ট পেয়েছি । সেজন্যই মৃত্যুর পথ বেছে নিচ্ছি । ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করতে যাচ্ছি ৷"
জানা গিয়েছে, চুরির ঘটনায় সোমবার সকালে কনস্টেবল এসুদাসু এবং নাগান্না চিন্নাবাবুকে টাউন থানায় নিয়ে যাওয়া হয় । এসআই সুব্বিরামি রেড্ডি কনস্টেবল-সহ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন । রাতে বাড়ি গিয়ে মঙ্গলবার সকালে ফের পুলিশ স্টেশনে আসতে বলা হয় তাঁকে । চিন্নাবাবু বাড়ি গিয়ে মঙ্গলবার সকালে ঘুম থেকে উঠে টিফিন খাবেন বলে বেরিয়ে যান । এরপর তিনি মহানন্দী মন্ডলের নন্দিপালের কাছে ট্রেনের ট্র্যাকে গিয়ে ভিডিয়ো করার পর আত্মহত্যা করেন । রেলওয়ের এসআই শ্রীনিবাসুলু জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে ।
আরও পড়ুন: মোবাইলে সেলফি মোডে রেখে আত্মঘাতী কলেজ ছাত্রী
তবে নিহতের মা জানান, তাঁর ছেলে একটি মেয়ের প্রেমে পড়েছিল ৷ তাঁকে বিয়ে করার জন্য পাগল হয়ে উঠেছিল ৷ এর জেরেই অবশেষে আত্মহত্যা করেছে চিন্নাবাবু । এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ । তারা এই মৃত্যুর সঠিক তদন্তের দাবি করেছে ।