দিল্লি, 18 জুলাই : কোরোনা প্যানডেমিক প্রভাব ফেলেছে রাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থায় । বন্ধ হয়েছে স্কুল এবং কলেজ । তাদের নির্ভরশীল হতে হয়েছে অনলাইন ক্লাসের উপর । লকডাউন শুরুর পর পর স্কুল কলেজগুলির অনলাইন ক্লাসে প্রথমে দ্বিধাবোধ ছিল । কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনেক স্কুল এবং কলেজ অনলাইন ক্লাস থেকে উপকৃত হয়েছে ।
ভারতে মোট এক কোটি নয় লাখ শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন । এই কম সময়ে তাঁরা অনলাইন শিক্ষা মডেলকে গ্রহণ করেছে । গোটা দেশে কোটি কোটি শিক্ষার্থীও এই শিক্ষাব্যবস্থাকে গ্রহণ করেছেন । এই সময় পাঠ্যক্রম নিয়ে শিক্ষার্থীরা চিন্তায় । সরকার এবং ন্যাশানল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (NCERT) কয়েকটি শ্রেণিতে পাঠ্যক্রমে অনেক পরিবর্তন এনেছে । মানব সম্পদ উন্নয়নমন্ত্রক সবসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে ।
মানব সম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক বলেন, NCERT পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন করেছে । সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের উপর চাপ কমেছে । আরও গঠনগতভাবে তাঁরা পড়াশোনা করতে পারবেন ।
মানব সম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী বলেন, এই প্যানডেমিকের সময় ভারত পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে । সেক্ষেত্রে ভারত নিজেই উদাহরণ তৈরি করেছে । এই অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থার ফলে ট্রাডিশনাল শিক্ষাব্যবস্থায় কি কোনও প্রভাব ফেলবে, এই প্রশ্নও করা হয় নিশাঙ্ককে । তিনি বলেন, "আমরা যখন অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থাকে গ্রহণ করেছিলাম, সেই সময়টা কঠিন ছিল অবশ্যই । এখনও বিষয়টা এমন নয় যে, আমরা সম্পূর্ণ বিষয়টি জানি । যদি আমরা চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে না পারি তবে আমরা এগোতেও পারব না ।"
এখনও পর্যন্ত সব জায়গায় যদিও শিক্ষার আলো পৌঁছায়নি । পিছনের সারির শিক্ষার্থীরা এখনও শিক্ষাব্যবস্থা থেকে বিচ্যুত । তাও চেষ্টা করতে হবে । কঠিন দিনগুলোয় মানুষের আর্থিক অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে । দরিদ্র মানুষকে সাহায্য করার জন্য সরকারের তরফে সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে বলে আশ্বাস দেন মানব সম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী । যাঁদের স্মার্টফোন নেই, তাঁদের কাছে পৌঁছানোও আমাদের লক্ষ্য । কেন্দ্রের লক্ষ্য, 'একটা ক্লাস, একটা চ্যানেল' ।
গ্রামীণ এলাকায়ও পৌঁছাতে চায় সরকার । সেখানে শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষা পৌঁছে দেওয়াও কেন্দ্রের লক্ষ্য । বেসরকারি স্কুল এবং সরকারের মিলিত প্রচেষ্টায় এই ডিজিটাল ব্যবধানকে পূরণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে ।
বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কী পদক্ষেপের কথা ভাবা হচ্ছে, প্রশ্ন করা হয় রমেশ পোখরিয়ালকে । তিনি জানান, কেন্দ্রের তরফে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে । স্কুল এবং কলেজগুলিকে সেইভাবে নির্দেশ দেওয়া হবে ।
শিক্ষার ক্ষেত্রে ভারত যথেষ্ট প্রগতিশীল । এই বছরই 50,000 বিদেশী শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য নাম নথিভুক্ত করেছেন । গুগলের সঙ্গেও চুক্তির কথা উল্লেখ করেন রমেশ । বলেন, ভারতীয়রা নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়কে গুরুত্ব দেন না । অথচ আমাদের সু্ন্দর পিচাইয়ের মতো একজন প্রাক্তন IIT ছাত্র রয়েছে । আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আমাদের সম্মান করতে হবে । তবেই বিশ্বে উল্লেখযোগ্য স্থান বানাতে পারবে ভারত ।