ETV Bharat / bharat

কৃষক বিক্ষোভ : কে পেল অক্সিজেন... কে গেল ব্যাকফুটে

ট্রাক্টর নিয়ে তাণ্ডবে কিছুটা হলেও স্নায়ুর চাপে ফেলছে 7, রেস কোর্স রোডকে ? নাকি লাগামছাড়া বিশৃঙ্খলায় কিছুটা ব্যাকফুটে কৃষকরা ?

ট্রাক্টর মিছিল
ট্রাক্টর মিছিল
author img

By

Published : Jan 26, 2021, 10:44 PM IST

Updated : Jan 26, 2021, 10:51 PM IST

দিল্লি, 26 জানুয়ারি : দেশের 72 তম সাধারণতন্ত্র দিবস । সকাল থেকেই গোটা দেশের নজর ছিল রাজধানী দিকে । দিল্লির রাজপথে লালকেল্লার সামনে কুচকাওয়াজ চলছিল । সাজানো ট্যাবলো, ফ্লাই পাস্ট... সবই চলছিল নিয়মমতো । আর ঠিক সেই সময়েই রাজধানীর সীমান্তে ট্র্যাক্টর ব়্যালির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন আন্দোলনরত কৃষকরা । বহু টালবাহানার পর দিল্লি পুলিশ অনুমতি দিয়েছিল কৃষকদের রাজধানীর ভিতরে প্রবেশ করার । সীমান্ত থেকে ব্যারিকেড সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল ।

কথা ছিল, নির্ধারিত তিনটি রুট (সিঙ্ঘু, টিকরি ও গাজ়িপুর সীমান্ত) দিয়ে কৃষকরা দিল্লিতে প্রবেশ করবেন । ট্রাক্টর নিয়ে মিছিল করে আবার যেখান থেকে শুরু হয়েছিল, সেখানে ফিরে আসার কথা ছিল । কিন্তু আদতে হল পুরো উলটো । সত্তর দিনের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হঠাৎ ছন্দপতন । চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা । নির্দিষ্ট রুট ছেড়ে ব্যারিকেড ভেঙে রাজধানীর ভিতরে ঢুকতে থাকে সারি সারি ট্র্যাক্টর । পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সীমান্তে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল । ফলে রাজধানীর ভিতরে পুলিশি নিরাপত্তা ছিল অনেকটাই আলগা । একের পর এক ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যেতে থাকেন কৃষকরা । গন্তব্য ছিল লালকেল্লা । রীতিমতো তাণ্ডব চলে দিল্লির বুকে । লালকেল্লার মাথায় কৃষক আন্দোলনের পতাকা ঝুলিয়ে দেন কৃষকরা । চলল দফায় দফায় সংঘর্ষ, ফাটানো হল কাঁদানে গ্যাসের শেল । লাঠিচার্জও হল ।

সাধারণতন্ত্র দিবসের জন্য আজ রাজধানীর দিকে নজর ছিল দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের । নজর ছিল দু'মাস ধরে চলা কৃষক আন্দোলনের দিকেও । প্রথম সারির বেশ কিছু বিদেশি সংবাদমাধ্যমে ট্র্যাক্টর ব়্যালির সরাসরি সম্প্রচারও করা হয় । আজকের এই চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার ছবিতে দেশের মুখ পুড়ল বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ ।

আরও পড়ুন : "কেন্দ্রের সংবেদনশীলতার অভাবেই" ট্রাক্টর ব়্যালিতে অশান্তি, টুইট মমতার

সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও । তবে ব্রিটেনে কোরোনার নতুন স্ট্রেনের প্রাদুর্ভাবের কারণে ভারত-সফরের সূচি বাতিল করেছিলেন তিনি । সশরীরে হাজির থাকতে না পারলেও একটি ভিডিয়ো বার্তা শেয়ার করেছেন বরিস । সেখানে আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারায়, তিনি যে অনুতপ্ত, তা জানিয়েছেন । কেন্দ্রের কাছে স্বস্তির বিষয় এটাই যে, দিল্লির বিশৃঙ্খল তাণ্ডব নিয়ে কোনও মুখ খোলেননি ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী । বরিস যদি আজ দিল্লিতে থাকতেন, তাহলে হয়ত বিশ্বের দরবারে মোদি সরকারের মুখ লোকানোর আর জায়গা থাকত না । অন্তত এমনই মনে করছেন কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা । সেদিক থেকে দেখলে, বরিস আজ সাধারণতন্ত্র দিবসে থাকতে না পারায় কিছুটা হলেও যেন হাফ ছেড়ে বাঁচল কেন্দ্র ।

বিগত দুই মাস ধরে রাজধানীর বাইরে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছেন কৃষকরা । দিল্লির হাড় হিম করা শীত উপেক্ষা করে, রাস্তায় তাঁবু খাটিয়ে রাতের পর রাত কাটিয়ে গিয়েছেন । বহু কৃষক আন্দোলন করতে করতেই প্রাণ হারিয়েছেন । কিন্তু আন্দোলন কোনওদিন বিশৃঙ্খল রূপ নেয়নি । তবে আজ কী এমন হল যে এতটা লাগামছাড়া হয়ে গেলেন কৃষকরা ?

