ETV Bharat / bharat

"আফগানিস্তানে ইতিহাস তৈরি হল "

শিক্ষা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত বিনিয়োগ করেছে । আফগানিস্তানের মানুষ ভারতের এই সাহায্যের জন্য কৃতজ্ঞ । এই প্রক্রিয়ায় অন্য প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে ভারতকেও একটা কৌশলগত অংশীদার ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার অবস্থানে দেখতে আফগান ।

Fawzia Koofi
Fawzia Koofi
author img

By

Published : Sep 19, 2020, 7:49 PM IST

Updated : Sep 20, 2020, 6:23 PM IST

ফওজ়িয়া কুফি । একজন আন্দোলনকারী । আফগানিস্তানের জাতীয় আইনসভার সদস্য । একজন লেখিকা । আর এই সব কিছুর উপরেও তিনি একজন মহিলা, যিনি থাকেন বাদাকশন প্রদেশে । একজন মহিলা যে একজন পুরুষের সমান, তা ওই দেশে কখনও মানা হয়নি । দুই দশক ধরে লড়াই করে সেই বিষয়টিতে তিনি পরিবর্তন আনতে পেরেছেন ।

কুফিকে থামাতে তাঁকে হত্যার একাধিক চেষ্টা করা হয়েছে । চলতি বছরের অগস্ট মাসে তাঁকে হত্যা করার শেষ চেষ্টাটি করা হয়। কাবুল শহরে ঘটনাটি ঘটে । যদিও তিনি সেখান থেকে পালাতে সক্ষম হয়েছেন । ফওজ়িয়া এখন দোহায় রয়েছেন । সেখানে তালিবানের সঙ্গে সমঝোতা সংক্রান্ত আলোচনা করছেন ।

  • এই শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে দোহা থেকে ETV ভারতের বিলাল ভাটের সঙ্গে একান্ত সাক্ষারকারে ফওজ়িয়া কুফি ।

ETV ভারত : আফগানিস্তানের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় আপনাকে সমান অধিকার দেওয়ার বিষয়ে তালিবানরা কোনও দিনই সম্মত ছিল না । অথচ তাঁদের সঙ্গেই আপনি আলোচনার এক টেবিলে বসতে চলেছেন । এই বিষয়টি যখন আপনি প্রথমবার শুনলেন, তখন আপনার কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল ?

ফওজ়িয়া : আমি মনে করে আফগানিস্তানের মহিলারা তালিবান সরকারের শিকার । আমাদের মৌলিক অধিকার দেওয়া হয়নি । শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণের অধিকার দেওয়া হয়নি । আমরা চাই না যে মহিলারা আবার যুদ্ধের শিকার হোক । এই আলোচনায় অংশীদার হয়ে মহিলারা সমঝোতার টেবিলে থাকুন, এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপর্ণ বিষয় । আসলে আমরা সেই বদ্ধমূল ধারণাগুলিকে ভেঙে দিতে চাই, যা শুধু তালিবানদের সময় থেকে নয় ঐতিহাসিক ভাবে আফগানিস্তানে রয়েছে । সমস্ত শান্তি আলোচনাগুলিতে পুরুষরাই থাকেন । তাই আমি মনে করি এই ক্ষেত্রে ইতিহাস তৈরি হল । আর এতে আমি নিজেকে আরও শক্তিশালী অনুভব করছি । কিন্তু এর সঙ্গে অনেক দায়িত্বও চলে এল ।

ETV ভারত : মহিলাদের অধিকার, শিশু কন্যাদের অধিকার এবং সমগ্র অঞ্চলে মহিলাদের উন্নতির জন্য আপনি সংসদের ভিতরে ও বাইরে সরব হয়েছেন । তারা কি সত্যিই মহিলাদের জন্য সমান অধিকারের ব্যবস্থা করবেন ? এই আলোচনা থেকে আপনি কতটা আশাবাদী ?

