প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগে ভারতের সাম্প্রতিক নীতি সংশোধনে বিরক্ত চিন । সূত্রের খবর, প্রতিবেশী দেশের FDI প্রস্তাবে কেন্দ্রের অনুমোদন বাধ্যতামূলক করা, মুক্ত বাণিজ্যের পরিপন্থী বলে মনে করছে বেজিং । পিপলস ব্যাঙ্ক অফ চায়না, ভারতের অন্যতম বৃহৎ বেসরকারি ব্যাঙ্ক HDFC-র শেয়ার কেনার পরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার । এই সাম্প্রতিক সংশোধন নেপাল, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার ও ভুটানের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য । কিন্তু শুধুমাত্র চিন রুষ্ট, কারণ এতে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে কৌশলগতভাবে মুঠোয় নেওয়ার চেষ্টা ধাক্কা খেয়েছে । ভারতের প্রধান 18টি স্টার্টআপে চিনা বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় 30 হাজার কোটি টাকা । ব্রুকলিন ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, রিয়েল এস্টেট থেকে অটোমোবাইল শিল্পে বহু চিনা সংস্থা বিপুল বিনিয়োগ করেছে । সরাসরি চিনা বিনিয়োগ আছে, এমন সংস্থার সংখ্যা 800 । চিন যাতে প্যানডেমিককে কাজে লাগিয়ে অনৈতিক সুবিধে নিতে না পারে, সেজন্য ইতিমধ্যেই জাপান, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন ও জার্মানি তাদের FDI নীতির পরিবর্তন করেছে । যত বেশি দেশ তাদের এই গেমপ্ল্যান বুঝে ফেলছে, ততই চিন অধৈর্য্য হয়ে পড়ছে । একধার এগিয়ে, চিন FDI-এর ওপর এই নিষেধাজ্ঞাকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়েছে ।
বিশ্ব অর্থনীতি যখন টলমল করছে, তখন চিন কোভিড-19-এর ভয়াবহ প্রভাবের ফায়দা তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । বিপুল আর্থিক ক্ষমতা ও রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার অধিকারী চিনের সংস্থাগুলো অন্যান্য দেশে তাদের অংশীদারি বাড়াবার প্রতিযোগিতায় নেমেছে । এই সুযোগসন্ধানী বিনিয়োগকে থমকে দেওয়ার চেষ্টায় তারা রেগে গেছে । বেজিং তার অনমনীয় এবং আত্মপরিপূরক উচ্চাকাঙ্খার জন্য পরিচিত । ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজ়েশনে যোগদানের 19 বছর পরেও চিন কপিরাইট, ট্রেডমার্ক এবং অন্যান্য মেধাস্বত্ব রক্ষায় ক্রমাগত ব্যর্থ হচ্ছে । চিনের পণ্যের খারাপ মান এবং ৭০ শতাংশ পণ্যই নকল বলে একটানা অভিযোগ উঠছে। আতসবাজি থেকে খেলনা, চিনা পণ্যে ভারতীয় বাজার ছেয়ে গেছে । আমাদের দেশীয় উৎপাদন শিল্পের তাহলে কী হবে? সুপার পাওয়ারে পরিণত হওয়ার ইচ্ছায় চিন বার বার WTO-র বিধি লঙ্ঘন করে চলেছে । আর বহু দেশ যখন প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে তাদের FDI নীতি বদলাচ্ছে, তখন এই চিনই মুক্ত ও নৈতিক বাণিজ্য নিয়ে জ্ঞান বণ্টন করছে । বিশ্বজুড়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, FDI-এর শর্ত WTO-র আওতায় পড়ে না, এবং ভারতের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ সঠিক; আর এতেই চিনের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে পড়ছে । দেশের পক্ষে কোনটা ভালো, সেটা ঠিক করবে সরকার এবং নাগরিকরা । চিনের এখানে কোনও বক্তব্য থাকতে পারে না । এটাই সময় যখন এধরনের দু-মুখো নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে ।