মুম্বই,9 জুলাই : ঝাড়খন্ডে গণপিটুনিতে মৃত তাবরেজ়ের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়া হবে। এমনটাই পোস্ট করা হল সোশাল মিডিয়ায় । অভিযোগ, ভিডিয়োতে ছড়ানো হচ্ছে ধর্মীয় বিদ্বেষ । এই ভিত্তিতে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী ও মুম্বই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন শিবসেনার IT সেলের মুম্বই শাখার সভাপতি সৌরভ সোলাঙ্কি । 5 জনের নামে দায়ের হয়েছে অভিযোগ ।
তাঁর অভিযোগ, টিকটকে দুটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছিল টিম 7 নামে 5 জনের একটি গোষ্ঠী । এতে রয়েছে ফাইজ়ল শেখ, হাসান খান , আদনান শেখ, ফৈয়জ বালুচ , সাধন ফারুকি। ভিডিয়োতে ঝাড়খণ্ডে গণপিটুনিতে মৃত তাবরেজ়ের নিয়ে বেশ কিছু বক্তব্য তুলে ধরেছেন তাঁরা। ভিডিয়োতে তাদের বলতে শোনা যায়, " নিরীহ তাবরেজ়কে হত্যা করা হয়েছে, এখন যদি তাবরেজ়ের ছেলে বড় হয়ে এর বদলা নেয় তখন তো তাঁকে আতঙ্কবাদী বলা হবে! "
শুধু তাই নয়, টিম 7-র সদস্যরা, এই ভিডিয়ো দুটি টুইটারেও আপলোড করে দেয় । সেখানে তাদের ভিডিয়োর কড়া সমালোচনা করেন অনেকেই । সেই সঙ্গে পুলিশের কাছেও অনুরোধ যায় টিম 7-এর সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে । আবার অনেকে ভিডিয়োগুলিও শেয়ারও করেন ।
সৌরভের অভিযোগ পেয়ে টিকটক কতৃপক্ষ ভিডিয়োটি সরিয়ে দেয় । সাসপেন্ড করা হয় টিম 7-র মেম্বারদের টিকটক অ্যাকাউন্ট । এদিকে সৌরভ বলেন ," শুধু ভিডিয়ো সরালে হবে না , যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে । এঁদের অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড করা হোক। পোস্ট করার পর প্রায় লক্ষাধিক লোক ভিডিয়ো দেখেছে,হাজারের বেশি শেয়ার হয়েছে । টিম 7-র সমস্ত সদস্যদের ফলোয়ারের সংখ্যা প্রায় 4 কোটি । "
এদিকে টিকটক কতৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করে এমন কোনও বক্তব্য টিকটক সমর্থন করে না,যে ভিডিয়ো নিয়ে অভিযোগ ছিল ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে, তা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে । এই ধরনের আচরণ কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবেনা । তিন জনের অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড করা হয়েছে, তারা পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন ।
গত 23 জুন মোটরবাইক চোর সন্দেহে বছর চব্বিশের তাবরেজ়কে পিটিয়ে হত্যা করা হয় । তাঁর বাড়ি ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার সরাইকেল্লা-খরসোঁয়া এলাকার কারসোভাতে । জামশেদপুরে তিনি কাজ করতেন । ঘটনার দিন সন্ধ্যায় দুই বন্ধুর সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন তাবরেজ় । বাড়ি থেকে 5 কিলোমিটার দূরে তাঁদের উপর হামলা হয় । একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে মারধর । ''জয়শ্রীরাম'' ও ''জয় হনুমান'' বলতে বাধ্য করা হয় তাঁকে । পরে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় জনতা ।
প্রাথমিক চিকিৎসার পর পুলিশ তাঁকে জেলা আদালতে তোলে । বিচারক তাবরেজ়ের জেল হেপাজতের নির্দেশ দেন । এর পর অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় সদর হাসপাতালে । শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পাঠানো হয় বেসরকারি হাসপাতালে । সেখানে তাঁর মৃত্যু হয় ।