ফওজ়িয়া : প্রথমত, আমাদের এই বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্ট হতে হবে আফগানিস্তানে কোনও একটি নির্দিষ্ট মতাদর্শ কতৃত্ব স্থাপন করবে না । ইসলামের ব্যখ্যার মাধ্যমে মৌলবাদীদের মতাদর্শ হোক বা লিবারেলদের মতাদর্শ । আমাদের আরও উন্নত জীবন ও ইসলামের আরও উন্নত সংজ্ঞার উপর নির্ভর করে এগিয়ে চলতে হবে । তাই আমরা এমন একটা আফগানিস্তানের জন্য লড়াই করছি, যেখানে আমরা আমাদের প্রতিবেশীর সঙ্গে শান্তিতে বসবাস করতে পারি । লিঙ্গের ঊর্ধ্বে উঠে আমরা এমন একটা আফগানিস্তান চাই যা সকলের জন্য সমান ভাবে প্রতিনিধিত্ব করবে । আফিগানিস্তানের মহিলাদের জন্য নারী শিক্ষাই মূল ভিত্তি । এটা আফগানিস্তানের পুরুষদের জন্যও সমান ভাবে প্রযোজ্য । শিক্ষার সুযোগ না পেলে কোনও রকমের উন্নতি সম্ভব নয় । আমরা এখন দোহায় রয়েছি । আমরা নীতি ও পদ্ধতি এবং অন্য কার্যকরী দিকগুলি নিয়ে আলোচনা করছি । কারণ, আমরা চাই ভিত্তিটা সঠিক হোক । যখন ভিত্তিটা সঠিক ভাবে করা হবে, তখন এই আলোচনাগুলি আরও সহজ হয়ে যাবে । এই পর্যায়ে সম্ভবত আমরা মহিলাদের অধিকার নিয়ে আলোচনা করতে পারছি না । কারণ, এটা খুবই স্পর্শকাতর বিষয় । সবে আলোচনা শুরু হয়েছে । এটা যত এগোবে, আশা করছি যে আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিকে উত্থাপন করা যাবে । যাতে একজনের মতামত অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া যায় । আমরা এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করতে চাই, যেখানে সবাই শান্তিতে ও সমৃদ্ধিতে জীবনযাপন করতে পারেন ।

একান্ত সাক্ষারকারে ফওজ়িয়া কুফি

ETV ভারত : একেবারে শুরুতে তালিবানরা সকলের কাছে স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে তারা আফগানিস্তানে ইসলামের আইন চায় । এটা নিয়ে অন্য দলগুলির প্রতিক্রিয়া কী এবং আপনি কি দেশকে নতুন কর্মসূচির মধ্যে দেখতে চান ?

ফওজ়িয়া : আফগানিস্তান হল একটি মুসিলম দেশ । আমাদের সংবিধান বলছে যে এমন কোনও আইন প্রয়োগ করা হবে না যা ইসলামের বিরুদ্ধে যায় । সংখ্যালঘু ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও যাতে তাদের বিশ্বাস অনুসরণ করে চলতে পারেন, তার সুরক্ষার দায়িত্বও সংবিধান সুনিশ্চিত করেছে । এবার বিষয়টি হল বৈচিত্র ও অন্তর্ভুক্তির । একটি আদর্শের উপর জোর করে অন্য একটি আদর্শ চাপিয়ে দেওয়া সর্বত্র কাজ করে না । আমরা এমন একটা আফগানিস্তানের জন্য লড়াই করছি যে প্রত্যেকের ভোট দেওয়ার অধিকার থাকবে । ‘একজন ব্যক্তির একটা ভোট’ । কোনও লিঙ্গ বিভেদ ও রাজনৈতিক বিশ্বাস ছাড়াই । শান্তির আলোচনার শেষে এই আফগানিস্তান আমরা পাব বলেই আশা করছি ।

ETV ভারত : আপনি অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি উল্লেখ করলেন । কিন্তু আফগানিস্তানে মুসলিম নয় এমন মানুষদের উপর অত্যাচারের খবর পাওয়া যাচ্ছে । আর সেই সব মানুষদের উদ্ধার করছে ভারত । যেমন শিখ সম্প্রদায়ের কয়েকজনকে কাবুল, জালালাবাদ ও অন্যান্য কয়েকটি জায়গা অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছে । আফগানিস্তানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা তাঁদের ধর্মাচরণ যথাযথ ভাবে করতে পারবেন, এই বিষয়টি আপনি কীভাবে সুনিশ্চিত করবেন ?

