নয়াদিল্লি, 15 জুলাই: সংসদের তৈরি করা নয়া অসংসদীয় শব্দতালিকা নিয়ে ইতিমধ্যে সরব হয়েছে তৃণমূল, কংগ্রেস, আপের মতো বিরোধী দলগুলি ৷ বামেরাও এই বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে ৷ এবার লোকসভা সেক্রেটারিয়েট থেকে প্রকাশিত 50 পাতার বই প্রত্যাহারের আর্জি জানালেন কংগ্রেস সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরী (Congress MP Adhir Ranjan Chowdhury urges Om Birla to discuss over unparliamentary words) ৷ বিষয়টি নিয়ে তিনি চিঠি লিখেছেন স্পিকার ওম বিড়লাকে ৷
18 জুলাই সংসদের বাদল অধিবেশন ৷ তার আগে 'জুমলাজীবী', 'বাল বুদ্ধি', 'কোভিড স্প্রেডার', 'স্নুপগেট'-এর মতো শব্দ এবং অন্যদিকে বহুল ব্যবহৃত 'অ্যাশেমড', 'অ্যাবিউসড', 'বিট্রেড', 'কোরাপ্ট', 'ড্রামা', 'হিপোক্রেসি', 'ইনকমপিটেন্ট' শব্দগুলিকে আসন্ন বাদল অধিবেশনের আগে অসংসদীয় (unparliamentary) আখ্যা দেওয়া হয়েছে ৷ এই প্রসঙ্গে স্পিকারকে লেখা চিঠিতে অধীর জানিয়েছেন, বিষয়টি রুলস কমিটিতে (Rules Committee) আলোচনা করা উচিত ছিল ৷
চিঠিতে অধীর ওম বিড়লাকে লিখেছেন, "সংসদের গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টির দিকে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই ৷ লোকসভা সেক্রেটারিয়েট নতুন বুকলেট প্রকাশ করেছে, যেখানে অনেক শব্দকে অসংসদীয় বলা হয়েছে ৷ তালিকায় রয়েছে 'অ্যাশেমড', 'অ্যাবিউসড', 'বিট্রেড', 'কোরাপ্ট', 'ড্রামা', 'হিপোক্রেসি', 'ইনকমপিটেন্ট' এর মতো শব্দ ৷"
আরও পড়ুন: সংসদে বিরোধীদের কণ্ঠে বেড়ি, নিষিদ্ধ শব্দগুচ্ছ টুইট করে আক্রমণ মহুয়ার
তিনি আরও লিখেছেন, "অসংসদীয় আখ্যা দেওয়া শব্দগুলির মধ্যে এমন বহু শব্দ আছে, যা আমরা প্রতিদিনের জীবন-যাপনে ব্যবহার করি ৷ এগুলি যদি সাধারণ শব্দভাণ্ডার থেকে বাদ দিয়ে দিই, তাহলে তা আমাদের অভিব্যক্তি প্রকাশের উপর প্রভাব ফেলবে ৷ তার পরিসর সংকুচিত হয়ে যাবে ৷ এই শব্দগুলিকে নিষিদ্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে এর পরিবর্তে কী শব্দ প্রয়োগ করা যায় লোকসভা সেক্রেটারিয়েটের তা উল্লখ করা উচিত ছিল ৷ এ বিষয়ে কোনও রাজনৈতিক দলের নেতার সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি ৷ তাই রুলস কমিটির বৈঠক করা উচিত ছিল ৷"
কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী ওম বিড়লাকে সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে এই বিষয়ে একটি বৈঠক করার অনুরোধ জানিয়েছেন ৷ ততদিন পর্যন্ত এই তালিকায় স্থগিতাদেশ জারি থাকুক, লিখেছেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা ৷
অসংসদীয় শব্দের তালিকা নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণের মাঝে বৃহস্পতিবার লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন ৷ "বাদ দেওয়া শব্দগুলি বিরোধী শিবির যেমন ব্যবহার করেছে, তেমনই শাসকদলও ৷ এর মধ্যে এমন কোনও নির্দিষ্ট শব্দ নেই, যা শুধুমাত্র বিরোধীরাই বলেছে ৷" তাঁর দাবি, কোনও শব্দ নিষিদ্ধ করা হয়নি ৷ আগে থেকে যে শব্দগুলি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, সেগুলি বাদ রাখা হয়েছে ৷ তিনি বলেন, "সদস্যরা স্বাধীন ভাবে তাঁদের মতামত প্রকাশ করতেই পারেন ৷ কেউ তাঁদের অধিকার কেড়ে নিতে পারবে না ৷ তবে যা হবে, সবই সংসদের শিষ্টাচার মেনে ৷"
আরও পড়ুন: 'প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনজীবী বলতে পারবেন, বিরোধীরা জুমলাজীবী বললেই অসংসদীয়': অভিষেক