হায়দরাবাদ (তেলঙ্গানা), 3 জানুয়ারি: এক যুবতীকে হুমকি দিয়ে 18 লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাইবার অপরাধীদের (Cybercriminals) বিরুদ্ধে ৷ অভিযোগ, ওই যুবতীর নামে যাওয়া পার্সেলে মাদক আছে এই হুমকি দিয়ে ওই টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে ৷ যুবতীর দাবি, বিষয়টি নিয়ে কোথাও কোনও অভিযোগ করা হবে না, এই শর্তেই তাঁর থেকে টাকা নেওয়া হয় ৷ যাঁরা ফোন করেছিলেন, তাঁরা নিজেদের কাস্টমস ও সিবিআইয়ের আধিকারিক হিসেবে পরিচয় দেন ৷
তেলঙ্গানার রাচাকোন্ডা সাইবার ক্রাইম পুলিশের (Rachakonda Cybercrime Police) তরফে জানা গিয়েছে, ওই যুবতী হায়দরাবাদের এলবি নগরে থাকেন ৷ তিনি একটি আইটি কোম্পানিতে কাজ করেন । গত মাসে তাঁর কাছে একটি ফোন আসে ৷ যিনি ফোন করেছিলেন, তিনি নিজেকে একজন কাস্টমস কর্মকর্তা (Customs Officer) হিসাবে পরিচয় দেন ৷ জানান, ওই যুবতীর নামে আসা একটি পার্সেলে মাদক পাওয়া গিয়েছে ৷ তাই তাঁর নামে মামলা হয়েছে ৷
স্বাভাবিকভাবেই ভয় পেয়ে যান ওই যুবতী ৷ এই অবস্থায় ঠিক কী করা উচিত, তা তিনি বুঝে উঠতে পারেননি ৷ তার মধ্যেই আবার ফোন করেন ওই ব্যক্তি ৷ এবার তিনি পরামর্শ দেন যে এফআইআর দায়ের না করার জন্য তাঁকে (যুবতী) সিবিআই (CBI) কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে একটি গোপন চুক্তি করা উচিত ।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, এর কিছুক্ষণের মধ্যেই অন্য এক ব্যক্তি ওই যুবতীকে অন্য নম্বর থেকে ফোন করেন । তিনি নিজেকে সিবিআই অফিসার হিসেবে পরিচয় দেন ৷ তিনিও মামলা এড়াতে যুবতীকে সিবিআইয়ের সঙ্গে একটি গোপন চুক্তি করতে বলেন ৷ এর জন্য তাঁকে টাকাও দিতে বলেন ৷ যুবতীর কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণে হোয়াটসঅ্যাপে সিবিআই অফিসারের নাম সহ একটি আইডি কার্ড এবং একটি চুক্তির নথি পাঠান তিনি ।
পুলিশের দাবি, এই ধরনের পরিস্থিতিতে যে কারও স্বাভাবিক চিন্তাভাবনা করার শক্তি লোপ পায় ৷ এই যুবতীর ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছিল ৷ সাধারণত থানা-পুলিশের ভয় থাকলে চাকরিতে সমস্যা হতে পারে ৷ সেই কারণেই টাকা দিয়ে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করেন অধিকাংশ ৷ এই যুবতীও তাই করেছিলেন ৷
তিনি প্রথমে দুই কিস্তিতে 5 লক্ষ টাকা পাঠান ৷ কিন্তু তাঁর লেনদেনকে সন্দেহজনক বলে মনে হয় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষের ৷ তারা সঙ্গে সঙ্গে ওই যুবতীর অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেয় ৷ এতে আরও চিন্তায় পড়ে যায় ওই যুবতী ৷ তিনি আবার ওই প্রতারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ৷ তাঁরাই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আনব্লক করে সেখান থেকে একলপ্তে 13 লক্ষ টাকা নিয়ে নেন ৷
মাত্র 6 ঘণ্টার মধ্যে ঘটনাটি ঘটে ৷ পরে ওই যুবতী বুঝতে পারেন যে তিনি প্রতারকদের খপ্পরে পড়েছিলেন ৷ কারণ, তাঁর কাছ থেকে আবারও টাকার দাবি করা হয় ৷ তখনই তিনি রাচাকোন্ডা সাইবার ক্রাইম পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন ৷ সেই অভিযোগ নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ৷
আরও পড়ুন: এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে মহিলা যাত্রীর গায়ে প্রস্রাব মদ্যপ পুরুষ যাত্রীর !