ফওজ়িয়া : ধর্মীয় ও সম্প্রদায়গত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি শান্তি আলোচনার মুখ্য বিষয়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত । এটা কোনও পছন্দ নয় । এটা আজকের আফগানিস্তানের জন্য প্রয়োজনীয় । আমি বুঝতে পারছি যে আমাদের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে কিছু সমস্যা রয়েছে । কিছু আক্রমণও হয়েছে । ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারও হয়েছে । কিন্তু এটা হয়েছে যুদ্ধের জন্য। আমাদের দুইটি বিষয় বুঝতে হবে । প্রথমে আমাদের সহিষ্ণুতার বিষয়টি ভাগ করতে হবে । এবং দ্বিতীয়ত আফগানিস্তানে সামাজিক ভাবে গ্রহণ করতে হবে । আমরা আমাদের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিয়ে গর্বিত । আমাদের ইতিহাসের সমস্ত রকম

পরিস্থিতিতেই তাঁরা আমাদের সঙ্গে থেকেছেন । সেখানে আগ্রহ ও গ্রহণ করার বিষয়টি রয়েছে । সমাজে কোনও বঞ্চনা নেই । কিন্তু যখন তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও রাজনৈতিক গোষ্ঠী আক্রমণ করে বা কোনও মৌলবাদী সৈন্যরা আক্রমণ করে, যেমন সম্প্রতি হয়েছে, আর এই বিষয়টি সম্পর্কেও আমরা অবগত । তাঁদের আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে যেতে দেখে আমরা খুবই দুঃখিত । কিন্তু তাঁদের অধিকার রক্ষা আমাদের পছন্দের বিষয় নয় । এটা প্রয়োজনীয় । যেমনটা আমি আগে বলছিলাম । সুতরাং, আলোচনার মুখ্য বিষয়টি প্রত্যকের কাছে স্পষ্ট হওয়া উচিত । আমাদের কাছে সর্বব্যাপী আফগানিস্তানের প্রয়োজন । আর এই নিয়ে কোনও সমঝোতা চলবে না ।

ETV ভারত : আফগানিস্তানের উন্নয়ন মূলক কর্মসূচিগুলোতে ভারত ব্যাপকভাবে অংশ নিয়েছে । তালিবানের সঙ্গে চুক্তি হয়ে যাওয়ার পর ভারতের অবস্থান কেমন হবে বলে আপনি মনে করছেন ?

ফওজ়িয়া : শিক্ষা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত বিনিয়োগ করেছে বলে আমি জানি । আর আফগানিস্তানের মানুষ আফগানিস্তানকে ভারতের এই সাহায্যের জন্য কৃতজ্ঞ । আমরা এই প্রক্রিয়ায় অন্য প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে ভারতকেও একটা কৌশলগত অংশীদার ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার অবস্থানে দেখতে চাই ।

ETV ভারত : আপনার মূল দাবিগুলি কী এবং তালিবানদের দাবিগুলি কী ?

ফওজ়িয়া : আমরা এখন নিয়ম ও পদ্ধতি এবং কোড অফ কন্ডাক্টস নিয়ে আলোচনা করছি ।

ফওজ়িয়া কুফি । একজন আন্দোলনকারী । আফগানিস্তানের জাতীয় আইনসভার সদস্য । একজন লেখিকা । আর এই সব কিছুর উপরেও তিনি একজন মহিলা, যিনি থাকেন বাদাকশন প্রদেশে । একজন মহিলা যে একজন পুরুষের সমান, তা ওই দেশে কখনও মানা হয়নি । দুই দশক ধরে লড়াই করে সেই বিষয়টিতে তিনি পরিবর্তন আনতে পেরেছেন ।

কুফিকে থামাতে তাঁকে হত্যার একাধিক চেষ্টা করা হয়েছে । চলতি বছরের অগস্ট মাসে তাঁকে হত্যা করার শেষ চেষ্টাটি করা হয়। কাবুল শহরে ঘটনাটি ঘটে । যদিও তিনি সেখান থেকে পালাতে সক্ষম হয়েছেন । ফওজ়িয়া এখন দোহায় রয়েছেন । সেখানে তালিবানের সঙ্গে সমঝোতা সংক্রান্ত আলোচনা করছেন ।

  • এই শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে দোহা থেকে ETV ভারতের বিলাল ভাটের সঙ্গে একান্ত সাক্ষারকারে ফওজ়িয়া কুফি ।

ETV ভারত : আফগানিস্তানের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় আপনাকে সমান অধিকার দেওয়ার বিষয়ে তালিবানরা কোনও দিনই সম্মত ছিল না । অথচ তাঁদের সঙ্গেই আপনি আলোচনার এক টেবিলে বসতে চলেছেন । এই বিষয়টি যখন আপনি প্রথমবার শুনলেন, তখন আপনার কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল ?

