ক্ষমা চাওয়ার আইন ! শুনতে অবাক লাগলেও এই কথাই সত্যি । তবে এই আইন ক্ষমা চাইতে বাধ্য করে না । অবাধে ক্ষমা চাওয়ার অধিকার দেয় । আবার এই বিষয়টিও স্পষ্ট করে, দুঃখিত বলা মানেই এই নয় যে আপনি কোনও অপরাধ করেছেন । কারণ 'দুঃখিত'... এই একটা শব্দই অনেক সমীকরণ বদলে দিতে পারে । থামিয়ে দিতে পারে যুদ্ধও । কিন্তু, পৃথিবীর কোন দেশের আইন এমন ক্ষমা চাওয়ার অবাধ অধিকার দেয় ?
"আমি দুঃখিত", হয়ত পৃথিবীর সবথেকে সুন্দর ও নম্র বাক্যগুলির মধ্যে একটি । কিন্তু আমরা কখন 'দুঃখিত' বলি ? ক্ষমা চাওয়ার আক্ষরিক অর্থ কী ? ভেবে দেখেছি ? অবশ্যই কোনও ভুল বা অপরাধ করলে ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গ আসে । এই একটা শব্দ পৃথিবীর অনেক সম্পর্কের সমীকরণ, টানা-পোড়েনের ভিত্তি । অনেকেই সরি বলতে পারেন না । আবার অনেকেই বারবার বলেন, আমি দুঃখিত ।
এক রিপোর্ট বলছে, অন্য যে কোনও দেশের থেকে কানাডায় দুঃখিত বলার প্রচলন নাকি বেশি । সেখানে প্রায় প্রতি পদেই মানুষ দুঃখিত বলেন । তাই 2009 সালে ওই দেশে পাশ হয়েছে 'ক্ষমা চাওয়ার আইন' বা 'অ্যাপোলজি অ্যাক্ট' ।
কানাডার ওন্টারিও, বিসি এবং নভা স্কটিয়া । এই তিন প্রদেশে সক্রিয় আইনটি । ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা নয়, অবাধ ক্ষমা চাওয়ার অধিকার দেয় এই আইন । আসলে এই প্রদেশের মানুষ এত বেশি দুঃখিত শব্দের ব্যবহার করেন । অনেক সময় হয়ত, কোনও অন্যায় বা ভুল না করেও দুঃখিত বলেন তাঁরা । এতটাই নম্র । তাই এই আইন জানায়, যখন অনেক সময় দুঃখিত বলছেন তার মানে এই নয় ওই ব্যক্তি কোনও অন্যায় বা অপরাধ করেছেন । অর্থাৎ, সরি বলার সঙ্গে অন্যায়ের প্রেক্ষিত আসছে না ।
অ্যাপোলজি অ্যাক্ট বা ক্ষমা চাওয়ার আইন, 2009 অনুযায়ী, সহানুভূতি এবং দুঃখপ্রকাশের অভিব্যক্তি 'ক্ষমা চাওয়া' । একজন মানুষ তাঁর কোনও শব্দ বা কাজের জন্য যদি সংকোচ বোধ করেন, সেক্ষেত্রে এই বিবৃতি প্রকাশ করেন । সেক্ষেত্রে, সেই কথা বা কাজ কোনও অন্যায় না-ও হতে পারে ।