নারী সমানাধিকার দিবস

নারীদের উন্নয়নের জন্য তাদের ক্ষমতায়ন ছাড়া কোনও বিকল্প নেই ৷ এবার তাই লিঙ্গ সমতা প্রচারে মুম্বই ভারতের অন্যান্য শহরগুলির জন্য একটি উদাহরণ ৷

26 অগাস্ট অ্যামেরিকায় পালন করা হয় নারীর সমানাধিকার দিবস ৷ অ্যামেরিকার সংবিধানের 19 তম সংশোধিত ধারা অনুযায়ী নারী ও নারীর সমানাধিকার বজায় থাকবে দেশে ৷ এই ধারা অনুযায়ী, মহিলারা পেয়েছে ভোট দেওয়ার অধিকার ৷ 1920 সালের 26 অগাস্ট অ্যামেরিকার সংবিধানের 19তম সংশোধনী হয় ৷ ওই দিনটিকে সম্মান জানাতে অ্যামেরিকাতে পালন করা হয় মহিলাদের সমানাধিকার দিবস ৷

19তম সংশোধনী অনুযায়ী, লিঙ্গ বৈষম্য দূর করে যেন প্রতিটি নারী ভোট দেওয়ার অধিকার পান সেই বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয় ৷ এই সংশোধনীর মাধ্যমেই প্রথমবার মহিলারা ভোটাধিকার পান ৷ এই দিনটি জাতীয় ছুটি হিসেবে পালন করা না হলেও পালন করা হয় মহিলাদের সমান অধিকার দিবস হিসেবে ৷ ফলে , খোলা থাকে ব্যবসা, ব্যবসায়িক সংস্থা ও বিদ্যালয়গুলি ৷

ইতিহাস

মহিলাদের সমানাধিকার দিবস প্রথম পালন করা হয় 1973 সালে ৷ অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট দিনটিকে ঘোষণা করেন ৷ 1920 সালের 26 অগাস্ট অ্যামেরিকার বিদেশসচিব বেইনব্রিজ কোলবি ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন ৷ সেই ঘোষণাপত্র অনুযায়ী অ্যামেরিকার মহিলারা ভোটাধিকার পায় ৷

মহিলাদের অধিকার নিয়ে 72 বছরের কঠোর পরিশ্রম, প্রচারের পর 1920 সালে সফলতা পায় মহিলারা ৷ সেই সময় রুশো ও কান্তের মতো দার্শনিকরাও বিশ্বাস করতেন মহিলারা শুধুমাত্র সুন্দর , কোনও গুরুতর কাজের জন্য মহিলারা উপযুক্ত নয় ৷

শেষ কয়েক শতকে, বহু মহিলা এই ভাবনাকে ভুল প্রমাণিত করেছে ৷ সমগ্র বিশ্ব দেখেছে , নারীরা সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছাতে সক্ষম । যেমন - রোজ়া পার্কস , এলেনর রুজ়ভেল্ট সিভিল রাইটস বা নাগরিকত্বের অধিকার ও সমতার জন্য লড়াই করেছিলেন ৷ রোজ়ালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিন, মেরি কুরি ও জেন গুডালের মতো বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন সুযোগ পেলে নারী ও পুরুষ উভয়ই সাফল্য অর্জনের ক্ষমতা রাখেন ৷

আজ নারীর সমতা কেবলমাত্র ভোটের অধিকারকে ভাগ করে নেওয়ার থেকেও বেশি । বর্তমানে ইক্যুয়ালিটি নাউ এবং ওম্যানকাইন্ড ওয়ার্ল্ডওয়াইডের মতো সংস্থা বিশ্বব্যাপী নারীদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সমান সুযোগ প্রদানে অব্যাহত ৷

ভারতে নারীদের সমান অধিকার

প্রতিটি শিশুরই জীবনে সমস্তকিছু পাওয়া অধিকার ৷ তবে, তা আদৌও বাস্তবায়ন হয় না ৷ বাধা হয়ে দাঁড়ায় লিঙ্গ বৈষম্য ৷ ভারতে ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে নিত্যদিন এই লিঙ্গ বৈষম্য সর্বত্র চোখে পড়ে ৷ বই, সিনেমা ছাড়াও নিত্যদিনের কাজের মধ্যে এই বৈষম্য দেখা যায় ৷ ভারতে ছেলে ও মেয়েরা তাদের কৈশোর জীবন থেকেই লিঙ্গ বৈষম্য দেখে আসছে ৷ ছেলেরা যেখানে অপার স্বাধীনতা পায় ৷ সেখানে মেয়েরা থাকে গণ্ডির মধ্যে ৷ পড়াশোনা, কাজ, বিয়ে ও সামাজিক বিষয়গুলির কোনওটিতেই মেয়েরা পূর্ণ স্বাধীনতা পায় না ৷

গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স ( GGGI ) 2020 -

নারীদের সমান অধিকার নিয়ে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের 2018 সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, 149 টি দেশের মধ্যে ভারত 108 তম দেশ ৷

ভারতে মহিলাদের শিক্ষার হার

নারীদের জন্য ভারত সরকারের স্কিম বা প্রকল্পগুলি হল -

দেশে নারীদের উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে সরকার কয়েকটি প্রকল্প নিয়েছে ৷ সেগুলি হল -

• বেটি বাঁচাও , বেটি পড়াও
• মহিলা শক্তি কেন্দ্র
• ওয়ার্কিং উইমেন হোস্টেল
• মহিলা পুলিশ ভলান্টিয়ার
• রাষ্ট্রীয় মহিলা কোশ
• জাতীয় ক্রিশে স্কিম
• প্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনা
• প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা
• দীন দয়াল উপাধ্যায় ন্যাশানাল আরবান লাইভলিহুড মিশন
• প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা
• প্রধানমন্ত্রী সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা
• স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া
• মহিলা-ই -হাত
• প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা

লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে সরকারি পদক্ষেপ

লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ

শিশুকন্যাদেরও সম্পত্তির উত্তরাধিকারের সমান জন্মগত অধিকার রয়েছে ৷ 2020 সালের 11 অগাস্ট, সুপ্রিম কোর্ট হিন্দু মহিলাদের পৈতৃক সম্পত্তিতে অধিকার সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ রায়দান করে । বলা হয়, একজন হিন্দু মহিলার পৈতৃক সম্পত্তির যৌথ উত্তরাধিকারী হওয়ার অধিকার জন্মগতভাবেই রয়েছে ৷ তাঁর বাবা বেঁচে আছেন কি না তার উপর এই অধিকার নির্ভর করে না ।

নারীদের উন্নয়নের জন্য তাদের ক্ষমতায়ন ছাড়া কোনও বিকল্প নেই ৷ এবার তাই লিঙ্গ সমতা প্রচারে মুম্বই ভারতের অন্যান্য শহরগুলির জন্য একটি উদাহরণ ৷ বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপাল কর্পোরেশন মহিলাদের সমান অধিকার ও লিঙ্গ সমতা প্রচারের জন্য মহিলাদের চিহ্ন প্রচার করছে ৷ শহরের দাদর - মহিম আর্টেরিয়াল রাস্তার সিগনাল ও ক্রসিংয়ে মহিলাদের চিহ্ন লাগানো হয়েছে ৷