ফওজ়িয়া : আমি মনে করে আফগানিস্তানের মহিলারা তালিবান সরকারের শিকার । আমাদের মৌলিক অধিকার দেওয়া হয়নি । শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণের অধিকার দেওয়া হয়নি । আমরা চাই না যে মহিলারা আবার যুদ্ধের শিকার হোক । এই আলোচনায় অংশীদার হয়ে মহিলারা সমঝোতার টেবিলে থাকুন, এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপর্ণ বিষয় । আসলে আমরা সেই বদ্ধমূল ধারণাগুলিকে ভেঙে দিতে চাই, যা শুধু তালিবানদের সময় থেকে নয় ঐতিহাসিক ভাবে আফগানিস্তানে রয়েছে । সমস্ত শান্তি আলোচনাগুলিতে পুরুষরাই থাকেন । তাই আমি মনে করি এই ক্ষেত্রে ইতিহাস তৈরি হল । আর এতে আমি নিজেকে আরও শক্তিশালী অনুভব করছি । কিন্তু এর সঙ্গে অনেক দায়িত্বও চলে এল ।

ETV ভারত : মহিলাদের অধিকার, শিশু কন্যাদের অধিকার এবং সমগ্র অঞ্চলে মহিলাদের উন্নতির জন্য আপনি সংসদের ভিতরে ও বাইরে সরব হয়েছেন । তারা কি সত্যিই মহিলাদের জন্য সমান অধিকারের ব্যবস্থা করবেন ? এই আলোচনা থেকে আপনি কতটা আশাবাদী ?

ফওজ়িয়া : প্রথমত, আমাদের এই বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্ট হতে হবে আফগানিস্তানে কোনও একটি নির্দিষ্ট মতাদর্শ কতৃত্ব স্থাপন করবে না । ইসলামের ব্যখ্যার মাধ্যমে মৌলবাদীদের মতাদর্শ হোক বা লিবারেলদের মতাদর্শ । আমাদের আরও উন্নত জীবন ও ইসলামের আরও উন্নত সংজ্ঞার উপর নির্ভর করে এগিয়ে চলতে হবে । তাই আমরা এমন একটা আফগানিস্তানের জন্য লড়াই করছি, যেখানে আমরা আমাদের প্রতিবেশীর সঙ্গে শান্তিতে বসবাস করতে পারি । লিঙ্গের ঊর্ধ্বে উঠে আমরা এমন একটা আফগানিস্তান চাই যা সকলের জন্য সমান ভাবে প্রতিনিধিত্ব করবে । আফিগানিস্তানের মহিলাদের জন্য নারী শিক্ষাই মূল ভিত্তি । এটা আফগানিস্তানের পুরুষদের জন্যও সমান ভাবে প্রযোজ্য । শিক্ষার সুযোগ না পেলে কোনও রকমের উন্নতি সম্ভব নয় । আমরা এখন দোহায় রয়েছি । আমরা নীতি ও পদ্ধতি এবং অন্য কার্যকরী দিকগুলি নিয়ে আলোচনা করছি । কারণ, আমরা চাই ভিত্তিটা সঠিক হোক । যখন ভিত্তিটা সঠিক ভাবে করা হবে, তখন এই আলোচনাগুলি আরও সহজ হয়ে যাবে । এই পর্যায়ে সম্ভবত আমরা মহিলাদের অধিকার নিয়ে আলোচনা করতে পারছি না । কারণ, এটা খুবই স্পর্শকাতর বিষয় । সবে আলোচনা শুরু হয়েছে । এটা যত এগোবে, আশা করছি যে আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিকে উত্থাপন করা যাবে । যাতে একজনের মতামত অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া যায় । আমরা এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করতে চাই, যেখানে সবাই শান্তিতে ও সমৃদ্ধিতে জীবনযাপন করতে পারেন ।

একান্ত সাক্ষারকারে ফওজ়িয়া কুফি

ETV ভারত : একেবারে শুরুতে তালিবানরা সকলের কাছে স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে তারা আফগানিস্তানে ইসলামের আইন চায় । এটা নিয়ে অন্য দলগুলির প্রতিক্রিয়া কী এবং আপনি কি দেশকে নতুন কর্মসূচির মধ্যে দেখতে চান ?

