দেরাদুন, 28 এপ্রিল : অবশেষে কার্ফু জারি হল উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে ৷ মঙ্গলবার চিত্র পূর্ণিমার দিন কুম্ভমেলার শেষ শাহি স্নান ছিল, তা মিটে যাওয়ার পরে এই সিদ্ধান্ত নিল উত্তরাখণ্ড সরকার ৷ এর আগে শাহি স্নানের দিনগুলিতে হাজারে হাজারে মানুষ প্রায় গা ঘেঁষে নদীতে ডুব দিয়েছে, কোভিডের তোয়াক্কা না করেই ৷ গত সপ্তাহেই দেশজুড়ে 17,000 মানুষ মারা গিয়েছেন করোনা সক্রমণে ৷
এদিন হরিদ্বারের ডিএম জানান, কার্ফু চলাকালীন হরিদ্বার-সহ, রুরকি, লক্সর, ভগবানপুরের শহরাঞ্চলে শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবাগুলি চালু থাকবে ৷
তিনটি শাহি স্নানের পর 18 এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতীকী কুম্ভমেলা পালনের আবেদন জানান ৷ এতে করোনা সংক্রমণের হার কমবে ৷ তাঁর এই ঘোষণার পরেই জুনা আখড়ার প্রধান স্বামী অভদেশানন্দ গিরি তাঁর অনুগামীদের উদ্দেশ্যে বলেন, "এখানেই কুম্ভ শেষ করলাম" ৷
মোদি আর স্বামী অভদেশানন্দের এই আবেদনের পরেও মঙ্গলবার সেই একই ভিড়ের ছবি দেখা গেল নদীর ধার জুড়ে ৷ শ'য়ে শ'য়ে সাধু আর ভক্তরা কোনো করোনাবিধি ছাড়াই স্নান করেন গঙ্গায় ৷ মাস্ক ছাড়া, শারীরিক দূরত্বের ভাবনা উড়িয়ে ৷
সোমবার উত্তরাখণ্ডে 5,000 নতুন কোভিড সংক্রমণের খবর পাওয়া যায় ৷ মাত্র 60 দিন আগেও 24 ঘণ্টায় এই সংখ্যা ছিল 58 ৷
আরও পড়ুন: দৈনিক আক্রান্তের রেকর্ড, দেশে প্রথমবার একদিনে মৃত ৩ হাজারের বেশি
কুম্ভমেলা শুরু হয় এপ্রিলের প্রথম দিনেই ৷ 10-15 এপ্রিলের মধ্যে কুম্ভে আসা পুণ্যার্থীদের 2000-এরও বেশি সংখ্যক মানুষ কোভিড আক্রান্ত হয় ৷ তাতেও কুম্ভমেলা সংক্ষিপ্ত করার ভাবনা বাতিল করে দেয় রাজ্য ৷
16 এপ্রিল, 30 জন সাধু করোনা আক্রান্ত হন ৷ এমনকী দেরাদুনে চিকিৎসার সময়ই করোনাসংক্রমণে মারা যান মহানির্বাণী আখড়ার প্রধান ৷ এর পরেই 30 এপ্রিল কুম্ভ শেষ হওয়ার আগেই নিরঞ্জনী আখড়া-সহ তেরোটিরও বেশি আখড়া কুম্ভ শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন ৷
এই নিয়ে কড়া সমালোচনা করে চিকিৎসকরা, বিরোধী দলের নেতারাও ৷
1 এপ্রিলই ভারতে প্রতিদিন 70,000-এরও বেশি কোভিড সংক্রমণ হচ্ছিল ৷ তার পর এই ঘটনায় বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে এই ভাইরাস "সুপার-স্প্রেডার" ৷ যদিও রাজ্য জানায় যে, তারা কোভিডের বিধিনিষেধ পালন করবে ৷
গত সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী তিরথ সিং রাওয়াত কুম্ভের সঙ্গে দিল্লির মার্কাজের তুলনা টেনে বিতর্ক তৈরি করেন ৷ আর কুম্ভের অংশগ্রহণকারী মানুষকে "আমাদের লোক" বলে চিহ্নিত করেন ৷ গত 24 ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ছাড়িয়েছে তিন লক্ষেরও বেশি ৷ এমনটাই চলছে গত ছ'দিন ধরে ৷ অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা প্রায় 29 লক্ষ ৷ শুধুমাত্র উত্তরাখণ্ডেই অ্যাকটিভ সংক্রমণ হয়েছে 39,000 জনের ৷ মার্চে এই সংখ্যা ছিল 451 ৷
কুম্ভের চারটে শাহি স্নানের শেষে কার্ফু জারি হল ৷ এবার এই সংখ্যায় কোনো পরিবর্তন হবে কি, প্রশ্ন থেকেই যায় ৷