এর আগে দফায় দফায় কৃষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে কেন্দ্র । কিন্তু কোনও আলোচনাই এখনও পর্যন্ত ফলপ্রসূ হয়নি । রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, সম্ভবত সেই জমে থাকা ক্ষোভ থেকেই আজ এতটা লাগামছাড়া হয়েছে ট্র্যাক্টর ব়্যালি । পরিস্থিতি এতটাই হাতের বাইরে চলে যায় যে কৃষকদের পাশে দাঁড়ালেন না আন্দোলনকারী নেতারা । কৃষক নেতা রাকেশ টিকাইত তো বলেই দিলেন, যাঁরা এই ধরনের কাজ করছেন তাঁরা কিছু বিশেষ রাজনৈতিক দলের কর্মী । আন্দোলনকে বিঘ্নিত করার চেষ্টা করছেন । বললেন, "আমরা জানি কারা বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করছেন । তাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে ।"

আরও পড়ুন : আন্না-নির্ভয়ার স্মৃতি ফিরিয়ে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন দেখল দিল্লি

লালকেল্লার দখল নেওয়ার পর কার্যত কিছুটা ব্যাকফুটেই পড়ে গেল কৃষক আন্দোলন । মুখ ফিরিয়েছেন সারা ভারত কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লাও । ট্র্যাক্টর ব়্যালির নামে রাজধানীতে দিনভর যে তাণ্ডব চলল, তাতে হান্নান মোল্লার মন্তব্য, "এই ধরনের কাজ সমাজবিরোধীদের । এরা কৃষকদের শত্রু । সরকারের দালালি করছেন ।"

এতদিন কৃষকদের পাশে ছিলেন কংগ্রেস ও বামপন্থী নেতারা । কিন্তু আজকের এই বিশৃঙ্খল আচারণের পাশে দাঁড়াননি কেউই । রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত থেকে শুরু করে পঞ্জাবের অমরিন্দর সিং, সকলেই আবেদন করেন ট্র্যাক্টর ব়্যালি শান্তিপূর্ণ করার জন্য । কিন্তু কিছুতেই কোনও কাজ হল না । তবে কি টানা দু'মাস আন্দোলনের পরেও কিছু না পাওয়ার হতাশা থেকেই এই চূড়ান্ত রূপ ? এই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে ।

পন্থাকে সমর্থন না করলেও কৃষকদের দাবি-দাওয়ার পাশে দাঁড়িয়েছেন শরদ পাওয়ার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা । এনসিপি প্রধান প্রশ্ন তুলেছেন, কৃষকরা যে এতদিন ধরে আন্দোলন করছেন, প্রধানমন্ত্রী কি একবারও তাঁদের খোঁজ নিয়েছেন ? বাংলার মুখ্যমন্ত্রীও আজকের পরিস্থিতির জন্য দায়ি করেছেন কেন্দ্রের উদাসীনতাকে । অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, কেন্দ্র যদি আগে থেকে কিছুটা সহানুভূতিশীলতা দেখাত, যদি কিছুটা সংবেদনশীলভাবে বিষয়টি দেখত, তবে আজ এই ছবি দেখতে হত না ।

আরও পড়ুন : দিল্লি-লালকেল্লা দখল কৃষকদের, দিনভর তপ্ত রাজধানী দেখল মৃত্যুও

2014 সালে নরেন্দ্র মোদি দিল্লির তখতে আসার পর থেকে রাজধানীতে এই ধরনের বিক্ষোভ এই প্রথম ৷ স্বাভাবিকভাবেই এই বিক্ষোভের ফলাফল কী হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে ৷ ইতিহাস বলছে, এর আগে জন লোকপাল বিল ঘিরে আন্না হাজারের আন্দোলন হোক বা নির্ভয়া-কাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ হোক... প্রতিক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, যখনই আন্দোলন এইরকম চূড়ান্ত আকার নিয়েছে, তখনই পিছু হটতে হয়েছে সরকারকে । একের পর এক নেতা-মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করেছিল ইউপিএ টু জমানায় । সেইসময় জন লোকপাল বিলের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন আন্না হাজারে । চাপের মুখে পিছু হটতে হয়েছিল মনমোহন-সোনিয়াদের । নির্ভয়া-কাণ্ডের পরও একইরকম প্রতিবাদ-আন্দোলন দেখা গিয়েছিল ৷ সেটিও অবশ্য মনমোহন জমানাতেই । তবে কি কৃষকদের এই 'তাণ্ডব' কিছুটা হলেও স্নায়ুর চাপে ফেলছে 7, রেস কোর্স রোডকে ? সঠিক সময়েই তার জবাব পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা ।