ফওজ়িয়া : আফগানিস্তান হল একটি মুসিলম দেশ । আমাদের সংবিধান বলছে যে এমন কোনও আইন প্রয়োগ করা হবে না যা ইসলামের বিরুদ্ধে যায় । সংখ্যালঘু ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও যাতে তাদের বিশ্বাস অনুসরণ করে চলতে পারেন, তার সুরক্ষার দায়িত্বও সংবিধান সুনিশ্চিত করেছে । এবার বিষয়টি হল বৈচিত্র ও অন্তর্ভুক্তির । একটি আদর্শের উপর জোর করে অন্য একটি আদর্শ চাপিয়ে দেওয়া সর্বত্র কাজ করে না । আমরা এমন একটা আফগানিস্তানের জন্য লড়াই করছি যে প্রত্যেকের ভোট দেওয়ার অধিকার থাকবে । ‘একজন ব্যক্তির একটা ভোট’ । কোনও লিঙ্গ বিভেদ ও রাজনৈতিক বিশ্বাস ছাড়াই । শান্তির আলোচনার শেষে এই আফগানিস্তান আমরা পাব বলেই আশা করছি ।

ETV ভারত : আপনি অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি উল্লেখ করলেন । কিন্তু আফগানিস্তানে মুসলিম নয় এমন মানুষদের উপর অত্যাচারের খবর পাওয়া যাচ্ছে । আর সেই সব মানুষদের উদ্ধার করছে ভারত । যেমন শিখ সম্প্রদায়ের কয়েকজনকে কাবুল, জালালাবাদ ও অন্যান্য কয়েকটি জায়গা অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছে । আফগানিস্তানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা তাঁদের ধর্মাচরণ যথাযথ ভাবে করতে পারবেন, এই বিষয়টি আপনি কীভাবে সুনিশ্চিত করবেন ?

ফওজ়িয়া : ধর্মীয় ও সম্প্রদায়গত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি শান্তি আলোচনার মুখ্য বিষয়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত । এটা কোনও পছন্দ নয় । এটা আজকের আফগানিস্তানের জন্য প্রয়োজনীয় । আমি বুঝতে পারছি যে আমাদের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে কিছু সমস্যা রয়েছে । কিছু আক্রমণও হয়েছে । ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারও হয়েছে । কিন্তু এটা হয়েছে যুদ্ধের জন্য। আমাদের দুইটি বিষয় বুঝতে হবে । প্রথমে আমাদের সহিষ্ণুতার বিষয়টি ভাগ করতে হবে । এবং দ্বিতীয়ত আফগানিস্তানে সামাজিক ভাবে গ্রহণ করতে হবে । আমরা আমাদের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিয়ে গর্বিত । আমাদের ইতিহাসের সমস্ত রকম

পরিস্থিতিতেই তাঁরা আমাদের সঙ্গে থেকেছেন । সেখানে আগ্রহ ও গ্রহণ করার বিষয়টি রয়েছে । সমাজে কোনও বঞ্চনা নেই । কিন্তু যখন তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও রাজনৈতিক গোষ্ঠী আক্রমণ করে বা কোনও মৌলবাদী সৈন্যরা আক্রমণ করে, যেমন সম্প্রতি হয়েছে, আর এই বিষয়টি সম্পর্কেও আমরা অবগত । তাঁদের আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে যেতে দেখে আমরা খুবই দুঃখিত । কিন্তু তাঁদের অধিকার রক্ষা আমাদের পছন্দের বিষয় নয় । এটা প্রয়োজনীয় । যেমনটা আমি আগে বলছিলাম । সুতরাং, আলোচনার মুখ্য বিষয়টি প্রত্যকের কাছে স্পষ্ট হওয়া উচিত । আমাদের কাছে সর্বব্যাপী আফগানিস্তানের প্রয়োজন । আর এই নিয়ে কোনও সমঝোতা চলবে না ।

ETV ভারত : আফগানিস্তানের উন্নয়ন মূলক কর্মসূচিগুলোতে ভারত ব্যাপকভাবে অংশ নিয়েছে । তালিবানের সঙ্গে চুক্তি হয়ে যাওয়ার পর ভারতের অবস্থান কেমন হবে বলে আপনি মনে করছেন ?

ফওজ়িয়া : শিক্ষা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত বিনিয়োগ করেছে বলে আমি জানি । আর আফগানিস্তানের মানুষ আফগানিস্তানকে ভারতের এই সাহায্যের জন্য কৃতজ্ঞ । আমরা এই প্রক্রিয়ায় অন্য প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে ভারতকেও একটা কৌশলগত অংশীদার ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার অবস্থানে দেখতে চাই ।

ETV ভারত : আপনার মূল দাবিগুলি কী এবং তালিবানদের দাবিগুলি কী ?

ফওজ়িয়া : আমরা এখন নিয়ম ও পদ্ধতি এবং কোড অফ কন্ডাক্টস নিয়ে আলোচনা করছি ।

Last Updated : Sep 20, 2020, 6:23 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.