নয়াদিল্লি, 7 জুন: মোকার পর বেশিদিন কাটেনি ৷ এরই মধ্যে আরও একটি ঘূর্ণিঝড়ের ভ্রুকুটি ৷ ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় ৷ আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, চলতি বছর আরব সাগরে তৈরি হওয়া প্রথম এই ঝড় দ্রুতই তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে ৷ এর প্রভাবে কেরলে বর্ষার শুরুটা 'মৃদু' হবে ৷ দক্ষিণ উপদ্বীপের বাইরেও এর 'দুর্বল' অগ্রগতির পূর্বাভাস মিলেছে ৷
বুধবার সকালে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) জানিয়েছে যে, দুই দিনের মধ্যে কেরলে বর্ষা শুরুর জন্য পরিস্থিতি অনুকূল । আবহাওয়াবিদরা অবশ্য বলেছেন যে, ঘূর্ণিঝড়টি বর্ষার তীব্রতাকে প্রভাবিত করছে এবং এর ফলে কেরলে বর্ষার শুরুটা 'মৃদু' হবে । আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি প্রায় উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং খুব তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে ।
এটি পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে উত্তর-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে । তবে, ভারত, ওমান, ইরান এবং পাকিস্তান-সহ আরব সাগর সংলগ্ন দেশগুলিতে এখনও কোনও বড় প্রভাবের পূর্বাভাস দেয়নি আইএমডি । আবহাওয়াবিদরা বলছেন যে, ঝড়ের ট্র্যাক উত্তর দিকে হতে পারে কিন্তু ঝড় কখনও কখনও পূর্বাভাস মতো ট্র্যাক এবং তীব্রতা মেনে নাও চলতে পারে ৷
পূর্বাভাসকারী সংস্থাগুলি বলেছে যে, ঝড়টি 'দ্রুত তীব্রতা' এর মধ্য দিয়ে চলেছে, পূর্বের পূর্বাভাসকে ভুল প্রমাণ করে মাত্র 48 ঘণ্টার মধ্যে এটি ঘূর্ণিঝড় থেকে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে । বায়ুমণ্ডলীয় পরিস্থিতি এবং মেঘের ভর ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, 12 জুন পর্যন্ত এটি খুব তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি বজায় রাখতে পারে । বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তার তীব্রতা দীর্ঘ সময় ধরে রাখছে ।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মোকার তাণ্ডবে মায়ানমারে বাড়ল মৃতের সংখ্যা, ত্রাণ পাঠাল দিল্লি
'উত্তর ভারত মহাসাগরে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের পরিবর্তনশীল অবস্থা' সমীক্ষা অনুসারে, আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড়ের ফ্রিকোয়েন্সি, সময়কাল এবং তীব্রতা বর্ষা-পরবর্তী সময়ে প্রায় 20 শতাংশ এবং বর্ষার পূর্ববর্তী সময়ে 40 শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে । আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা 52 শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, আর খুব মারাত্মক ঘূর্ণিঝড় 150 শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে ।
স্কাইমেট ওয়েদারের ভাইস প্রেসিডেন্ট (জলবায়ু ও আবহাওয়া) মহেশ পালাওয়াত বলেছেন, মেঘের ভর এই সিস্টেমের চারপাশে ঘনীভূত এবং পর্যাপ্ত আর্দ্রতা কেরল উপকূলে পৌঁছচ্ছে না । যদিও বর্ষা শুরুর মানদণ্ড আগামী দুই দিনের মধ্যে পূরণ করা যেতে পারে, তবে বর্ষার শুরুটা মৃদু হবে ৷ কেরলে বর্ষা শুরু হওয়ার পরে, 12 জুনের কাছাকাছি ঝড়ের পরিস্থিতির অবনতি না হওয়া পর্যন্ত বর্ষা 'দুর্বল' থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি ৷
আরও পড়ুন: মায়ানমারের উপকূলে আছড়ে পড়ল সুপার সাইক্লোন মোকা, প্রভাব চট্টগ্রাম-বড়িশাল উপকূলেও
দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু সাধারণত প্রায় সাত দিনের মান বিচ্যুতি-সহ 1 জুন কেরলে প্রবেশ করে । মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে, আইএমডি বলেছিল যে, এ বছর 4 জুনের মধ্যে কেরলে বর্ষা আসতে পারে । স্কাইমেট 7 জুন কেরলে বর্ষা শুরুর পূর্বাভাস দিয়েছিল । গত 150 বছরে কেরলে বর্ষা শুরু হওয়ার তারিখটি ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে ৷ আইএমডি-র তথ্য অনুসারে, সবচেয়ে আগে বর্ষা ঢোকে 1918 সালে, 11 মে ৷ আর সবচেয়ে বিলম্বিত হয় 1972 সালে, 18 জুন ৷ দক্ষিণ-পূর্ব মৌসুমী বায়ু গত বছর 29 মে, 2021 সালে 3 জুন, 2020 সালে 1 জুন, 2019 সালে 8 জুন এবং 2018 সালে 29 মে কেরলে প্রবেশ করেছিল ৷