দিল্লি, 26 জানুয়ারি : দেশের 72 তম সাধারণতন্ত্র দিবস । সকাল থেকেই গোটা দেশের নজর ছিল রাজধানী দিকে । দিল্লির রাজপথে লালকেল্লার সামনে কুচকাওয়াজ চলছিল । সাজানো ট্যাবলো, ফ্লাই পাস্ট... সবই চলছিল নিয়মমতো । আর ঠিক সেই সময়েই রাজধানীর সীমান্তে ট্র্যাক্টর ব়্যালির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন আন্দোলনরত কৃষকরা । বহু টালবাহানার পর দিল্লি পুলিশ অনুমতি দিয়েছিল কৃষকদের রাজধানীর ভিতরে প্রবেশ করার । সীমান্ত থেকে ব্যারিকেড সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল ।

কথা ছিল, নির্ধারিত তিনটি রুট (সিঙ্ঘু, টিকরি ও গাজ়িপুর সীমান্ত) দিয়ে কৃষকরা দিল্লিতে প্রবেশ করবেন । ট্রাক্টর নিয়ে মিছিল করে আবার যেখান থেকে শুরু হয়েছিল, সেখানে ফিরে আসার কথা ছিল । কিন্তু আদতে হল পুরো উলটো । সত্তর দিনের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হঠাৎ ছন্দপতন । চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা । নির্দিষ্ট রুট ছেড়ে ব্যারিকেড ভেঙে রাজধানীর ভিতরে ঢুকতে থাকে সারি সারি ট্র্যাক্টর । পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সীমান্তে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল । ফলে রাজধানীর ভিতরে পুলিশি নিরাপত্তা ছিল অনেকটাই আলগা । একের পর এক ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যেতে থাকেন কৃষকরা । গন্তব্য ছিল লালকেল্লা । রীতিমতো তাণ্ডব চলে দিল্লির বুকে । লালকেল্লার মাথায় কৃষক আন্দোলনের পতাকা ঝুলিয়ে দেন কৃষকরা । চলল দফায় দফায় সংঘর্ষ, ফাটানো হল কাঁদানে গ্যাসের শেল । লাঠিচার্জও হল ।

সাধারণতন্ত্র দিবসের জন্য আজ রাজধানীর দিকে নজর ছিল দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের । নজর ছিল দু'মাস ধরে চলা কৃষক আন্দোলনের দিকেও । প্রথম সারির বেশ কিছু বিদেশি সংবাদমাধ্যমে ট্র্যাক্টর ব়্যালির সরাসরি সম্প্রচারও করা হয় । আজকের এই চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার ছবিতে দেশের মুখ পুড়ল বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ ।

আরও পড়ুন : "কেন্দ্রের সংবেদনশীলতার অভাবেই" ট্রাক্টর ব়্যালিতে অশান্তি, টুইট মমতার

সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও । তবে ব্রিটেনে কোরোনার নতুন স্ট্রেনের প্রাদুর্ভাবের কারণে ভারত-সফরের সূচি বাতিল করেছিলেন তিনি । সশরীরে হাজির থাকতে না পারলেও একটি ভিডিয়ো বার্তা শেয়ার করেছেন বরিস । সেখানে আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারায়, তিনি যে অনুতপ্ত, তা জানিয়েছেন । কেন্দ্রের কাছে স্বস্তির বিষয় এটাই যে, দিল্লির বিশৃঙ্খল তাণ্ডব নিয়ে কোনও মুখ খোলেননি ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী । বরিস যদি আজ দিল্লিতে থাকতেন, তাহলে হয়ত বিশ্বের দরবারে মোদি সরকারের মুখ লোকানোর আর জায়গা থাকত না । অন্তত এমনই মনে করছেন কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা । সেদিক থেকে দেখলে, বরিস আজ সাধারণতন্ত্র দিবসে থাকতে না পারায় কিছুটা হলেও যেন হাফ ছেড়ে বাঁচল কেন্দ্র ।

বিগত দুই মাস ধরে রাজধানীর বাইরে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছেন কৃষকরা । দিল্লির হাড় হিম করা শীত উপেক্ষা করে, রাস্তায় তাঁবু খাটিয়ে রাতের পর রাত কাটিয়ে গিয়েছেন । বহু কৃষক আন্দোলন করতে করতেই প্রাণ হারিয়েছেন । কিন্তু আন্দোলন কোনওদিন বিশৃঙ্খল রূপ নেয়নি । তবে আজ কী এমন হল যে এতটা লাগামছাড়া হয়ে গেলেন কৃষকরা ?

এর আগে দফায় দফায় কৃষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে কেন্দ্র । কিন্তু কোনও আলোচনাই এখনও পর্যন্ত ফলপ্রসূ হয়নি । রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, সম্ভবত সেই জমে থাকা ক্ষোভ থেকেই আজ এতটা লাগামছাড়া হয়েছে ট্র্যাক্টর ব়্যালি । পরিস্থিতি এতটাই হাতের বাইরে চলে যায় যে কৃষকদের পাশে দাঁড়ালেন না আন্দোলনকারী নেতারা । কৃষক নেতা রাকেশ টিকাইত তো বলেই দিলেন, যাঁরা এই ধরনের কাজ করছেন তাঁরা কিছু বিশেষ রাজনৈতিক দলের কর্মী । আন্দোলনকে বিঘ্নিত করার চেষ্টা করছেন । বললেন, "আমরা জানি কারা বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করছেন । তাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে ।"

আরও পড়ুন : আন্না-নির্ভয়ার স্মৃতি ফিরিয়ে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন দেখল দিল্লি

লালকেল্লার দখল নেওয়ার পর কার্যত কিছুটা ব্যাকফুটেই পড়ে গেল কৃষক আন্দোলন । মুখ ফিরিয়েছেন সারা ভারত কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লাও । ট্র্যাক্টর ব়্যালির নামে রাজধানীতে দিনভর যে তাণ্ডব চলল, তাতে হান্নান মোল্লার মন্তব্য, "এই ধরনের কাজ সমাজবিরোধীদের । এরা কৃষকদের শত্রু । সরকারের দালালি করছেন ।"

এতদিন কৃষকদের পাশে ছিলেন কংগ্রেস ও বামপন্থী নেতারা । কিন্তু আজকের এই বিশৃঙ্খল আচারণের পাশে দাঁড়াননি কেউই । রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত থেকে শুরু করে পঞ্জাবের অমরিন্দর সিং, সকলেই আবেদন করেন ট্র্যাক্টর ব়্যালি শান্তিপূর্ণ করার জন্য । কিন্তু কিছুতেই কোনও কাজ হল না । তবে কি টানা দু'মাস আন্দোলনের পরেও কিছু না পাওয়ার হতাশা থেকেই এই চূড়ান্ত রূপ ? এই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে ।

পন্থাকে সমর্থন না করলেও কৃষকদের দাবি-দাওয়ার পাশে দাঁড়িয়েছেন শরদ পাওয়ার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা । এনসিপি প্রধান প্রশ্ন তুলেছেন, কৃষকরা যে এতদিন ধরে আন্দোলন করছেন, প্রধানমন্ত্রী কি একবারও তাঁদের খোঁজ নিয়েছেন ? বাংলার মুখ্যমন্ত্রীও আজকের পরিস্থিতির জন্য দায়ি করেছেন কেন্দ্রের উদাসীনতাকে । অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, কেন্দ্র যদি আগে থেকে কিছুটা সহানুভূতিশীলতা দেখাত, যদি কিছুটা সংবেদনশীলভাবে বিষয়টি দেখত, তবে আজ এই ছবি দেখতে হত না ।

আরও পড়ুন : দিল্লি-লালকেল্লা দখল কৃষকদের, দিনভর তপ্ত রাজধানী দেখল মৃত্যুও

2014 সালে নরেন্দ্র মোদি দিল্লির তখতে আসার পর থেকে রাজধানীতে এই ধরনের বিক্ষোভ এই প্রথম ৷ স্বাভাবিকভাবেই এই বিক্ষোভের ফলাফল কী হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে ৷ ইতিহাস বলছে, এর আগে জন লোকপাল বিল ঘিরে আন্না হাজারের আন্দোলন হোক বা নির্ভয়া-কাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ হোক... প্রতিক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, যখনই আন্দোলন এইরকম চূড়ান্ত আকার নিয়েছে, তখনই পিছু হটতে হয়েছে সরকারকে । একের পর এক নেতা-মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করেছিল ইউপিএ টু জমানায় । সেইসময় জন লোকপাল বিলের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন আন্না হাজারে । চাপের মুখে পিছু হটতে হয়েছিল মনমোহন-সোনিয়াদের । নির্ভয়া-কাণ্ডের পরও একইরকম প্রতিবাদ-আন্দোলন দেখা গিয়েছিল ৷ সেটিও অবশ্য মনমোহন জমানাতেই । তবে কি কৃষকদের এই 'তাণ্ডব' কিছুটা হলেও স্নায়ুর চাপে ফেলছে 7, রেস কোর্স রোডকে ? সঠিক সময়েই তার জবাব পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা ।

Last Updated : Jan 26, 2021, 10:51 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.